বাড়ছে রুবলের মান, বাজিমাত পুতিনের

স্টাফ রিপোর্টার

শুক্রবার (২২ এপ্রিল) প্রতি ডলারের বিপরীতে রুশ মুদ্রা রুবলের মান ছিল ৭৪। ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পর যা নেমে গিয়েছিল ১৩৯ রুবলে।

ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার সাহস না পেলেও অর্থনৈতিকভাবে মস্কোকে পঙ্গু করতে কোনো পদক্ষেপ নেওয়াই বাকি রাখেনি যুক্তরাষ্ট্র ও তার ইউরোপীয় মিত্ররা। ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশ সেনা অভিযানের পরই পশ্চিমারা একের পর এক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দেয়। রাশিয়ার ব্যাংকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির সম্পদ জব্দও করা হয়। আর্থিক লেনদেনের আন্তর্জাতিক প্লাটফর্ম সুইফট থেকে মস্কোর প্রায় সব ব্যাংককে বের করে দেওয়া হয়।

পশ্চিমাদের এ নজিরবিহীন অর্থনৈতিক আক্রমণে টলে ওঠে মস্কোর অর্থনীতি। ডলারের বিপরীতে ধস নামে রাশিয়ার মুদ্রা রুবলে। ৪০ শতাংশ মান হারিয়ে মার্চের ৭ তারিখে ডলারের বিপরীতে রুবলের মান দাঁড়ায় ১৩৯। এ সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ঠাট্টা করে রুবলকে রাবল বলে অভিহিত করেন।

কিন্তু এ আত্মতুষ্টি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের পাল্টা অর্থনৈতিক চালে দ্রুত ম্লান হতে থাকে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে শক্তিশালী করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুদের হার ২০ শতাংশ করার নির্দেশ দেন তিনি। সেই সঙ্গে রাশিয়ার বাইরে বৈদেশিক মুদ্রা প্রেরণকে নিষিদ্ধ করা হয়। রাশিয়ায় থাকা বিদেশি কোম্পানিগুলোর সম্পদ বিক্রির ওপরও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।

পাশাপাশি তেল ও গ্যাস কিনতে পশ্চিমা দেশগুলোর ওপর রুবলে মূল্য পরিশোধের শর্ত আরোপ করে ক্রেমলিন। পশ্চিমা দেশগুলোতে রাশিয়া প্রতি মাসে ৩০ বিলিয়ন ইউরোর জ্বালানি বিক্রি করে। মস্কোর শর্ত অনুযায়ী, ইউরোপকে এখন থেকে এ বিপুল পরিমাণ অর্থ রুবলে পরিশোধ করতে হচ্ছে। এ চালেই বাজিমাত মস্কোর। পুতিন প্রমাণ করলেন, শুধু যুদ্ধের ময়দানেই নয়, অর্থনীতির লড়াইয়েও পশ্চিমাদের সমান টেক্কা দিতে পারেন তিনি।

পুতিনের এসব পদক্ষেপে নিষেধাজ্ঞা অকার্যকর করে রুবল ফের শক্তিশালী হতে শুরু করে। রুশ মুদ্রা দ্রুত ফিরে আসে যুদ্ধ পূর্বের অবস্থানে। রুবল অবস্থান প্রতিদিনই শক্তিশালী হচ্ছে।

শুক্রবার (২২ এপ্রিল) আন্তর্জাতিক মুদ্রা বাজারে প্রতি ডলারের বিপরীতে ৭৩ দশমিক ৫৮ রুবল পাওয়া যায়। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর দিন যা ৮৪ রুবল ছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *