বাফেদা-এবিবি ডলারের এক রেট নির্ধারণে কাজ করবে

স্টাফ রিপোর্টার

বাজারে অস্থিরতা কাটাতে ডলারের এক রেট বাস্তবায়নে একসঙ্গে কাজ করবে বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) এবং অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি)। এর মাধ্যমে সব এক্সচেঞ্জ হাউজে ডলারের রেট হবে অভিন্ন।

বৃহস্পতিবার (২৬ মে,২০২২) বাফেদা, এবিবি এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ত্রিপক্ষীয় সভা শেষে এ কথা জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরের সভাপতিত্বে আয়োজিত সভায় বাফেদা ও এবিবির চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন ব্যাংকের এমডি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সভা শেষে সিরাজুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রয়োজনীয়তার নিরিখে লিকুইডিটি (ডলার বিক্রি) সাপোর্ট দেওয়া অব্যাহত রাখবে। রপ্তানিকারক ব্যাংকের মাধ্যমে ডিসকাউন্টসহ রপ্তানিমূল্য ওই ব্যাংকেই বিক্রি করতে হবে।

বাফেদা এবং এবিবি একত্রে এক্সচেঞ্জ হাউজের জন্য ইউনিফর্ম এক্সচেঞ্জ রেট (এক রেট) নির্ধারণে কাজ করবে, যা দেশের সব অনুমোদিত ডিলার (এডি) ব্যাংক মেনে চলবে। এ নিয়ে বাফেদা কর্তৃক ইন্টার ব্যাংক রেট (আন্তঃব্যাংক রেট হার) প্রস্তাব পাঠাবে। তাদের পাঠানো প্রস্তাব বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যালোচনা করবে। এ সিদ্ধান্ত আগামী রোববারের (২৯ মে,২০২২) মধ্যে জানা যাবে বলেই আশা ব্যক্ত করেন তিনি।

এর আগে ডলারের বাজারে অস্থিরতা নিরসনে গত ১৯ মে, ২০২২ বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে চিঠি দেয় বাফেদা। চিঠিতে বাংলাদেশ ব্যাংকে সুনির্দিষ্ট কিছু প্রস্তাব দেয় সংগঠনটি।

প্রস্তাবগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো: বৈধভাবে পাঠানো রেমিট্যান্সের প্রণোদনা আড়াই শতাংশ থেকে বাড়িয়ে পাঁচ শতাংশ করা। বাজারের চাহিদা বিবেচনা করে ডলার সরবরাহ করা। বাজারের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে ডলার ক্রয়-বিক্রয়ে আন্তঃব্যাংক বিনিময় হার পুনর্নির্ধারণ করা। সব এডি ব্যাংক বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউজগুলো থেকে ‘একক বিনিময় হারে’ লেনদেন করবে এবং সেই হার আন্তঃব্যাংকের মধ্যে লেনদেনের থেকে কমপক্ষে শূন্য দশমিক এক শতাংশের কম হবে। এ একক বিনিময় হার কঠোরভাবে তদারকি করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাফেদার এসব প্রস্তাবের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাফেদার মধ্যে বৃহস্পতিবার বিকেলে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

চিঠিতে আরও বলা হয়, এডি ব্যাংকগুলো রপ্তানির ক্ষেত্রে নিয়ম অনুযায়ী কর্তন মূল্যের সুযোগ নিশ্চিত করবে এবং রপ্তানির কাগজপত্র যাচাই করবে। এছাড়া একমাত্র বাংলাদেশ ব্যাংক আমদানি ঋণপত্রের (এলসি) বিল ও সরকারি বাধ্যতামূলক পাওনা পরিশোধে বৈদেশিক মুদ্রার বাড়তি চাহিদার তারল্য সরবরাহ করবে। রাষ্ট্রায়ত্ত এডি ব্যাংকগুলো নিজস্ব উৎস থেকে কেবল সরকারের বাণিজ্য ও বাধ্যতামূলক পাওনা বড়জোড় তিন মাসের জন্য পরিশোধ করবে। তবে এসব ব্যাংক সরকারের আন্তঃব্যাংক বাজার পদ্ধতিতে বৈদেশিক মুদ্রার উৎস হিসেবে ব্যবহার হবে না।

বাফেদার এক সদস্য জানান, দেশে এখন আমদানির জন্য যে পরিমাণ অর্থ বা ডলার খরচ হচ্ছে, তা রপ্তানি ও প্রবাসী আয় দিয়ে মিটছে না। ফলে সংকট তৈরি হয়েছে। এজন্য বাজারে ডলারের সংকট দেখা দিচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক যে পরিমাণ ডলার বিক্রি করছে, সেটি চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত নয়। ফলে প্রতি মাসে প্রায় ১০০ কোটি ডলার ঘাটতি তৈরি হয়েছে।

বর্তমানে খোলাবাজারে ডলারের দামের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা কিছুটা কমে এসেছে। রাজধানীতে বুধবার (২৫ মে, ২০২২) প্রতি ডলার ৯৮ থেকে ৯৯ টাকায় বেচাকেনা হয়েছে। আর বাংলাদেশ ব্যাংক ৮৮ টাকা ৯০ পয়সা দরে ডলার বিক্রি করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *