বাণিজ্য মেলা শুরু ১ জানুয়ারি, থাকছে গণ-অভ্যুত্থানের প্যাভিলিয়নও

স্টাফ রিপোর্টার

ঢাকার কুড়িল থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে পূর্বাচল নিউটাউনে বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে শুরু হতে যাচ্ছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার (ডিআইটিএফ) ২৯তম আসর। মাসব্যাপী এ মেলা শুরু হবে আগামী ১ জানুয়ারি। মেলা প্রাঙ্গণে হাতুড়ি পেটানোর ঠকঠক শব্দ চলছে। কোথাও চলছে করাত দিয়ে কাটাকাটি। সব মিলিয়ে মেলা প্রাঙ্গণে সর্বশেষ মুহূর্তের কাজ চলছে বলে জানান মেলা কমিটি। এবার মেলায় থাকছে অনেক নতুনত্ব। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের চিত্র তুলে ধরতে থাকবে বিশেষ প্যাভিলিয়ন। ক্রেতা-দর্শনার্থীদের টিকিট কাটা ও যাতায়াতে এবার বিশেষ ব্যবস্থাও নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)।

সরজমিনে দেখা যায়, নির্ধারিত সময়ে মেলা উদ্বোধনের জন্য শ্রমিকরা কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। মেলার টিকিট কাউন্টার, দর্শনার্থীদের বিশ্রামের জন্য বেঞ্চ, বাউন্ডারির কাজ চলছে। কান পাতলেই চারদিকে হাতুড়ি, ড্রিল মেশিন, ঝালাই মেশিনের শব্দ। ব্যস্ত সময় পার করছেন স্টল ও প্যাভিলিয়ন নির্মাণশ্রমিকরা। কেউ স্টিলের কাঠামো ঝালাই করছেন, কেউ কাঠ কেটে কাঠামো তৈরি করছেন, কেউ আবার রঙ করছেন।

ইপিবি ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ১ জানুয়ারি বাণিজ্য মেলার উদ্বোধন করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এবার সাতটি দেশ মেলায় অংশগ্রহণ করবে। এতে মোট ১১টি প্যাভিলিয়নে দেশ-বিদেশ মিলিয়ে ৩৬২টি স্টল থাকবে। এবারের মেলায় অনেক নতুনত্ব থাকছে। এর মধ্যে মেলায় প্রবেশের টিকিট কেনা যাবে অনলাইনে। টিকিট কিনতে নগদ, বিকাশসহ অনলাইন গেটওয়েগুলো ব্যবহার করা যাবে। অনলাইনে টিকিট কাটার পর একটি কিউআর কোড দেয়া হবে। মেলার গেটে কিউআর কোড স্ক্যান করে প্রবেশ করা যাবে। এছাড়া প্রতিবার বাণিজ্য মেলায় বিআরটিসি বাস সার্ভিস থাকলেও এবার এর সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে উবার সেবা। কনসেশন রেটে উবারে যাতায়াত করতে পারবেন যাত্রীরা। মেলার সবগুলো পয়েন্ট থেকে উবার সার্ভিস দেবে। পাশাপাশি প্রতিবারের মতো এবারো বিআরটিসির ২০০টির বেশি বাস থাকবে।

জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলন সামনে রেখে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার ২৯তম আসরে থাকছে তিন বিশেষ আকর্ষণ। মেলার মূল ভবনের প্রধান ফটকে থাকবে তারুণ্য চত্বর, হল বি’র পেছনে থাকবে ৩৬শে জুলাই চত্বর। এছাড়া মেলায় প্রবেশমুখের বাম দিকে জুলাই চত্বর করা হচ্ছে। এছাড়া জুলাই গণ-অভ্যুত্থান নিয়ে মেলায় দুটি প্যাভিলিয়ন থাকবে। সেখানে তুলে ধরা হবে গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার ভূমিকা ও আকাঙ্ক্ষা। এতে সাধারণ মানুষ গণ-অভ্যুত্থানের বিষয়ে জানতে পারবেন। একই সঙ্গে বাণিজ্য মেলায় থাকবে সোর্সিং কর্নার। সেখানে গার্মেন্টস ও লেদারসহ বাংলাদেশের প্রধান প্রধান এক্সপোর্ট আইটেমগুলো প্রদর্শন করা হবে।

ইপিবির তথ্য ও প্রকাশনা শাখার পরিচালক (যুগ্ম সচিব) মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘এবার অনলাইনে টিকিট কেনা যাবে। একটি টেক কোম্পানিকে টিকিট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের কাজ দেয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘এবার মেলায় থাকবে জুলাই চত্বর। সেখানে তুলে ধরা হবে গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার ভূমিকা ও আকাঙ্ক্ষা। সাধারণ মানুষ গণ-অভ্যুত্থানের বিষয়ে জানতে পারবেন।’

প্রসঙ্গত, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ইপিবির যৌথ উদ্যোগে ১৯৯৫ থেকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা শুরু হয়। ২০২০ সাল পর্যন্ত টানা ২৫ বার মেলা হয়েছে আগারগাঁও শেরেবাংলা নগরে। কভিড মহামারীর কারণে ২০২১ সালে মেলা বসেনি। এরপর ২০২২ সাল থেকে স্থান বদল করে পূর্বাচলে বসছে এ আন্তর্জাতিক মেলা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *