বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ছয় পণ্য আমদানিতে পর্যাপ্ত ডলার চায়
নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন পণ্যের মজুত ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে কাজ করছে সরকার। ওই সময় বাড়তি চাহিদাকে সামনে রেখে ৬টি নিত্যপণ্য আমদানিতে পর্যাপ্ত ডলার সরবরাহ রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি দেবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বুধবার (৩ জানুয়ারি ২০২৪) রমজান উপলক্ষে পণ্যের আমদানি পরিস্থিতি পর্যালোচনায় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ কথা জানান বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব তপন কান্তি ঘোষ।
মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে তিনি বলেন, এখনও ডলার সংকটের কারণে এলসি খুলতে সমস্যা হচ্ছে। এর থেকে উত্তরণে অন্তত ৬টি পণ্য আমদানিতে যেন পর্যাপ্ত ডলার সরবরাহ করা হয়, সে জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি দেওয়া হবে। পণ্যগুলো হলো– ভোজ্যতেল, পেঁয়াজ, চিনি, মশুর ডাল, ছোলা ও খেজুর। গত বছর ৮টি পণ্যের ক্ষেত্রে এই অনুরোধ করা হয়েছিল। তিনি বলেন, সার্বিকভাবে আমদানি মোটামুটি স্বাভাবিক রয়েছে। তবে সাত-আট মাস ধরেই চিনি আমদানি একটু কম ছিল। যেমন ভারত চিনি রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে, ব্রাজিল থেকে আনতেও কিছু বাধা ছিল। এখন নতুন করে লোহিত সাগরের চ্যানেলে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। এ সমস্যা কাটাতে চেষ্টা চলছে।
ভোগ্যপণ্য আমদানিতে ডলারের কোনো কোটা চাওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে সচিব বলেন, সেভাবে কোটা হয়তো চাওয়া হবে না। তবে এলসি খুলতে ডলার সরবরাহ বাড়ানোর বিষয়ে বলা হবে। একই সঙ্গে এসব ভোগ্যপণ্য আমদানিতে বেসরকারি ব্যাংকগুলো যেন কম বা শূন্য মার্জিনে এলসি খোলে সে বিষয়ে অনুরোধ জানানো হবে।
রমজান উপলক্ষে কতটা বাড়তি আমদানি করতে হবে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সাধারণ সময়ে কিছু পণ্যের যে চাহিদা থাকে, রমজানে সেটা দ্বিগুণ হয়ে যায়। বেশির ভাগ পণ্যই দেড় থেকে দ্বিগুণ বেশি চাহিদা থাকে। আর সারা বছরে খেজুরের যে চাহিদা তার অর্ধেকটাই লাগে রমজানে। শুল্ক বাড়ার কারণে খেজুর আমদানিতে সমস্যা হচ্ছে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। শুল্ক কমাতে কিছুদিন আগে এনবিআরকে চিঠি দেওয়া হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। এজন্য বন্দরে আনা খেজুরও ব্যবসায়ীরা খালাস করছেন না। বিষয়টি নিয়ে এনবিআরের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধান করা হবে।
তিনি বলেন, আমদানিমূল্যের ওপর নির্ভর করে পণ্যের দাম। জাহাজে আনতে কত খরচ হয়, বীমায় কত দিতে হয় ইত্যাদি হিসাবনিকাশ করে দাম নির্ধারণ হয়। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেশি থাকলে এখানেও দাম বেশি হবে, কম হলে কম হবে। পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ভোজ্যতেল ও চিনির দাম আন্তর্জাতিক বাজারে স্থিতিশীল আছে। ডাল, ছোলার দামও স্থিতিশীল। পেঁয়াজের দাম কমে যাবে। তাই সার্বিকভাবে বলা হয় রমজানে পণ্যমূল্য স্থিতিশীল থাকবে।
তপন কান্তি ঘোষ বলেন, রমজানের প্রথম সাত দিন ভোক্তারা একটু বেশি কেনাকাটা করেন। এ কারণে তখন দাম একটু বেশি হয়ে যায়। ভোক্তাদেরও এ বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। রোজার প্রথম কয়েকটা দিন যাওয়ার পর দাম কমে আসে, স্থিতিশীল হয়ে যায়। আগে কিনলে ক্রেতারা লাভবান হতে পারবেন না।