বাজেটে পোশাক খাতের মতো প্লাস্টিকসহ রপ্তানি খাতে করহার ১২ শতাংশ, সবুজ প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ করার আহ্বান : বিপিজিএিমইএ’র নতেৃবৃন্দ
বাজেটে পোশাক খাতের মতো প্লাস্টিকসহ রপ্তানি খাতে করহার ১২ শতাংশ, সবুজ প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ করার আহ্বান : বিপিজিএিমইএ’র নতেৃবৃন্দ
বাংলাদেশ প্লাস্টিক দ্রব্য প্রস্তুতকারক ও রপ্তানীকারক এসোসিয়েশন (বিপিজিএমইএ) এর উদ্যোগে সোমবার (২৭ জুন, ২০২২) বিপিজিএমইএ’র পল্টনস্থ অফিসে ““Workshop on Budget ঃ ২০২২-২০২৩” আয়োজন করা হয়।
এফবিসিসিআই উপদেষ্টা (চার্টার্ড একাউন্টেন্টস) স্নেহাশীষ বড়ুয়া, এফসিএ, এসিএ (আইসিএইডাব্লিউ) উক্ত ওয়ার্কশপে সম্মানিত আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন। বিপিজিএমইএ সভাপতি সামিম আহমেদ ওয়ার্কশপে সভাপতিত্ব করেন এবং প্লাস্টিক সেক্টরের প্রণীত বাজেটের গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরেন। বিপিজিএমইএ’র শীর্ষ নেতৃবৃন্দ, টয়েজ সহ অন্যান্য সাব সেক্টরের নেতৃবৃন্দ ওয়ার্কশপে অংশগ্রহন করেন।
বিপিজিএমইএ থেকে সাবেক সভাপতি এ এস এম কামাল উদ্দিন, ফেরদৌস ওয়াহেদ, সিনিয়র সহ সভাপতি গিয়াসউদ্দিন আহমেদ, সহ সভাপতি কে এম ইকবাল হোসেন, সহ সভাপতি কাজী আনোয়ারুল হক, পরিচালক মোঃ ইয়াকুব, নুর আলম বাচ্চু, এটিএম সাঈদুর রহমান বুলবুল, মোঃ শাহজাহান, আমান উল্লাহ, মোঃ আব্দুর রশীদ ভুঁইয়া, বিপিজিএমইএ’র বিভিন্ন সদস্য প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিবৃন্দ, বাংলাদেশ পিভিসি পাইপ এসোসিয়েশনের সভাপতি আবুল খায়ের, বাংলাদেশ পেট ফ্লেক্স এসোসিয়েশনের সভাপতি নাজমুল হাসান ওয়ার্কশপে অংশগ্রহন করেন।
বিপিজিএমইএ সভাপতি সামিম আহমেদ সকলকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এসোসিয়েশন থেকে বাজেটকে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছি যাতে সদস্যগণ ট্যাক্স ভ্যাট বিষয়ে বাস্তব জ্ঞান অর্জন করে। আগামী ৩ দিনের মধ্যে জাতীয় সংসদে বাজেট পাশ হবে। প্রস্তাবিত বাজেটে পোশাক খাতের মতো প্লাস্টিক খাত সহ সব রপ্তানি খাতের প্রতিষ্ঠানের করহার ১২ শতাংশ এবং সবুজ প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ করা, পিপিই ব্যবসায়ী পর্যায়ে ৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার, প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে রি-সাইক্লিং এর মাধ্যমে প্লাস্টিক দানা উৎপাদনের ক্ষেত্রে ভ্যাটমুক্ত রাখা এবং প্লাস্টিকের তৈরি টিফিন বক্স ও পানির বোতল ভ্যাটমুক্ত রাখায় আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। অতীতের কথা উল্লেখ করে বলেন, ইতোপূর্বে প্লাস্টিক সেক্টরের উপর জারিকৃত আদেশ Import under bond not for sale শীর্ষক সমস্যার সমাধান আমরা করেছিলাম। তিনি বলেন, সামনে এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন। সবকিছু ওপেন হয়ে যাবে। সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হলে এসএমই কে উত্তরণ ঘটাতে হবে। প্রায় ৪ কোটি মধ্যবিত্তের বিশাল মার্কেট টার্গেট করে বিদেশী ব্যবসায়ীদেরকে অগ্রসর হতে হবে।
এফবিসিসিআই উপদেষ্টা (চার্টার্ড একাউন্টেন্টস) জনাব স্নেহাশীষ বড়ুয়া, এফসিএ, এসিএ (আইসিএইডাব্লিউ) তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন যে, প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা যা সর্বোচ্চ। অন্যদিকে বাজেটে আয় ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা নির্ধারন করা হয়েছে। অর্থ্যাৎ বাজেটের আকার বাড়ছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ সার্বিক পরিস্থিতি খারাপের দিকে নিয়ে গেছে। তিনি বলেন, আয়ের চেয়ে ব্যয় বাড়ছে ধীরে ধীরে। এই গ্যাপ কমাতে পারলে আমাদের অর্থনৈতিক সক্ষমতা বাড়বে।
তিনি বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যবসা বাণিজ্য ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে বেশ কিছু ভাল ব্যবস্থা গৃহীত হয়েছে। কর্পোরেট ট্যাক্স সকল রপ্তানি খাতের জন্য ১২% এবং গ্রীন ইন্ডাষ্ট্রির জন্য ১০% নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ২০২৮ইং সাল পর্যন্ত লেভেল প্লেইং ফিল্ড করে দেওয়া হয়েছে। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির করহার বর্তমানে ২২ শতাংশ, এটি ২০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। আর তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানির করহার ৩০ শতাংশ। যা ২৭ শতাংশ করার করার প্রস্তাব করা হয়েছে। একক ব্যক্তির কোম্পানির কর হার ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২২ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। সরকারের এসব উদ্যোগের কারণে সকল খাতের রপ্তানি বৃদ্ধি পাবে।
প্রস্তাবিত বাজেটে এসএমই প্রতিষ্ঠানের পুরুষ উদ্যোক্তাদের ক্ষেত্রে ৫০ লাখ টাকা এবং নারী উদ্যোক্তাদের ক্ষেত্রে ৭০ লাখ টাকা পর্যন্ত আয়করমুক্ত করা হয়েছে। এসএমই প্রতিষ্ঠানের কথা উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ছোট ইন্ডাষ্ট্রি/প্রতিষ্ঠানের শুরুতেই বাধাগ্রস্থ করলে তারা আর এগুতে পারবে না। কোভিডের কারণে অনেক ছোট প্রতিষ্ঠান ইন্ডাষ্ট্রি গুটিয়ে ফেলতে চায়। এসব প্রতিষ্ঠান লাভজনক প্রতিষ্ঠানের সাথে একীভুত হতে পারবে। এর মাধ্যমে ব্যবসা সচল রাখতে পারবে। স্টার্ট আপ ইন্ডাষ্ট্রি এর ক্ষেত্রে এনবিআর এর অনুমোদন নিতে হবে এবং টার্ণওভার ১০০ কোটি টাকা হতে হবে।
এছাড়া তিনি বিভিন্ন ক্ষেত্রে ট্যাক্স নেট বৃদ্ধি, সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ এবং রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা ও প্রক্রিয়া সম্পর্কে ওয়ার্কশপে বক্তব্য তুলে ধরেন।