বাচ্চাকে জোর খাবার খাওয়ানোর অপরিকারিতা
আরেকটু খাও বাবা, আরেকটু, এই তো শেষ।
না না খাও,
সোনামণি, জাদু আমার
খাও বলছি,
এক্ষুনি খা দুষ্টু,
গিলে ফেল।’
তুমি থেকে তুই-এ চলে গেলেন আপনি। মেজাজও ধরে রাখতে পারলেন না। এমনটি হয় প্রতিদিন। খাবার নিয়ে চলে মা-সন্তানের যুদ্ধ। তবে এই অসম যুদ্ধের কারণে সন্তানের মনে কিন্তু নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। খাবার নিয়ে জবরদস্তি করলে কী হয় দেখুন :
আপনি যুদ্ধের বেশে তৈরি হলেন খাওয়ানোর জন্য।
বাচ্চাও পণ করল, যতই আপনি চেষ্টা করুন সে খাবে না।
কিন্তু আপনি তাকে জোর করে খাইয়ে দিলেন।
বাচ্চা চিন্তা করল, পরেরবার মুখ বন্ধ করে রাখবে।
কিন্তু আপনি শক্তি দিয়ে মুখ খুলে খাইয়ে দিলেন।
বাচ্চা চিন্তা করল, এর পরেরবার থুতু দিয়ে বের করে দেবে।
যখনই ও থুতু দিয়ে বের করল, আপনি ওকে চড় মেরে খাওয়ালেন।
বাচ্চা চিন্তা করল, এই খাবারের জন্য আমাকে চড় খেতে হলো, একে আমি ঘৃণা করি।
এর পর থেকে বাচ্চা খাওয়া-দাওয়া আরো কমিয়ে দিল।
এসব কারণে বাচ্চাকে জোর করা উচিত নয়। আসলে নিরন্তর অপরিসীম কষ্ট সহ্য করে একজন মা তাঁর সন্তানকে বড় করতে থাকেন। তবে এত ত্যাগ স্বীকার করার পরও মায়েরা যখন দেখেন তাঁদের বাচ্চারা ঠিকমতো খাচ্ছে না, তখন নিজেদের খুব অসহায় লাগতে থাকে। তখন মায়েরা মেজাজ ধরে রাখতে পারেন না।
তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা গেছে, খাওয়ানোর ব্যাপারে অনিয়মই হচ্ছে শিশুর খেতে না চাওয়ার প্রধান কারণ। আপনাকে যা করতে হবে তা হলো, একাগ্রতার সঙ্গে কিছু কৌশল অবলম্বন। এই কৌশলগুলো রপ্ত করতে পারলে বাচ্চাকে খাওয়ানোর ব্যাপারে সফল হতে পারবেন।
আপনি যদি একই রকমের খিচুড়ি প্রতিদিন দেন, তবে বাচ্চার একঘেয়ে লাগবে। খিচুড়িতে প্রতিদিন একই রকমের উপাদান দেওয়া যেমন ঠিক নয়, তেমনি আবার প্রতিদিন খিচুড়িই দিতে হবে এমনটি নয়। বাচ্চার খাবারে বৈচিত্র্য আনার সঙ্গে সঙ্গে খাবারের পরিবেশনকে আকর্ষণীয় করলে আর অবশ্যই খাবারটা সুস্বাদু হলে তবেই বাচ্চা খাবে।
লেখক : রেজিস্ট্রার, শিশু বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।