ফোল্ডেবল ডিসপ্লের ৫০ শতাংশ তৈরি করবে চীনা নির্মাতারা

স্টাফ রিপোর্টার

সম্প্রতি একের পর এক ফোল্ডেবল বা ভাঁজ করা যায় এমন স্মার্টফোন বাজারে আনছে চীনের বিভিন্ন প্রযুক্তি কোম্পানি। তাদের এ উত্থানের ফলে চলতি বছর দেশটির ফোল্ডেবল ডিসপ্লে প্রস্তুতকারকদের বাজার হিস্যা হবে ৫০ শতাংশের বেশি। অর্থাৎ ফোল্ডেবল ফোনের বেশির ভাগ স্ক্রিন চীনা ডিসপ্লে নির্মাতারা তৈরি করবে। যুক্তরাজ্যের বাজার গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ওমডিয়ার প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। খবর নিক্কেই এশিয়া।

বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এ বাজারে চীনা ডিসপ্লে নির্মাতাদের দ্রুত প্রবৃদ্ধি শিল্পটির অন্যান্য বড় ব্র্যান্ডের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ। যেমন দক্ষিণ কোরিয়ার স্যামসাং ইলেকট্রনিকস তাদের ডিসপ্লে বিভাগসহ চীনা বাজারে নিজেদের উপস্থিতি প্রসারিত করতে অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছে। তারা বলেন, চীনা কোম্পানিগুলোর এ প্রতিযোগিতামূলক চাপ ফোল্ডেবল বাজারে স্যামসাংয়ের অবস্থানকে হুমকির মুখে ফেলেছে৷। এদিকে আইফোন নির্মাতা অ্যাপল এখনো ফোল্ডেবল স্মার্টফোন বিভাগে প্রবেশ করেনি। প্রযুক্তিসংশ্লিষ্টরা বলছেন, এক্ষেত্রে চীনা ডিসপ্লে নির্মাতাদের সাফল্য অ্যাপলের জন্যও একটি সম্ভাব্য ঝুঁকি তৈরি করে। অ্যাপল যদি ফোল্ডেবল বাজারে প্রবেশ করার সিদ্ধান্ত নেয়, তবে এটি এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠিত চীনা কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে শক্তিশালী প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হবে।

ওমডিয়ার প্রধান বিশ্লেষক জয় গুয়ো সাংহাইয়ের একটি সম্মেলনে বলেছেন, এ বছর ২১টি ফোল্ডেবল স্মার্টফোন বাজারে আসার প্রত্যাশা করা হচ্ছে, যার মধ্যে ১৮টি চীনা কোম্পানির। হুয়াওয়ে টেকনোলজিস সম্প্রতি ট্রাই-ফোল্ড ডিজাইনের একটি উচ্চ মানের ফোল্ডেবল ফোন মেট এক্সটি বাজারে এনেছে। এছাড়া এ বছর অনর, ভিভো ও শাওমির মতো অন্যান্য চীনা কোম্পানিও তাদের নিজস্ব ফোল্ডেবল মডেল উন্মোচন করেছে। এ প্রবণতা ক্রমবর্ধমান ফোল্ডেবল স্মার্টফোন বিভাগে চীনের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ও প্রভাব তুলে ধরে।

নিক্কেই এশিয়া বলছে, ফোল্ডেবল স্মার্টফোন ব্র্যান্ডগুলো তাদের ডিসপ্লে চীনের তিনটি প্রধান ওলেড ডিসপ্লে প্রস্তুতকারক কোম্পানি থেকে সংগ্রহ করে। এরা হলো বিওই, চায়না স্টার অপটোইলেকট্রনিকস টেকনোলজি ও ভিশনক্স। ওমডিয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, এ তিন কোম্পানি এ বছর মোট ২ কোটি ৫৮ লাখ ফোল্ডেবল ডিসপ্লের মধ্যে ৫৩ শতাংশ তৈরি করবে। এর আগে ২০২৩ সালে তাদের সম্মিলিত বাজার হিস্যা ছিল ৩২ শতাংশ, যা এখন উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। জয় গুয়ো নিক্কেই এশিয়াকে বলেছেন, ‘চীনা স্মার্টফোন নির্মাতারা মনে করছেন, ফোল্ডেবল ফোনগুলো তাদের গড় বিক্রয়মূল্য বাড়াতে সাহায্য করবে। কারণ ফোল্ডেবল ফোন প্রিমিয়াম, উচ্চ মূল্যের পণ্য হিসেবে বিবেচিত হয়, যার দাম সাধারণত বেশি।’

প্রযুক্তিসংশ্লিষ্টদের মতে, চীনা কোম্পানির নতুন ফোল্ডেবল স্মার্টফোনের উত্থানের পরও এ ডিভাইসগুলো বিশ্বব্যাপী কত দ্রুত গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করবে তা পরিষ্কার নয়। বাজার গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ওমডিয়া চলতি বছর বৈশ্বিক ফোল্ডেবল ফোন বিক্রির পূর্বাভাস ২ কোটি ৭০ লাখ ইউনিট থেকে ২ কোটি ৪০ লাখ ইউনিটে কমিয়ে এনেছে। কারণ ফোল্ডেবল ফোনগুলো এখনো ব্যয়বহুল, যার বেশির ভাগ মডেলের দাম ১ হাজার ডলারের বেশি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *