প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়নে প্রফেশনালদের সম্পৃক্ততা অব্যশক : আইসিএমএবি’র প্রেসিডেন্ট

স্টাফ রিপোর্টার

জাতীয় বাজেট ২০২২-২৩ বিষয়ে ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএমএবি) এর প্রেসিডেন্ট মো. মামুনুর রশিদ এফসিএমএ নানা বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। শনিবার (১১ জুন, ২০২২) রাজধানীর ইকোনমিক রিপোটার্স ফোরামের কার্যালয়ে সংবাদিকদের সামনে আইসিএমএবি’র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।

আইসিএমএবির প্রেসিডেন্ট  উল্লেখে করেন, প্রস্তাবিত বাজেটে ৪,৩৩,০০০ হাজার কোটি টাকা আয়ের বিপরীতে ৬,৭৮,০০০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়সহ মোট ২,৪৫,০০০ হাজার কোটি টাকার ঘাটতিসহ বাজেট উপস্থাপন করা হয়েছে। করোনা পরবর্তী সময়ে এ বিশাল বাজেট অর্জন সরকারের জন্য বিশাল চ্যালেঞ্জ। তবে অসম্ভব নয় বলে তিনি মন্তব্য করেন।

আইসিএমএবি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওয়াতধীন প্রফেশনাল অ্যাকাউন্ট্যান্ট হিসাবে সরকারের পাশে থেকে এ বাজেট অর্জনে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে চায়।

আইসিএমএবি সভাপতি প্রথমেই জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে ধন্যবাদ জানান, আইসিএমএবি’র প্রস্তাবানুযায়ী প্রস্তাবিত বাজেটে ভ্যাট বিধিমালা ২০১৬ মোতাবেক কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টগণ বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির (ADR)  ক্ষেত্রে সহায়ক (Facilitator) হিসাবে কাজ করার সুযোগ দেওয়ার জন্য। হিসাব ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনার জন্য ফিনান্সিয়াল অডিটের পাশাপাশি কস্ট অডিট বাস্তবায়নের দাবী জানান। যা পার্শ্ববতী ভারত সহ বিভিন্ন দেশে বাধ্যতামূলক করা হয়েছ।

একই সাথে কস্ট অব গুডস সোল্ড স্টেটমেন্ট যদি কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টদের মাধ্যমে অডিট করা যায়; তবে কস্ট ইফিসিয়েন্সি বাড়বে, খরচ কমবে এতে সামগ্রিকভাবে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

তিনি ট্যাক্সেস আপীলাত ট্রাইবুনালের প্রতিটি বেঞ্চে একজন করে বিচার বিভাগীয় সদস্যদের পাশাপাশি আইসিএমএবি’র  সদস্য নিয়োগ দেয়ার বিধান চালুর দাবী জানান। এতে বিচারাধীন আয়কর মামলার সংখ্যা কমবে।

ব্যক্তিশ্রেনীর শ্রেণীর করদাতার সর্বোচ্চ করমুক্ত আয়সীমা ৪,০০,০০০/- টাকা এবং মহিলা ও ৬৫ বৎসরের উর্দ্ধে করদাতাদের সর্বোচ্চ করমুক্ত সীমা ৫,০০,০০০/- টাকা করার প্রস্তাব করেন। অ্যাডভাইজরি, কনসালটেন্সি প্রফেশনাল, টেকনিক্যাল ইত্যাদি সার্ভিস ফি হতে উৎসে আয়কর কর্তনকে চূড়ান্ত কর হিসেবে গন্য করার দাবী জানান।

সিনিয়র নাগরিক যাদের আয়ের উৎস শুধুমাত্র পেনশন এবং সঞ্চয়পত্রের সুদ তাদেরকে রিটার্ন দেয়া হতে অব্যাহতি প্রদানের আবেদন জানান। খাদ্য নিরাপত্তা, কৃষি নিরাপত্তা, চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য নিরাপত্তা, জাতীয় দুর্যোগ মোকাবেলা, শিল্পায়ন, ব্যবসা প্রসার ও পূজি বাজার উন্নয়ন, গার্মেন্টস্ সেক্টরে বিশেষ সুবিধা প্রদান, পরিবহন শিল্প এবং বিমান পরিবহন শিল্পের জন্য বিশেষ সুবিধা প্রদানসহ এ খাতে বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধির প্রস্তাব করেন।

কর কাঠামোতে স্টার্টআপ সেন্ড বক্স একটি ভাল উদ্যোগ। এখানে নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য অধিক সুযোগ দেওয়া উচিত।

যাতায়াত খরচ সকলের অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে, ব্যাক্তি শ্রেণির করদাতাদের জন্য যাতায়াত ভাতায় করমুক্ত সীমা ৩০,০০০/- টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ৬০,০০০/- করা উচিত। বিনিয়োগ এর মাধ্যমে কর রেয়াত গ্রহণ করার ক্ষেত্রে, বিনিয়োগের খাত সমূহ বৃদ্ধি করা উচিত, শেয়ার মার্কেট সকলে বোঝেন না, তাই ডিপিএস সীমা ৬০,০০০/- থেকে বৃদ্ধি করে ১,২০,০০০/- করা উচিত।

শ্রম আইন অনুসারে প্রদানকৃত WPPF খাতে খরচকে অননুমোদিত করা সঠিক সিদ্ধান্ত হবেনা। এতে অনেক প্রতিষ্ঠান এই খাতে খরচ প্রদানে অনিহা প্রকাশ করবে। ব্যাক্তি খাতে লভ্যাংশ আয়ের উপর কর্তনকৃত করকে চুড়ান্ত কর উচিত। কারন এই খাতে আয়ের উপর কর কর্তনের প্রমান সংগ্রহ করা অনেক সময়েই সম্ভব হয়না এবং কষ্ট সাধ্য ও সময় সাপেক্ষ ব্যাপার হয়, মাঠ পর্যায়ে করদাতাকে অনেক সমস্যার সন্মূক্ষীন হতে হয়।

সঠিক ও স্বচ্ছ হিসাব ব্যাবস্থা এবং রাজস্ব বৃদ্ধির জন্য হিসাব বিবরনীতে কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্ট কর্তৃক প্রত্যায়িত কষ্ট অব গুডস সোল্ড বিবরনী থাকা উচিত। ইনপুট আউটপুট কুইফিসিন্টের (মূসক ৪.৩) কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্ট কর্তৃক প্রত্যায়িত হলে সঠিক মূল্যের উপর মূসক আদায় সম্ভব হবে। কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্ট প্রত্যায়িত হলে   সুনির্দিষ্ট কারন ব্যতীত নির্ধারিত পন্য মূল্যের জন্য পূনরায় অডিট প্রয়োজন হবে না। এই ধারাটি কিছু ক্ষেত্রে পাইলট প্রকল্প হিসেবে গ্রহণ করা যেতে পারে।

অনুষ্ঠানে বাজেট বিষয়ে আরো বক্তব্য দেন সাফা উপদেষ্টা ও প্রাক্তন সাফা প্রেসিডেন্ট একেএম দেলোয়ার হোসেন এফসিএমএ, ইনস্টিটিউটের ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. মনিরুল ইসলাম এফসিএমএ, সেক্রেটারি এ.কে.এম. কামরুজ্জামান এফসিএমএ, কোষাধ্যক্ষ মো. আলী হায়দার চৌধুরী এফসিএমএ ও ঢাকা ব্রাঞ্চ কাউন্সিলের চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য কর্মকর্তাগণ। বাজেটের উপর পেপার উপস্থাপন করেন মো. শফিকুল আলম এফসিএ, এফসিএমএ, প্রিন্সিপাল অ্যান্ড সিইও, শফিকুল আলম অ্যান্ড কোং চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *