পোশাকের মূল্যবৃদ্ধিতে কারিগরি সহায়তার আশ্বাস আইএলওর

রফতানি বাজারে তৈরি পোশাকের মূল্যবৃদ্ধিতে বাংলাদেশের খাতসংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেয়া হলে কারিগরি সহায়তা দেবে আন্তর্জাতিক শ্রমসংস্থা (আইএলও)। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির আহ্বানের পরিপ্রেক্ষিতে এমন আশ্বাস দেন বাংলাদেশে আইএলওর কান্ট্রি ডিরেক্টর তুওমো পৌতিয়ানেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির সঙ্গে গতকাল সচিবালয়ে মতবিনিময় করেন তুওমো পৌতিয়ানেন। এ সময় তাদের মধ্যে রফতানি বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের মূল্যবৃদ্ধির বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রফতানি) তপন কান্তি ঘোষ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

মন্ত্রী আরো বলেন, অপ্রত্যাশিত রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর বাংলাদেশের কারখানাগুলোর কাজের পরিবেশে আমূল পরিবর্তন হয়েছে। আইএলওর পরামর্শে শ্রম আইন সংশোধন করে সময়োপযোগী করা হয়েছে। কারখানাগুলো আধুনিক ও নিরাপদ করতে মালিকদের বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতে হয়েছে।

শ্রমিকদের নতুন মজুরি কাঠামো বাস্তবায়নে ব্যয় আরো বেড়েছে। কিন্তু তৈরি পোশাকের ক্রেতারা সে অনুপাতে পোশাকের মূল্য বাড়াচ্ছে না। আইএলও তৈরি পোশাকের যৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধির ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখলে বাংলাদেশ উপকৃত হবে।

রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর বাংলাদেশের শ্রমক্ষেত্রে দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়েছে, এমন মত প্রকাশ করে আইএলওর কান্ট্রি ডিরেক্টর বলেন, আগামীতে এ অবস্থার উত্তরোত্তর উন্নতি অব্যাহত থাকবে বলে আশা করি।

আইএলও বিশ্বাস করে, সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের আলোচনার মাধ্যমে যেকোনো সমস্যার সমাধান সম্ভব। শ্রমিকদের কাজের দক্ষতা অর্জন ও বৃদ্ধির জন্য বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর মতো সংগঠনগুলো আরো বেশি অবদান রাখতে পারে।

তুওমো পৌতিয়ানেন জানান, আইএলও ভবিষ্যতেও বাংলাদেশকে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক কারখানাগুলো আধুনিক ও নিরাপদ হয়েছে, গ্রিন ফ্যাক্টরি গড়ে উঠছে, শ্রমিকদের মজুরি বেড়েছে।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, বাংলাদেশের শ্রমিকরা এখন নিরাপদ ও কর্মবান্ধব পরিবেশে কাজ করছেন। তারা উপযুক্ত মজুরিও পাচ্ছেন। সরকারের আন্তরিক ইচ্ছা ও তৈরি পোশাক কারখানার মালিকদের সহযোগিতার কারণে শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আমূল পরিবর্তন এসেছে। শ্রমিকদের বেতন বেড়েছে; কারখানাগুলোও নিরাপদ হয়েছে। দেশে একের পর এক গ্রিন ফ্যাক্টরি গড়ে উঠছে।

তৈরি পোশাকের উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে। তৈরি পোশাকের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি যৌক্তিক। বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ ক্রেতাদের নিয়ে এ বিষয়ে আলোচনার উদ্যোগ নিলে আইএলও কারিগরি সহায়তা ও সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত।

এ সময় বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত অনেক প্রতিকূল পরিবেশ অতিক্রম করে বর্তমান অবস্থানে এসেছে। শ্রমিকদের কল্যাণে বাংলাদেশ আন্তরিক। শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকার ইতিবাচক ভূমিকা রেখে চলেছে।

কারখানাগুলোকে নিরাপদ ও কর্মবান্ধব করতে ন্যাশনাল ইনিশিয়েটিভ, অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্স দীর্ঘদিন কাজ করেছে। আমরা বিশ্বাস করি, রিমেডিয়েশন কো-অর্ডিনেশন সেল (আরসিসি) যথাযথভাবে দায়িত্ব পালনে সক্ষম হবে। মন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশ আগে যেভাবে আইএলওর সহযোগিতা পেয়েছে, ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *