পেঁয়াজ বেচা-কেনা কেজি থেকে পোয়ায় নেমেছে

স্টাফ রিপোর্টার

রেকর্ড গড়ে আলু, আদা, রসুন ও মরিচের দাম সপ্তাহজুড়ে থমকে থাকলেও দিনাজপুরের বাজারে বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। এখন ক্রেতারা পেঁয়াজের দাম জিজ্ঞেস করলেই বিক্রেতারা বলেন, ‘এতো টাকা পোয়া’। মূলত অতিরিক্ত দামের কারণেই কেজির পেঁয়াজ বিক্রি এখন পোয়ায় (২৫০ গ্রাম) নেমেছে। রোববার (২৭ আগস্ট) দিনাজপুরের বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ২০ টাকা। তবে সপ্তাহজুড়ে অন্যান্য সবজির দাম থমকে আছে।

বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দিনাজপুর শহরের বাহাদুর বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা ও দেশি পেঁয়াজ ৯০ টাকা কেজি, যা দুদিন আগেও ছিল যথাক্রমে ৫০ টাকা ও ৭০ টাকা।

সপ্তাহজুড়ে আদা ২৮০, রসুন ২৪০, কাঁচামরিচ ২০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া করলা ৮০ থেকে ১০০ টাকা, টমেটো ১৬০, গাজর ২০০, শিম ৮০, বরবটি ৮০, মুলা ৬০, ফুতি কচু ৭০, কচুরলতি ৮০, ঢ্যাঁড়স ৪০, কাকরোল ৬০, চিচিংগা ৬০ টাকা, শসা ৫০ টাকা, পাতাকপি ৮০ টাকা, সজিনা ২০০ টাকা, লাউ ৪০ থেকে ৫০ টাকা, জালি কুমড়া ৪০ থেকে ৫০ টাকা, পেঁপে ৩৫ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৫০ টাকা ও পটোল ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

তবে আলুর পাইকারি বাজারে দাম রেকর্ড করে দাঁড়িয়ে আছে সর্বনিম্ন ৩৭ থেকে ৭০ টাকা পর্যন্ত। এর মধ্যে অ্যাসটরিক গ্র্যানুলা (সাদা) ও কার্ডিনাল (লাল) ৩৭ টাকা ও দেশি বিভিন্ন প্রজাতির আলু ৫০ টাকা এবং গুঁড়ার পাকড়ি আলু এবং জলপাই আলু বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা কেজি। তবে খুচরা বাজারে দাম কেজিতে ৫ টাকা থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেশি।

উৎপাদন কম, আমদানি খরচ বেশি ও সরবরাহের ঘাটতির কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় এসব সবজির দাম বাড়ছে বলে দাবি বিক্রেতাদের।

নুর মোহাম্মদ নামের এক বিক্রেতা বলেন, ফসল ভালো হোক বা খারাপ, আমদানি কম হোক আর বেশি দাম বাড়ছেই। এটা যেন নিত্য ব্যাপার। এ নিয়ে কথা বলেও কোনো লাভ নেই। তবে দাম কম হলে আমরা কাস্টমারের কাছে বিক্রি করে শান্তি পাই। বাজারে কেউ আদা, রসুন, মরিচের কেজি কতো জিজ্ঞাসা করলে আমরা বলছি এতো টাকা পোয়া। ক্রেতারাও পোয়া হিসেবেই বেশি কিনছেন।

নাজমুল ইসলাম নয়ন নামে এক ক্রেতা বলেন, বলে লাভ নেই, কারণ বিক্রেতারা যে দামে বিক্রি করবে আমাদেরতো সেই দামেই কিনতে হবে। যারা কথা বলার বা তদারকি করার, তারা ঠিকমতো তাদের কাজ করে না বলেই বাজারে এই অবস্থা।

লিটন হোসেন আকাশ নামে আরেক ক্রেতা বলেন, বিক্রেতারা ইচ্ছা করেই দাম বাড়ায়। মানুষ বেশি দামে বিক্রি করা জিনিসপত্র কেনা বন্ধ করে দিলে ব্যবসায়ীরা এমনিই দাম কমিয়ে দেবে। কিন্তু সেটাতো মানুষ করে না। যাদের টাকা আছে, তারা ঠিকই বেশি দাম দিয়ে কিনছে।

তিনি আরও বলেন, ব্যবসায়ীরা কখন কোন জিনিসের দাম বাড়ায় তারাই ভালো জানে। আর বলির পাঠা শুধু আমাদের সাধারণ মানুষকে হতে হয়। কারণ দামতো কমবে না।

এ বিষয়ে জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহাকারী পরিচালক মমতাজ বেগম বলেন, পেঁয়াজ, রসুন, আদা ও মরিচ আমদানিনির্ভর পণ্য। ভারত সরকার বিভিন্ন পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করেছে। তাছাড়া পণ্যের মজুত কম থাকায় কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এখনো বিক্রির দাম নির্ধারণ করেনি। তারপরও আমরা অভিযান পরিচালনা করছি, বাজার মনিটরিং করছি। যাতে ব্যবসায়ীরা ক্রয়মূল্যের চেয়ে খুব বেশি দামে বিক্রি করতে না পারে। আমরা হিলি বাজার পরিদর্শন করেছি। আমাদের বাজার মরিটরিং অব্যাহত রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *