পেঁয়াজের দাম কমেছে কেজিতে ৩০ টাকা
বিগত দুই মাস ধরে পেঁয়াজ নিয়ে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে বাজারে। যে যার মতো করে দাম বাড়িয়ে সাধারণ ভোক্তাদের পকেট কাটছেন। অতি মুনাফালোভী সিন্ডিকেট কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে হু হু করে বাড়িয়ে নিয়েছে পেঁয়াজের দাম। কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী যে পেঁয়াজের উৎপাদন খরচ কেজিতে ২৫ টাকার বেশি নয়, সেই পেঁয়াজ দুই দিন আগেও একশ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। তবে ভারত থেকে আমদানির অনুমতি দেওয়ার খবরে উল্টো দরপতন ঘটেছে পেঁয়াজের বাজারে।
দেশে ভোগ্যপণ্যের দ্বিতীয় বৃহৎ পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ ও চাক্তাইয়ে দুই দিনের ব্যবধানে কেজিতে ৩০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। রোববার বিকেলেও যে পেঁয়াজ ৯৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে সোমবার একই পেঁয়াজ ৬০-৭৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আবার একই পেঁয়াজের একেক দোকানে একেক দাম। কেউ ৬৫ টাকা বিক্রি করলে অন্যজন ৬৮ টাকা, কেউ ৭০ টাকা বিক্রি করলে একই মান ও সাইজের পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৭৪-৭৫ টাকাতে।
পাইকারি বাজারের প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারেও। সোমবার পাইকারি বাজারে যে পেঁয়াজ ৬৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে, নগরীর খুচরা মুদির দোকানে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৮০-৮৫ টাকা কেজিতে।
মধ্যম চাক্তাইয়ের পেঁয়াজ রসুনের আড়তদার ব্যবসায়ী বশর অ্যান্ড সন্সের ম্যানেজার শহীদুল হাসান বলেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির খবর আসার পর থেকে পেঁয়াজের দাম করতে শুরু করেছে। যে পেঁয়াজ ৭৫ টাকায় কিনেছি সেই পেঁয়াজ সোমবার দুপুরে ৬০ টাকায় বিক্রি করতে হয়েছে।
তিনি বলেন, বাড়লে যারা সিন্ডিকেট তাদের লাভ। কমলে পাইকার পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের ক্ষতি। যারা খুচরা বিক্রেতা তাদের তেমন ক্ষতি হয় না বলে দাবি করেন তিনি।
খাতুনগঞ্জের লামার বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ইদ্রিস বলেন, সরকার ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির আইপি (ইমপোর্ট পারমিট) দিয়েছে। আমদানির খবর আসার সাথে সাথে পেঁয়াজের দাম কমে যাচ্ছে। পাইকারি খুচরা সবখানেই দাম কমছে।
কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বিগত ২০২১-২২ সালের জন্য পেঁয়াজের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৫ লাখ ৪ হাজার টন। তবে ওই অর্থবছরে পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়েছিল ৩৬ লাখ ৪১ হাজার টন। বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের (বিটিটিসি) হিসাবে, চাহিদা ২৫ লাখ টনের মতো। কমিশন এ ও বলে থাকে, উৎপাদনের ৩০ শতাংশ পেঁয়াজ সংরক্ষণ ও পরিবহনকালে নষ্ট হয়।
ট্যারিফ কমিশনের এক প্রতিবেদন বলা হয়েছে, ভারতে গত ৩০ মে পাইকারিতে পেঁয়াজের টনপ্রতি দর ছিল ১২১ ডলার। এতে কেজিপ্রতি দর পড়ে ১৩ টাকা। পেঁয়াজে ৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক ও ৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক রয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানিতে কেজিপ্রতি ২০ টাকার মতো পড়ছে।