পেঁয়াজের কেজি ৫ টাকা

স্টাফ রিপোর্টার

ক্রেতা সংকটে আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি করতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারকরা। আইপি জটিলতায় বেশ কিছুদিন ধরে ট্রাকে বস্তাবন্দি পেঁয়াজ। অতিরিক্ত গরমে এসব পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে বাড়তি দামে কেনা এসব পেঁয়াজ ৫-১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে লোকসানের মুখে পড়েছেন আমদানিকারকরা।

কৃষকের উৎপাদিত পেঁয়াজের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতে গত ১৫ মার্চ থেকে সরকার আমদানির অনুমতি বন্ধ করে দেয়। ১৬ মার্চ থেকে হিলিসহ দেশের সব বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হয়ে যায়। বাজার নিয়ন্ত্রণে ৫ জুন সরকার ফের আমদানির অনুমতি দিলে বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়। বন্দরে ভালো মানের পেঁয়াজ ৩২-৩৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, যা খুচরায় ৪০ টাকা। এছাড়া দেশী পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে।

এদিকে পচে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় হিলি স্থলবন্দরের বিভিন্ন আমদানিকারক গুদামে কম দামে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন। গুদামে পেঁয়াজ কিনতে আসা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘‌গরমে ট্রাকের ওপরের দিকের কিছু পেঁয়াজ ভালো থাকলেও নিচের পেঁয়াজগুলো পচে নষ্ট হয়ে গেছে। গুদামে থাকা এসব পেঁয়াজ আমরা খুচরা ক্রেতারা এসে কম দামে নিয়ে যাচ্ছি। এগুলো বাসায় নিয়ে বাছাই করে হাটে বিক্রি করব।’

হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রফতানিকারক গ্রুপের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহিনুর রেজা বলেন, ‘‌দীর্ঘদিন ধরে আমরা ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি চেয়ে আসছিলাম। সরকার এরই মধ্যে আমদানির অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু বর্তমানে আমদানি করে আমাদের লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে।’

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘‌দেশে যখন পেঁয়াজের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠল, তখন বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেয়ার কথা জানিয়েছিল। এর পরই বন্দরের আমদানিকারকরা ভারতীয় রফতানিকারকদের পেঁয়াজ লোডিং করতে বলেন। পেঁয়াজবোঝাই ট্রাকগুলো দেশে প্রবেশের অপেক্ষায় ভারতের অভ্যন্তরে পাইপলাইনে ছিল। কিন্তু কৃষি মন্ত্রণালয় পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিতে ১৫-২০ দিনের মতো বিলম্ব করে। দীর্ঘদিন ধরে ট্রাকে বস্তাবন্দি হয়ে আটকে থাকায় তা পচে নষ্ট হয়ে গেছে। কিছু ভালো মানের পেঁয়াজ বেশি দামে বিক্রি করতে পারলেও খারাপ মানের পেঁয়াজ বাধ্য হয়ে নামমাত্র দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। আবার কিছু ফেলেও দিতে হচ্ছে। বন্দর দিয়ে আমদানি অব্যাহত থাকলেও ক্রেতা সংকট দেখা দিয়েছে।’

হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, ‘‌৫ জুন আবারো হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। গতকালও আমদানি অব্যাহত রয়ছে। বন্দরে আমদানি শুরু হওয়ায় সরকারের রাজস্ব আয় যেমন বেড়েছে, তেমনি বন্দর কর্তৃপক্ষের দৈনন্দিন আয়ও বেড়েছে। বন্দর দিয়ে গতকাল ৪৯টি ট্রাকে ১ হাজার ৩৯৮ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। সোম-বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৭২টি ট্রাকে ১ হাজার ৬৩৩ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *