পুষ্টিকর খাবার কমিয়ে দেয় গরিব মানুষ চালের দাম বাড়লে
বাজারে চালের দাম বাড়লেও সাধারণ মানুষের কাছে অত্যাবশ্যকীয় এ পণ্যের চাহিদা কমে না। তবে এসময় চাল কিনতে ব্যয় বাড়ায় কমে আসে পুষ্টিকর খাবার হিসেবে পরিচিত মাছ, মাংস, সবজি, ফলমূল ও ডাল কেনার ক্রয় ক্ষমতা। কারণ দরিদ্র মানুষ এক-তৃতীয়াংশ ব্যয় করে চাল কেনায়। চালের সবচেয়ে বড় ভোক্তা হলো চরম দরিদ্র সীমার মানুষেরা।
বুধবার (৯ নভেম্বর) আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) কর্তৃক প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। গবেষণাটি পরিচালনা করেন ড. ওয়াসেল বিন সাদাত। এতে সভাপতিত্ব করেন সংস্থাটির মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেন।
বেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, চরম দরিদ্রসীমার নিচে বসবাস করা জনগোষ্ঠীর মোট খাদ্য ব্যয়ের ৩২ শতাংশ ব্যয় হয় চালের জন্য। যেখানে দরিদ্র জনগোষ্ঠী তাদের মোট ব্যয়ের ২৯ শতাংশ ব্যয় করে চালের জন্য। তবে খাদ্যের পেছনে মোট জাতীয় ব্যয়ের ২১ শতাংশ খরচ হয় চালের পেছনে।
এদিকে, নারীদের তুলনায় পুরুষরা বেশি পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করেন। আবার পণ্যের দাম ১০ শতাংশ বাড়লে মাছ-মাংসের চাহিদা কমে গিয়ে বেড়ে যায় সবজি ও ফলের চাহিদা।
করোনার সময় মানুষের আয়ে প্রভাব পড়ার বিষয়টি তুলে ধরে বলা হয়, প্রথম লকডাউনের সময় মানুষের আয় প্রায় ৭০ শতাংশ পর্যন্ত কমে গিয়েছিল। তবে লকডাউনের শেষে তা ৪৩ শতাংশে নেমে আসে। আর দ্বিতীয়বার লকডাউনের শেষে আয় কমার পরিমাণ দাঁড়ায় মাত্র ৪ শতাংশ। অর্থাৎ মানুষের আয় পুনরুদ্ধার হয়ে আসে লকডাউন উঠে যাওয়ার ফলে।
গবেষণার বিষয়ে ড. বিনায়ক সেন বলেন, গবেষণায় উঠে এলো দাম বাড়লে মানুষের পুষ্টিকর খাবারের ক্ষেত্রে একধরনের ছাড় দিতে হয়। এটা একটি দারুণ তথ্য পাওয়া গেছে। আরেকটি বিষয় উঠে এসেছে সেটা হলো- কোভিডের কারণে আয় কমার পরিমাণ ৭০ শতাংশ থেকে ৪ শতাংশে উঠে এসেছে। এখানে দারুণ একটি পুনরুদ্ধার ঘটেছে। আমরা যে শুধু পলিসি নিয়ে কাজ করি না, বরং মাইক্রো অর্থনীতি নিয়ে কাজ করি। আজকের গবেষণা এর একটি প্রমাণ।
প্রতিবেদন প্রকাশের পর এক প্রশ্নের জবাবে ড. ওয়াসেল বলেন, অনেক সময় বলা হয়, মুরগির দাম বেড়ে গেলে মানুষ মাছ খাবে বেশি। কিন্তু বাস্তবে তা ঘটে না। মাছের দাম বাড়লে ফল ও ডালের ভোগ বাড়বে। আবার মাংসের দাম বাড়লে সবকিছুর ভোগ কমে আসবে।