পার্লামেন্টে এমপিদের টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ

রাজনৈতিক ডামাডোলের কারণে টিয়ারগ্যাস শব্দটির আমাদের পরিচয় নেহাত কম নয়। যে কোন আন্দোলন দমাতে, মিছিল ছত্রভঙ্গ করতে বা সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে রাস্তাঘাটে আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করতে দেখি। কিন্তু পার্লামেন্টের ভেতরে সরকারের কাজে বাধা দিতে এমপিদের টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপের কথা ক’জনই বা শুনেছেন! কসোভোর বিরোধী দলের বিরুদ্ধে সেই অভিযোগই উঠেছে। পাঁচ বার পার্লামেন্টের চেম্বারে টিয়ারগ্যাস ছোঁড়া হয়েছে, আর এ থেকে রক্ষা পেতে এমপিদের দৌড়ে পালাতে হয়েছে। খবর বিবিসির।

সার্বিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার প্রশ্নে কসোভোতে রাজনৈতিক উত্তেজনা চলছে কিছুদিন ধরে। এ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে তীব্র মতবিরোধ। ‘সেলফ ডিটারমিনেশন পার্টির’ প্রধান আলবিন কুর্টি এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী রামুশ হারাডিনাজ অভিযোগ করছেন, সার্বিয়ার সঙ্গে এ নিয়ে সরকার যে চুক্তি করেছে, তা নিয়ে পার্লামেন্টে কোন বিতর্কের সুযোগ দেওয়া হয়নি।

এ কারণেই পার্লামেন্টের ভেতর কাঁদানে গ্যাস ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেলফ ডিটারমিনেশন পার্টির মুখপাত্র আরবার জাইমি বলেন, আমরা এই কৌশল নিয়েছি, কারণ আমাদের সামনে আর কোন পথ খোলা ছিল না। দলের নেতা আলবিন কুর্টি এই কাজের জন্য এখন জেলখানায় রয়েছেন।

২০০৮ সালে সার্বিয়া থেকে আলাদা হয়ে কসোভো স্বাধীনতা ঘোষণা করে। কিন্তু সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যস্থতায় কসোভোর সরকার সার্বিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে চুক্তি করে। এ নিয়ে কসোভোর জনগণ মারাত্মকভাবে বিভক্ত। গত ৮ অক্টোবর প্রথম পার্লামেন্টের ভেতর কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করা হয়। এজন্যে দোষ দেওয়া হয় বিরোধী নেতা আলবিন কুর্টিকে। সেদিন দু’জন এমপি কাঁদানে গ্যাসের কারণে অজ্ঞান হয়ে পড়েন।

১৫ ই অক্টোবর দ্বিতীয়বার কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করা হয় পার্লামেন্টে। ২৩ শে অক্টোবর পার্লামেন্টে বিরোধীরা যখন সার্বিয়ার সঙ্গে চুক্তি বাতিলের দাবিতে হৈ চৈ করছিলেন তখন আবার চেম্বার আচ্ছন্ন হয়ে যায় কাঁদানে গ্যাসে। শেষ দফা কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করা হয় গত ৩০ নভেম্বর। এবার পরিস্থিতি সামলাতে পার্লামেন্টের ভেতর পুলিশ পাঠাতে হয়। এ সময় বিরোধী দলের বেশ কিছু এমপিকে গ্রেফতার করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *