পাম অয়েলের রফতানি শুল্ক প্রত্যাহার ইন্দোনেশিয়ার
সব ধরনের পাম অয়েল পণ্যের রফতানি শুল্ক প্রত্যাহার করেছে ইন্দোনেশিয়া। চলতি বছরের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত কার্যকর থাকবে। পাম অয়েল রফতানি বাড়ানোর উদ্দেশ্যেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার। পাশাপাশি ঊর্ধ্বমুখী মজুদও এর মাধ্যমে কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। সম্প্রতি দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।
এদিকে রফতানি শুল্ক প্রত্যাহার করা হলেও তা সরকারের রাজস্ব আহরণে কোনো রকম বিরূপ প্রভাব ফেলবে না বলে জানিয়েছেন মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্টরা।
ইন্দোনেশিয়া বিশ্বের শীর্ষ পাম অয়েল উৎপাদক ও রফতানিকারক। দেশটির রফতানি শুল্ক প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক বাজারে পাম অয়েলের বাজারদরকে আরো নিম্নমুখী চাপে ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এরই মধ্যে চলতি বছরের এপ্রিল থেকে পণ্যটির দাম অব্যাহত কমছে। সাড়ে তিন মাসে গড় দাম কমেছে ৫০ শতাংশ, যা এক বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।
স্থানীয় বাজারে দাম কমিয়ে আনতে এ বছরের ২৩ মে পাম অয়েল রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল ইন্দোনেশিয়া। টানা তিন সপ্তাহ এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর ছিল। এতে দেশটিতে পাম অয়েলের মজুদ ব্যাপক বেড়ে যায়। ঊর্ধ্বমুখী মজুদের কারণে বিপাকে পড়েন দেশটির উৎপাদকরা।
এদিকে নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেয়ার পর থেকেই স্থানীয় বাজারে বিক্রির বাধ্যবাধকতা বাস্তবায়নে কাজ করছে জাকার্তা, যা ডমিস্টিক মার্কেট অবলিগেশন (ডিএমও) নামে পরিচিত। এর উদ্দেশ্য রফতানি বাড়লেও স্থানীয় বাজারে যাতে পাম অয়েলের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকে এবং দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
ডিএমওর পর এবার রফতানি শুল্ক প্রত্যাহার করা হলো। এর মাধ্যমে আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে থাকা মজুদ কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। এতে সম্ভাব্য লোকসান থেকে রক্ষা পাবেন উৎপাদকরা। এর পাশাপাশি দেশটির সরকার শিপমেন্ট একসেলারেশন প্রোগ্রাম চালু করেছে। উদ্দেশ্য রফতানি বাড়ানো। তবে নানা উদ্যোগ সত্ত্বেও দেশটির পাম অয়েল রফতানিতে গতি ফিরছে না। কোম্পানিগুলো ডিএমও নীতিমালার কঠোরতাকে রফতানি না বাড়ার পেছনে দায়ী করছে। এছাড়া কার্গো পাওয়া নিয়েও জটিলতা দেখা দিয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ার অর্থমন্ত্রী শ্রী মুলায়নি ইন্দ্রাবতী বলেন, ১ সেপ্টেম্বর থেকে আবারো রফতানি শুল্ক কার্যকর হবে। এ সময় দামের ওপর ভিত্তি করে প্রতি টন পাম অয়েলের রফতানি শুল্ক দাঁড়াবে ৫৫-২৪০ ডলার।
ইন্দোনেশিয়ান পাম অয়েল অ্যাসোসিয়েশন (গাপকি) জানায়, মে মাসের শেষ নাগাদ ইন্দোনেশিয়ায় ৭২ লাখ ৩০ হাজার টন অপরিশোধিত পাম অয়েল মজুদ ছিল। সংস্থাটি রফতানি শুল্ক প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে ডিএমও নীতিমালা উঠিয়ে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে।