পাকিস্তানের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয় বাংলাদেশের

স্টাফ রিপোর্টার

ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে থাকলো পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডি। পাঞ্চাব প্রদেশের মাঠটিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। শুধু জয় বললে ভুল হবে। এই ম্যাচে পাকিস্তানকে পাত্তাই দেয়নি টাইগাররা। ৩০ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১০ উইকেটের বিশাল জয়টি পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম।

এর আগে ২০০১ সাল থেকে পাকিস্তানের ১৩টি টেস্ট ম্যাচ খেললেও জয় পায়নি বাংলাদেশ। অবশেষে আজ রোববার ২৪ বছরের অপেক্ষা ঘুচলো বাংলাদেশের।

এই ম্যাচে একটি দুর্দান্ত রেকর্ডও করেছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসে পাকিস্তানকে মাত্র ১৪৬ রানে অলআউট করে দেয় বাংলাদেশ। টাইগারদের বিপক্ষে টেস্টে এটিই পাকিস্তানের সর্বনিম্ম স্কোর। এর আগে ২০০৩ সালে মুলতানে টাইগারদের কাছে ১৭৫ রানে অলআউট হয়েছিল পাকিস্তান।

৩০ রানের লক্ষ্য তাড়ায় স্বাচ্ছন্দে খেলতে থাকেন দুই টাইগার ওপেনার জাকির হাসান ও সাদমান ইসলাম। সাদমানের ৯ আর জাকিরের ১৫ রানের সুবাদে জয় অর্জিত হয় বাংলাদেশের।

আজ রোববার ১ উইকেটে ২৩ রান নিয়ে পঞ্চম দিনের খেলা শুরু করে পাকিস্তান। উইকেট শিকারের মাধ্যমে দিন শুরু করে বাংলাদেশ। দিনের দ্বিতীয় ওভারেই পাকিস্তান অধিনায়ক শান মাসুদের উইকেট তুলে নেন হাসান মাহমুদ। তাকে উইকেটরক্ষক লিটন দাসের ক্যাচ বানান টাইগার পেসার।

যদিও প্রথমবারের আবেদনে আম্পায়ার মাথা নাড়িয়ে নেতিবাচক সিদ্ধান্ত দেন। তবে রিভিউ কথা বলে বাংলাদেশের পক্ষে। রিভিউতে দেখা যায়, হাসান মাহমুদের বাউন্সি বল শান মাসুদের ব্যাটে সামান্য স্পর্শ করেছে। ৩৭ বলে ১৪ রান করে ফেরত যান শান মাসুদ।

এরপরই আরও একটি উইকেট শিকারের সুযোগ মিস করে বাংলাদেশ। মাসুদ ফেরত যাওয়ার পরের ওভারেই শরীফুল ইসলামের বলে বাবর আজমের সহজ ক্যাচ ফেলে দেন লিটন দাস।

২৫তম ওভারের তৃতীয় বলে বাবরের লেগ স্টাম্প উপড়ে ফেলেন পেসার নাহিদ রানা। বাবর ফেরেন ২২ রানে। পরের ওভারে আঘাত হানেন সাকিব আল হাসান। ২৬তম ওভারের শেষ বলে সাকিবকে সামনে এগিয়ে এসে খেলতে চেয়েছিলেন সৌদ শাকিল। তবে বলটি মিস করেন আগের ইনিংসে ১৪১ রান করা শাকিল। বল পেয়ে মোটেও ভুল করলেন না লিটন দাস। দ্রুতগতিতে স্টাস্পড করেন তিনি। রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরের পথে হাঁটেন শাকিল।

৩৩তম ওভারের শেষ বলে সাকিবকে উড়িয়ে মারতে গিয়েছিলেন আব্দুল্লাহ শফিক। ব্যাটে-বলে ভালো মতো সংযোগ ঘটাতে না পেরে মিড অফে সাদমান ইসলামের হাতে ক্যাচ হন পাকিস্তান ওপেনার (৩৭ রান)। এই ইনিংসে এটি সাকিবের দ্বিতীয় শিকার।

পরের ওভারেই নতুন ব্যাটার সালমান আলি আগাকে (০) বোকা বানান মেহেদী হাসান মিরাজ। মিরাজকে ঠেকাতে গিয়ে প্রথম স্লিপে সাদমানের ক্যাচ হন তিনি। এতে ১০৫ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলে পাকিস্তান। এরপর ১১৮ রান নিয়ে মধ্যাহ্নবিরতিতে যায় স্বাগতিকরা।

বিরতি থেকে আসার পর শাহিন শাহ আফ্রিদির (১৬ বলে ২) উইকেট তুলে নেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এরপর নাসিম শাহকে (২২ বলে ৩) নিজের তৃতীয় শিকার বানান সাকিব আল হাসান।

এরপর বাংলাদেশের সামনে কাঁটা হয়ে দাঁড়ান মোহাম্মদ রিজওয়ান। খুররম শেহজাদকে নিয়ে ২৪ রানের জুটি করেন তিনি। এরমধ্যে হাঁকিয়ে ফেলেন ফিফটিও। তবে রিজওয়ানকে ফিফটির পর বেশিদূর যেতে দেননি মিরাজ। ৮০ বলে ৫১ রান করা পাকিস্তানের ডানহাতি এই ব্যাটারকে বোল্ড করে দেন টাইগার স্পিনার।

পাকিস্তানের সর্বশেষ উইকেটও তুলে নেন মিরাজ। মোহাম্মদ আলিকে রানের খাতাই খুলতে দেননি তিনি।

এর আগে প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেটে ৪৪৮ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে পাকিস্তান। জবাবে ৫৬৫ রানের পাহাড় গড়ে অলআউট হয় বাংলাদেশ। এতে টাইগারদের লিড হয় ১১৭ রানের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *