পাইকারি বাজারে আরেক দফা বেড়েছে চিনির দাম

স্টাফ রিপোর্টার

নারায়ণগঞ্জের নিতাইগঞ্জে চিনির দাম আরেক দফা বেড়েছে। পাইকারি পর্যায়ে গতকাল ৫০ কেজির বস্তাপ্রতি চিনির দাম বেড়েছে ১০০ টাকা। প্রতি বস্তার দাম দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৮৫০ টাকা। এ হিসেবে চিনির পাইকারি বিক্রয়মূল্য দাঁড়িয়েছে ১৩৭ টাকায়। মাস খানেক আগেও প্রতি বস্তা চিনি বিক্রি হয়েছে ৬ হাজার ৭৫০ টাকায়। সে সময় কেজিপ্রতি ভোগ্যপণ্যটির মূল্য ছিল ১৩৫ টাকা। অন্যদিকে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি চিনির দাম উঠেছে ১৪৮ টাকায়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে চিনি তৈরির কাঁচামালের সংকট ও ডলারের অভাবে এলসি জটিলতাসহ নানা কারণে পণ্যটির বাজার ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠছে।

কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, বাজারে চিনি উৎপাদন ও বাজারজাত করে বড় বড় কয়েকটি করপোরেট প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে চিনি তৈরির কাঁচামাল সংকট, আন্তর্জাতিক বাজারদর ও ডলারের দাম বাড়ার মতো কারণ রয়েছে। এ ছাড়া দেশের কয়েকটি মিল উৎপাদন বন্ধ রেখে কারখানা পরিষ্কার করছেন। এসব কারণে বাজারে চিনি সরবরাহ কিছুটা কমতির দিকে। ফলে পণ্যটির দাম বেড়েছে।

নিতাইগঞ্জের চিনি ব্যবসায়ী দীলিপ সাহা বলেন, ‘চিনি উৎপাদন ও বিপণন করে হাতে গোনা পাঁচ-ছয়টি মিল। তার মধ্যে দুই-তিনটি মিলে এখন ওয়াশ চলায় উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। এ কারণে বাজারে চাহিদার তুলনায় মিল থেকে চিনি সরবরাহ কমেছে। আর এ সুযোগে অন্য বড় কোম্পানিগুলো মিল গেট থেকে চিনির দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। তাই আমাদেরও বেশি দামে চিনি কিনতে হচ্ছে। পাইকারি পর্যায়ে দাম বাড়ার কারণে খুচরা পর্যায়েও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।’

আরেক চিনি ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন বলেন, ‘বাজারে চাহিদার তুলনায় চিনি সরবরাহ কম। ডিও (ডেলিভারি অর্ডার লেটার বা সরবরাহ আদেশপত্র) কাটার পর মিল গেটে তিন-চারদিন বসে থেকে এক ট্রাক চিনি পাচ্ছি। কিন্তু যদি বেশি রেটে মিলের ডিও কাটি তাহলে ওইদিনই চিনি পেয়ে যাচ্ছি। এছাড়া অনেক সময় মিল থেকে চিনি কী রেটে কেনা হচ্ছে তা ডিও লেটারে উল্লেখ করছে না মিল কর্তৃপক্ষ।’

চিনি ব্যবসায়ী কাদির মিয়ার অভিযোগ, সরকারের মনিটরিং ব্যবস্থার দুর্বলতার কারণে চিনি ব্যবসায়ীরা নিজেদের ইচ্ছেমাফিক দাম নির্ধারণ করছেন। চিনির কাঁচামাল আমদানি খরচ কত, মিলের চিনি উৎপাদন খরচ কত এবং বাজারে ডিও কত রেটে ছাড়া হচ্ছে তা যদি মিল থেকে ডিওতে উল্লেখ করে দিত, তবে বাজার পরিস্থিতি সহজে নিয়ন্ত্রণ করা যেত। কিন্তু মিল কর্তৃপক্ষ সে নিয়ম মানছে না।

এদিকে পাইকারি বাজারে চিনির দাম বাড়ার কারণে খুচরা বাজারেও বেশ দাম বেড়েছে। পাইকারি পর্যায়ের ১৩৭ টাকা দরের প্রতি কেজি চিনি খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ১৪৮ টাকায়। চিনির খুচরা ব্যবসায়ী রাব্বি মিয়া বলেন, ‘এক বস্তা চিনি নিতাইগঞ্জ থেকে মাসদাইর বাজারে নিয়ে আসতে রিকশা ভাড়া আছে। এর বাইরে দোকান ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, কর্মচারী খরচ, এক বস্তা চিনি খুচরা বিক্রি করতে গিয়ে প্রায় দুই কেজি চিনির ঘাটতি হয়। এ কারণে আমাদের পাইকারি বাজার থেকে একটু বেশি দামে খুচরা বিক্রি করতে হয়।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *