পছন্দের শীর্ষে জেএমআই হাসপাতাল
গত সপ্তাহ কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার মধ্য দিয়ে পার করেছে দেশের শেয়ারবাজার। এই উত্থানের বাজারে সপ্তাহজুড়ে দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখিয়েছে নতুন তালিকাভুক্ত জেএমআই হাসপাতাল।
গত সপ্তাহে বিনিয়োগকারীদের কাছে পছন্দের শীর্ষে ছিল কোম্পানিটির শেয়ার। এর ফলে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দাম বাড়ার শীর্ষস্থানটি দখল করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এর মাধ্যমে টানা তিন সপ্তাহ দাম বাড়ার ক্ষেত্রে শীর্ষস্থান দখল করলো কোম্পানিটি।
গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তিন কার্যদিবসেই জেএমআই হাসপাতালের শেয়ার দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করে। ফলে সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়েছে ৪৪ দশমিক ৯৪ শতাংশ। টাকার অঙ্কে বেড়েছে ২৩ টাকা ১০ পয়সা। গত সপ্তাহে কোম্পানিটির শেয়ার দাম ৫১ টাকা ৪০ পয়সা থেকে বেড়ে ৭৪ টাকা ৫০ পয়সা পর্যন্ত উঠেছে।
শেয়ারের এমন দাম বাড়া কোম্পানিটি গত ৩১ মার্চ থেকে শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু করে। লেনদেনের প্রথম দিন থেকেই কোম্পানিটির শেয়ার দাম হু হু করে বাড়তে থাকে। লেনদেন শুরুর আগে কোম্পানিটি চলমান হিসাব বছরের প্রথম ছয় মাসের (২০২১ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর) আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
ওই আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে মুনাফা হয়েছে ৫ কোটি ৯৭ লাখ ৭০ হাজার টাকা। এতে শেয়ার প্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ৬৬ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে মোট মুনাফা হয় ৫ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। এতে শেয়ার প্রতি মুনাফা হয় ৬১ পয়সা।
অপরদিকে জুলাই-ডিসেম্বর এই ছয় মাসে মোট মুনাফা হয়েছে ১১ কোটি ৬২ লাখ ১০ হাজার টাকা। এতে শেয়ার প্রতি মুনাফা হয়েছে ১ টাকা ২৯ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে মোট মুনাফা হয় ১০ কোটি ৯২ লাখ ১০ হাজার টাকা। এতে শেয়ার প্রতি মুনাফা হয় ১ টাকা ২১ পয়সা।
জমি ক্রয়, ভবন তৈরি, মেশিনারীজ ক্রয়, ঋণ পরিশোধ কাজে ব্যবহারের জন্য পুঁজিবাজার থেকে ৭৫ কোটি টাকা তুলতে কোম্পানিটির আইপিও অনুমোদন করে বিএসইসি। এ সংক্রান্ত বিডিংয়ের অনুমোদন দেওয়া হয় গত বছরের ১৬ নভেম্বর।
নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদনের পর চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি বিকেল ৫টা থেকে ১২ জানুয়ারি বিকেল ৫টা পর্যন্ত জেএমআই হসপিটালের বিডিং অনুষ্ঠিত হয়। এই বিডিংয়ে অংশ নিয়ে যোগ্য বিনিয়োগকারীরা প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারের কাট-অফ প্রাইস নির্ধারণ করেন ২৫ টাকা। আর আইপিওতে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা প্রতিটি শেয়ারের দাম দিয়েছেন ২০ টাকা করে।
এদিকে, শেয়ার দাম বাড়ায় বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ কোম্পানিটির শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছে। ফলে গত সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৭৫ কোটি ৫৯ লাখ ৬৭ হাজার টাকা। আর প্রতি কার্যদিবসে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৩৫ কোট ১১ লাখ ৯৩ হাজার টাকা।
গত সপ্তাহে দাম বাড়ার শীর্ষ তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন। এই সময়ে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার দাম বেড়েছে ১১ দশমিক ৯৭ শতাংশ। এর পরের স্থানটিতে রয়েছে আইপিডিসি ফাইন্যান্স। সপ্তাহজুড়ে এ কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়েছে ১০ দশমিক ৯০ শতাংশ।
এছাড়া দাম বাড়ার শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় থাকা এনআরবিসি ব্যাংকের ১০ দশমিক ৮২ শতাংশ, লাভেলো আইসক্রিমের ৯ দশমিক ৬৯ শতাংশ, ক্রাউন সিমেন্টের ৯ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ, ইনটেক লিমিটেডের ৮ দশমিক ৮০ শতাংশ, কাশেম ইন্ডাস্ট্রিজের ৭ দশমিক ৯০ শতাংশ, বিকন ফার্মাসিউটিক্যালসের ৬ দশমিক ৮৯ শতাংশ এবং লংকাবাংলা ফাইন্যান্সের ৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ দাম বেড়েছে।