নারী শ্রমশক্তির ৬৬% কৃষিতে নিয়োজিত

দেশে নারী শ্রমশক্তির ৬৬ শতাংশ কৃষিতে নিয়োজিত। গত দুই দশকে কৃষিতে নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে ১৩৪ শতাংশ। একই সময়ে কৃষিতে পুরুষের অংশগ্রহণ কমেছে ২ শতাংশ। অর্থনীতিতে নানামুখী প্রণোদনার কারণে কৃষি এবং গ্রামভিত্তিক কাজ ছেড়ে শহরমুখী হচ্ছেন পুরুষরা। তবে কৃষিতে নারীর এ ক্রমবর্ধমান অংশগ্রহণ নারীর ক্ষমতায়নে কতটুকু ভূমিকা রাখল, সে বিষয়ে লক্ষ রাখতে হবে।

আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস উপলক্ষে গতকাল দৈনিক ইত্তেফাকের মাজেদা বেগম মিলনায়তনে ‘কৃষিতে নারীর কাজের মূল্যায়ন ও জিডিপিতে স্বীকৃতি’ শীর্ষক এক সেমিনারে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন ও দৈনিক ইত্তেফাক যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে।

সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, কৃষি মেয়েদের জন্যই। আদিতে পুরুষরা শিকারি ও কালেক্টর ছিল। কৃষির প্রচলন নারীদের হাত ধরেই হয়েছে। কৃষিতে নারীর মূল্যায়ন নিয়ে একটা সংঘবদ্ধ প্রচেষ্টা চলতে পারে। আন্দোলনও হতে পারে।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা ও সভাপতিত্ব করেন দৈনিক ইত্তেফাকের সম্পাদক তাসমিমা হোসেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম। মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শরমিন্দ নীলোর্মি।

সেমিনারে শাহীন আনাম বলেন, নারীর মর্যাদা বাড়লে মজুরিও বাড়বে। নারীর শিক্ষা, দক্ষতা থাকা সত্ত্বেও একটি বিষয় সত্যি যে, বিপুল পরিমাণ নারী কখনই বাইরে কাজ করবে না। তারা সংসারেই কাজ করবে, আর সেটি কৃষির সঙ্গে সম্পৃক্ত। এর মর্যাদা দিতে হবে। নারীর কাজের মূল্য ধরে তা জিডিপিতে অন্তর্ভুক্ত করা হলে জিডিপির হার অনেক বেড়ে যাবে।

জমিতে নারীর মালিকানার বিষয় উল্লেখ করে বিআইডিএসের সিনিয়র গবেষক ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, কৃষিতে নারীর কাজের স্বীকৃতি দিতে হলে জমিতে নারীর মালিকানা দিতে হবে।

নিজেরা করির প্রধান নির্বাহী খুশী কবির বলেন, জিডিপিতে নারীর কাজের স্বীকৃতি প্রয়োজন। নারীর ভূমিকা কম করে দেখার কোনো যুক্তি নেই। পাশাপাশি নারীর উত্তরাধিকারের বিষয়টিও বিবেচনা করতে হবে।

জমি, উৎপাদন ও বাজারজাতের বিষয়টি সংগঠিত নয় উল্লেখ করে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জুনায়েদ

সাকি বলেন, জমি, উৎপাদন ও বাজারজাতের বিষয়টি সমন্বয় করা গেলে অনেক বেশি উন্নয়ন সম্ভব। সমবায় থাকলে সরকারের অনুদানের টাকা কৃষকের কাছে যাবে। এছাড়া নারীর ক্ষেত্রে মালিকানা নিয়ে সমস্যা আছে, যা সমাধান করা জরুরি।

সেমিনারে মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন বিআইডিএসের সাবেক সিনিয়র রিসার্চ ফেলো প্রতিমা পাল মজুমদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ প্রোগ্রামের পরিচালক রেজয়নুল হক নিবির, উবিনীগের পরিচালক সীমা দাশ সীমু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক বাকি খলিলিসহ আরো অনেকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *