ধানের কুঁড়া থেকে পাওয়া যাবে ৭ লাখ টন তেল
উত্তরাঞ্চলের রাইস মিলগুলোসহ সারাদেশে উৎপাদিত প্রায় ৫.৫ কোটি টন রাইস ব্র্যান (ধানের কুঁড়া) থেকে পাওয়া যাবে প্রায় ৭.৫ লাখ টন ভোজ্যতেল। যা বাংলাদেশের মোট চাহিদার অর্ধেক পূরণ করবে।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে ‘পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি হোক প্রসারিত, টেকসই উন্নয়নে দেশ হোক উন্নত’ শীর্ষক কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. মইনুদ্দিন এ তথ্য দেন।
তিনি বলেন, বিগত বছরগুলোতে আমদানিকৃত ভোজ্যতেলের পরিমাণ বছরে প্রায় ১৫-২০ লাখ টন। এতে খারচ প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা। ধানের কুঁড়া, সরিষা, তিল, চিনা বাদাম ও ভুট্টাসহ দেশের সব ভোজ্যতেলের উৎসগুলোকে কাজে লাগিয়ে টেকনোলজি ব্যবহার করে বাজারজাত করলে ভোজ্যতেলে বাংলাদেশ হবে স্বয়ংসম্পূর্ণতা। সেই সঙ্গে বিদেশেও তেল রফতানি করতে পারব আমরা। এক্ষেত্রে প্রয়োজন সমন্বিত উদ্যোগ।
প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. মইনুদ্দিন আরও বলেন, শিল্পোদ্যোক্তা ও শিল্পে আগ্রহী ব্যক্তিদের সঙ্গে বিজ্ঞানীদের প্রত্যক্ষ যোগাযোগের মাধ্যমে দেশের শিল্পায়ন ও শিল্প অর্থনীতিকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নেয়া সম্ভব। তবে শিল্পায়নে যেসব বাধা, সমস্যা শিল্পোদ্যোক্তাদের নিরুৎসাহিত করে সেগুলো চিহ্নিত করে নির্মূলের উপায় উদ্ভাবনের লক্ষ্যে শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
কর্মশালায় জানানো হয়, দেশে উন্নয়ন হলেই চলবে না, সেটি হতে হবে টেকসই। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে খাদ্যে উন্নতি এবং পুষ্টিতে অবনতি। শুধু চাল, গম ইত্যাদি খাদ্যশস্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন টেকসই উন্নয়ন নয়। এমনিভাবে শিক্ষা, খাদ্য নিরাপত্তা, সামাজিক নিরাপত্তা, নারী অধিকার, সুশাসন, সবমিলিয়ে সুষম উন্নয়নের নাম হবে টেকসই উন্নয়ন। প্রাকৃতিক রেজিন লাক্ষার বিভিন্ন প্রোডাক্ট, ভুট্টা থেকে কর্নস্টার্চ তৈরির পদ্ধতি, সিএমসি তৈরির পদ্ধতি, রেশম শিল্পের বর্জ্য থেকে উদ্ভাবিত বিভিন্ন পদ্ধতি- এসব অত্যন্ত সহজ প্রযুক্তি। কাঁচামাল ও বাংলাদেশের বাজারের চাহিদা উপযোগী স্বল্প পুঁজিতে শিক্ষিত বেকার যুবক ও নারী উদ্যোক্তারা এগুলো নিয়ে সহজেই শিল্প গড়ে তুলতে পারেন।
বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণাগার রাজশাহীর পরিচালক ড. মো. ইব্রাহিমের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের সদস্য বিজয় ভূষণ পাল। বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. অপূর্ব কুমার রায়, রুয়েটের ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মোশাররাফ হোসেন।