দ্রুত ৩০০ কোটি ডলার সহায়তা প্রয়োজন শ্রীলংকার
চরম অর্থনৈতিক সংকট থেকে উত্তরণে আগামী ছয় মাসে অন্তত ৩০০ কোটি ডলার বিদেশী সহায়তা প্রয়োজন হবে শ্রীলংকার। এ সহায়তা পাওয়া গেলে জ্বালানি ও ওষুধের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করা যাবে বলে জানিয়েছেন দেশটির সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত অর্থমন্ত্রী আলী সাবরি। খবর রয়টার্স।
২ কোটি ২০ লাখ মানুষের দেশ শ্রীলংকা দীর্ঘদিন ধরেই চরম অর্থনৈতিক সংকট পার করছে। অর্থের অভাবে জরুরি ওষুধের সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে, জ্বালানি সংকটের কারণে দিনের বড় একটা সময় বিদ্যুত্হীন অবস্থায় কাটাতে হচ্ছে, বাজারে নেই প্রয়োজনীয় নিত্যপণ্য। এমন পরিস্থিতিতে নড়ে উঠেছে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের আসন। দেশজুড়ে বিক্ষুব্ধ মানুষ নেমে এসেছে রাস্তায়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনা মোতায়েন, সান্ধ্য আইন জারির মতো পদক্ষেপ নিতে হয়েছে সরকারকে।
এ মাসেই আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে আলোচনার কথা জানান অর্থমন্ত্রী। তিনি জানান, তার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল এ মাসেই ওয়াশিংটন যাবে। ক্ষমতা গ্রহণের পর দেয়া প্রথম সাক্ষাৎকারে আলী সাবরি বলেন, দেশের জন্য ৩০০ কোটি ডলার বিদেশী সহায়তা নিয়ে আসা এ মুহূর্তে অত্যন্ত কঠিন কাজ। আইএমএফের সঙ্গে আলোচনায় আমাদের প্রধান লক্ষ্য থাকবে আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থাগুলোকে এটা বোঝানো যে আমরা স্বচ্ছ, আমরা পুনর্গঠনের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি।
আন্তর্জাতিক সার্বভৌম বন্ড পুনর্গঠন করতে চাইছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশটি। এছাড়া ঋণ পরিশোধের ওপর স্থগিতাদেশও চাওয়া হবে। এছাড়া জুলাইয়ের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে এমন ১০০ কোটি ডলার ঋণদাতাদের সঙ্গেও আলোচনা চলছে। সার্বিক বিষয় নিয়ে সাবরি বলেন, বড় ধরনের ঋণখেলাপ থেকে বাঁচতেই এসব পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। কারণ ঋণখেলাপি হলে তার সম্ভাব্য পরিণতি সম্পর্কে আমাদের ধারণা আছে।
জে পি মরগানের বিশ্লেষকরা বলছেন, চলতি বছর শ্রীলংকার মোট ঋণের পরিমাণ ৭০০ কোটি ডলারে পৌঁছতে পারে। যার মধ্যে চলতি হিসেবে ঘাটতির পরিমাণ হবে ৩০০ কোটি ডলার। দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, মার্চের শেষ নাগাদ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ ১৯৩ কোটি ডলার।
আলী সাবরি বলেন, আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার জ্বালানি, গ্যাস, ওষুধের মতো নিত্যপণ্যের সরবরাহ চেইন স্বাভাবিক করা। পাশাপাশি জনগণ যার জন্য পথে নেমেছে সেই বিদ্যুৎ পরিস্থিতির উন্নতি করা।
কিছুদিন ধরেই সরকারবিরোধী বিক্ষোভ করছে শ্রীলংকার অধিবাসীরা। কোথাও কোথাও এ বিক্ষোভ সহিংস রূপ নিয়েছে। এ প্রসঙ্গ উল্লেখ করে নতুন অর্থমন্ত্রী বলেন, বিক্ষোভ জনগণের অধিকার, আমরা তাকে সম্মান করি। কিন্তু সে ক্ষেত্রে সহিংস হওয়া যাবে না। কারণ এটি সঠিক আচরণ নয়। এর রেশ পড়বে আমাদের পর্যটন শিল্পে।