দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে আদা
রাজধানীর পাইকারি বাজারে আদার দাম তুলনামূলক স্থিতিশীল রয়েছে। তবে খুচরা বাজারে পণ্যটির দাম বাড়তি রয়েছে। পাইকারির তুলনায় খুচরা পর্যায়ে প্রায় দ্বিগুণ দামে মসলা পণ্যটি বিক্রি হচ্ছে। মূলত সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর উপায়ে বাজার তদারকি না হওয়ার কারণে পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে আদার দামে এমন পার্থক্য বিদ্যমান বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।
রাজধানীর পুরান ঢাকার শ্যামবাজারের পাইকারি আড়তগুলো ঘুরে চীন থেকে আমদানি করা প্রতি কেজি আদা মানভেদে ৭৫-৮০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। অন্যদিকে পাইকারি বাজারে মিয়ানমার থেকে আমদানি করা আদা বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৫০-৬০ টাকায়।
আমদানি করা এসব আদা রাজধানীর খুচরা বাজারগুলোয় বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ১১০-১৫০ টাকায়। সে হিসাবে প্রতি কেজি আদার পাইকারি ও খুচরা মূল্যের ব্যবধান দাঁড়িয়েছে ৬০-৭০ টাকা। অর্থাৎ পাইকারি বাজারের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ দামে আদা বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারগুলোয়।
২০১৭ সালের একই সময়ে রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতি কেজি আমদানি করা আদা ৭০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। সে হিসাবে বছরের ব্যবধানেও খুচরা বাজারে আদার দাম কেজিতে সর্বোচ্চ ৪০ টাকা।
এ বিষয়ে রাজধানীর শ্যামবাজারের সুরমা বাণিজ্যালয়ের স্বত্বাধিকারী ঝুটন চন্দ্র সাহা বলেন, কোরবানি ঈদের সময় বাড়তি চাহিদার কারণে পাইকারি বাজারে আদার দাম কিছুটা বেড়েছিল। তবে এর পর থেকে পণ্যটির দাম তুলনামূলক স্থিতিশীল রয়েছে। পাইকারি বাজার থেকে কম দামে কিনে বাড়তি মুনাফার আশায় খুচরা ব্যবসায়ীরা বেশি দামে আদা বিক্রি করছেন। এতে ক্রেতারা সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
পাইকারি ও খুচরা বাজারে আদার দামে বড় ধরনের পার্থক্য দূর করতে সরকারের পক্ষ থেকে তদারক জোরদার করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন তিনি। ঝুটন চন্দ্র সাহা বলেন, বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা না গেলে খুচরা পর্যায়ে আদার দাম কমিয়ে আনা সম্ভব হবে না।
প্রতি বছর অক্টোবর-নভেম্বরে দেশে উৎপাদিত আদা বাজারে আসতে শুরু করে। খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান— এ তিন পার্বত্য জেলায় সবচেয়ে বেশি আদা উৎপাদন হয়। তবে দেশে উৎপাদিত আদা দিয়ে অভ্যন্তরীণ চাহিদার পুরোটা পূরণ করা সম্ভব হয় না।
এ কারণে চাহিদার সিংহভাগ আদা আমদানি করা হয়। আগে চীন ও ভারত থেকে আদা আমদানি হতো। বর্তমানে এ তালিকায় মিয়ানমার ও ইন্দোনেশিয়ার নাম যুক্ত হয়েছে। নিজস্ব উৎপাদনের পাশাপাশি একাধিক দেশ থেকে আমদানি অব্যাহত থাকায় পাইকারি পর্যায়ে আদার দাম তুলনামূলক স্থিতিশীল রয়েছে বলে জানান দেশী আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীরা।