দ্বিগুণ ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ারের দাম

স্টাফ রিপোর্টার

হঠাৎ করেই শেয়ারবাজারে দাম বাড়ার ক্ষেত্রে বড় ধরনের দাপট দেখিয়েছে ওরিয়ন ইনফিউশন। এই কোম্পানিটির শেয়ার এক শ্রেণির বিনিয়োগকারীদের কাছে পছন্দের শীর্ষে উঠে এসেছে। এতে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে।

আগের সপ্তাহের মতো গত সপ্তাহেও দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখিয়েছে ওরিয়ন ইনফিউশন। কোম্পানিটির শেয়ার এক শ্রেণির বিনিয়োগকারীদের পছন্দের শীর্ষে থাকায় সপ্তাহজুড়েই দাম বেড়েছে। ফলে গত সপ্তাহে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দাম বাড়ার শীর্ষ স্থানটি দখল করেছে কোম্পানিটি। আগের সপ্তাহেও দাম বাড়ার শীর্ষ স্থানটি ছিল এই কোম্পানিটির দখলে।

গেলো সপ্তাহজুড়ে ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ার দাম বেড়েছে ৪১ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ। টাকার অঙ্কে বেড়েছে ৯০ টাকা ২০ পয়সা। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম দাঁড়িয়েছে ৩১০ টাকা ৩০ পয়সা, যা আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ২২০ টাকা।

গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহে কোম্পানিটির শেয়ার দাম বাড়ে ৫০ দশমিক ৮৯ শতাংশ বা ৭৪ টাকা ২০ পয়সা। অর্থাৎ দুই সপ্তাহের ব্যবধানে কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়ে দ্বিগুণের বেশি হয়ে গেছে। দুই সপ্তাহ আগে কোম্পানিটির শেয়ার দাম ছিল ১৪৫ টাকা ৮০ পয়সা।

কোম্পানিটির শেয়ারের এ দাম বৃদ্ধিকে অস্বাভাবিক বলছে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ। এজন্য বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করে প্রতিষ্ঠানটি বার্তাও প্রকাশ করেছে। কিন্তু তারপরও কোম্পানিটির শেয়ার দাম বাড়ার প্রবণতা থামেনি।

গত ৪ আগস্ট ডিএসই থেকে বিনিয়োগকারীদের জানানো হয়, কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বাড়ার কারণ জানতে চেয়ে নোটিশ পাঠানো হয়। তার উত্তরে কোম্পানিটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সম্প্রতি কোম্পানিটির শেয়ারের যে অস্বাভাবিক দাম বেড়েছে এবং লেনদেন বেড়েছে তার পেছনে কোনো অপ্রকাশিত মূল্য সংবেদশীল তথ্য নেই।

ডিএসই থেকে যখন বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করে বার্তা প্রকাশ করা হয়, সে সময় কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ছিল ১২৫ টাকা ৫০ পয়সা। অর্থাৎ ডিএসই থেকে সতর্ক বার্তা প্রকাশের পর কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়েছে ১৮৪ টাকা ৮০ পয়সা।

শেয়ারের এমন দাম বাড়া কোম্পানিটি সর্বশেষ ২০২১ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত বছরের জন্য বিনিয়োগকারীদের ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। এর আগে ২০২০ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত বছরেও কোম্পানিটি ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়। এর আগে ২০১৯ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত বছরে বিনিয়োগকারীদের ১৪ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয় কোম্পানিটি।

সর্বশেষ প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, কোম্পানিটি ২০২১ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত নয় মাসের ব্যবসায় শেয়ারপ্রতি এক টাকা ১২ পয়সা মুনাফা করেছে। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয় ২৬ পয়সা।

এদিকে দাম বাড়ায় বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ তাদের কাছে থাকা কোম্পানিটির শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন। ফলে সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৫০ কোটি ৪৪ লাখ ৮৭ হাজার টাকা। আর প্রতি কার্যদিবসে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৩০ কোটি ৮ লাখ ৯৭ হাজার টাকা।

২০ কোটি ৩৬ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধনের এই কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা দুই কোটি তিন লাখ ৫৯ হাজার ৭৬০টি। এর মধ্যে ৪০ দশমিক ৬১ শতাংশ শেয়ার আছে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের হাতে। বাকি শেয়ারের মধ্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে আছে ৩৯ দশমিক ৮২ শতাংশ। আর ১৯ দশমিক ২৮ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী এবং দশমিক ২৯ শতাংশ আছে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে।

গত সপ্তাহে দাম বাড়ার শীর্ষ তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইস্টার্ন হাউজিংয়ের শেয়ার দাম বেড়েছে ৩৮ দশমিক ৯০ শতাংশ। ২৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ দাম বাড়ার মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে অ্যাডভেন্ট ফার্মা।

এছাড়া দাম বাড়ার শীর্ষ দশে স্থান করে নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে বসুন্ধরা পেপারের ২৬ দশমিক ৩৫ শতাংশ, আমান কটনের ২০ দশমিক ৫১ শতাংশ, অ্যাপেক্স ফুডের ২০ দশমিক ৪৬ শতাংশ, ন্যাশনাল টি কোম্পানির ১৯ দশমিক ৬৪ শতাংশ, মেট্রো স্পিনিংয়ের ১৭ দশমিক ৫৩ শতাংশ, ন্যাশনাল পলিমারের ১৭ দশমিক ২৯ শতাংশ এবং মালেক স্পিনিংয়ের ১৬ দশমিক ৯৯ শতাংশ দাম বেড়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *