দৈনিক ৪ লাখ ব্যারেল উত্তোলন বাড়াতে পারে ভেনিজুয়েলা
ভেনিজুয়েলার অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন প্রতিদিন চার লাখ ব্যারেল পর্যন্ত বাড়তে পারে। দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত জ্বালানি সংস্থা পিডিভিএসের সঙ্গে অংশীদারত্ব বাণিজ্যের অনুরোধ যুক্তরাষ্ট্র দ্বারা অনুমোদিত হলে অতিরিক্ত পরিমাণ তেল উত্তোলন শুরু করবে ভেনিজুয়েলা। খবর রয়টার্স।
ভেনেজুয়েলার পেট্রোলিয়াম চেম্বারের প্রেসিডেন্ট রোনাল্ডো কুইন্টেরো বলেন, আনুষ্ঠানিক হিসেবে জানুয়ারিতে ভেনিজুয়েলার অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের উত্তোলন গড়ে প্রতিদিন ৭ লাখ ৫৫ হাজার ব্যারেল ছিল। এ প্রস্তাব বাস্তবায়ন হলে প্রতিদিন আরো ১২ লাখ ব্যারেল যুক্ত হবে এর সঙ্গে।
গত সপ্তাহে ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সঙ্গে বৈঠক করেছে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা। বৈঠকে ২০১৯ সাল থেকে দেশটির ওপর চলমান রফতানি নিষেধাজ্ঞা শিথিলের মাধ্যমে যেকোনো ধরনের চুক্তির আওতায় তেল সরবরাহ চায় যুক্তরাষ্ট্র। এক সংবাদ সম্মেলনে কুইন্টেরো জানান, ভেনিজুয়েলার বর্তমান তেল উত্তোলন সক্ষমতার আলোকে দেশটি প্রতিদিন আরো চার লাখ ব্যারেল পর্যন্ত তেল উত্তোলন করতে পারবে।
২০২১ সালে তেল উত্তোলন ও রফতানির লক্ষ্যমাত্রায় একটি পতনকে টেনে ধরে। উত্তোলন লক্ষ্যমাত্রা ৬ লাখ ৩৬ হাজার ব্যারেল অর্জনে এমন পদক্ষেপ নেয় দেশটি, যা এর আগের বছরের তুলনায় ১২ শতাংশ বেশি। রোনাল্ডো কুইন্টেরো বলেন, যদি কিছু নির্দিষ্ট লেনদেনের জন্য হলেও ভেনিজুয়েলার তেল রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হয় তবে দেশটি মাসে ১০ লাখ ব্যারেল তেল উত্তোলন বাড়াতে পারবে। এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করছে সংলাপে অংশ নেয়া দুই পক্ষের মূলধন বিনিয়োগ ও বিশ্বাসের ওপর।
বিশেষজ্ঞরা ভেনিজুয়েলার তেল উত্তোলন বৃদ্ধির ব্যাপারে অনেকটা কম আশাবাদী মনোভাব পোষণ করছেন। কারণ তেল উত্তোলন বাড়ানোর জন্য জরুরি ভিত্তিতে অয়েলরিগ খনন ও এর জন্য বড় অংকের মূলধন প্রয়োজন। আর এসব রিগ এরই মধ্যে সেগুলোর সর্বোচ্চ ক্ষমতা ব্যবহার করছে।
বেশ কয়েক বছরের বিনিয়োগবিহীন অবস্থা, অব্যবস্থাপনা ও সম্প্রতি পিডিভিএসের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কারণে ভেনেজুয়েলার তেল উত্তোলন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিছু তেল পরিষেবা ফার্ম আংশিক ঋণ গ্রহণের মাধ্যমে ইরানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। এর ফলে দেশটি প্রয়োজনীয় দ্রাবক সরবরাহের মাধ্যমে ভেনিজুয়েলাকে রফতানিযোগ্য ফ্লাগশিপ গ্রেড অনুযায়ী তেল উত্তোলন করতে সাহায্য করেছে। এর মাধ্যমে গত বছর পিডিভিএসএ উত্তোলন পুনরুদ্ধার করতে কিছুটা সক্ষম হয়েছে। যদিও এখনো দৈনিক ১০ লাখ ব্যারেলের মাসিক উত্তোলনসীমায় পৌঁছতে পারেনি ভেনিজুয়েলা।
যুক্তরাষ্ট্রের ভেনিজুয়েলার তেল আমদানির প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে মার্কিন জ্বালানি কোম্পানিগুলো লাভবান হবে। এসব কোম্পানি অনুমোদন এবং ব্যবসায় ও তেল বদলের লাইসেন্স নবায়নের জন্য ক্রমাগত চাপ প্রয়োগ করে আসছিল।