দুবাইয়ে জ্বালানি তেল বহির্ভূত অর্থনীতি পাঁচ মাসের সর্বোচ্চে
দুবাইয়ের জ্বালানি তেলবহির্ভূত বেসরকারি খাতের ব্যবসায়িক কার্যক্রম বেড়ে পাঁচ মাসের সর্বোচ্চে পৌঁছেছে। চাকরি ও উদ্ভাবন খাতেও এ সময় বেশ প্রবৃদ্ধি দেখা দিয়েছে। সেই সঙ্গে প্রবৃদ্ধি পৌঁছেছে রেকর্ড মাত্রায়। খবর দ্য ন্যাশনাল নিউজ।
গত মার্চে আমিরাতের মৌসুমী ভিত্তিতে অ্যাডজাস্ট করা এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল পারচেজিং ম্যানেজার ইনডেক্স বলছে, ফেব্রুয়ারিতে যেখানে সংখ্যাটা ছিল ৫৪ দশমিক ১, সেটা মার্চে এসে হয়েছে ৫৫ দশমিক ৫। এটি নিরপেক্ষ ৫০-এর মাত্রা থেকে সরে গেছে, যা দিয়ে সংকোচনের পরিবর্তে ব্যবসা বিস্তারকে বোঝানো হয়।
এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল মার্কেট ইন্টেলিজেন্সের সিনিয়র ইকনোমিস্ট ডেভিড ওয়েন বলেন, ‘বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সরবরাহ সক্ষমতা বাড়াতে আরো বেশি পদক্ষেপ নিচ্ছে।’ কার্যক্রম খাতে আরো বেশি দ্রুত বিস্তারের ইঙ্গিত দেখেই তারা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তিনি যোগ করেন, গত পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে তীব্রভাবে কর্মী বৃদ্ধি এবং বিভিন্ন উপকরণ ও উপাদানের বৃদ্ধি দেখা গেছে। এর ফলে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উৎপাদনও গত ছয় মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে। তাছাড়া গ্রাহকদের চাহিদায়ও গত মার্চজুড়ে অনেক বেশি অগ্রগতি দেখা গেছে।
দুবাইয়ে নতুন ব্যবসার প্রবাহ তীব্রভাবে বেড়েছে, সেই সঙ্গে বেড়েছে চাকরির পরিমাণ। ২০১৮ সালের পরে এবারই সবচেয়ে দ্রুতগতিতে বেড়েছে চাকরি দেয়ার সংখ্যা। নির্মাণ খাতগুলোয়ও চাকরি দেয়ার হার উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।
২০২২ সালের প্রথম নয় মাসে দুবাইয়ের অর্থনীতি বাৎসরিক হিসেবে ৪ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়েছে। সেখানকার মোট দেশজ উৎপাদনের ২৪ দশমিক ১ শতাংশই খুচড়া ও পাইকারি ব্যবসা, এমনটাই জানিয়েছে আমিরাতের স্ট্যাটিস্টিকস সেন্টার। আমিরাতের এনবিডির পরিসংখ্যান বলেছে, ২০২২ সালজুড়ে দুবাইয়ের প্রবৃদ্ধি ছিল পাঁচ শতাংশ ও তাদের প্রত্যাশা আমিরাতের জিডিপি ২০২৩ সালে ৩ দশমিক ৫ শতাংশ বাড়বে।
পর্যটন খাত মূলত আমিরাতের অর্থনীতির মূল ভিত্তি। নভেল করোনা ভাইরাসের কারণে তৈরি হওয়া মন্থরতার পর বেশ শক্তিশালীভাবে প্রত্যাবর্তন করে এ খাত। ২০২২ সালে দুবাইয়ের হোটেলগুলোর অর্থনীতি বেশ শক্তিশালী অবস্থানে ছিল, কেননা ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার পরে এ শহরে পর্যটকদের আনাগোনা বেশ বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে ঠাণ্ডা আবহাওয়া আর নতুন বছরের উদযাপনও বেশ ভূমিকা রাখে।
সহজলভ্য থাকা প্রতিটি রুম থেকেই আয় হওয়ার হার ২০১৯ সালের কভিড-১৯ সংক্রমণের আগের তুলনায় ৩১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৬৮৪ দিরহামে গিয়ে দাঁড়ায়। হসপিটালিটি ডাটা ও অ্যানালিটিকস স্পেশালিস্ট এসটিআরের তথ্য এমনটাই জানিয়েছে।
দুবাইয়ের ডিপার্টমেন্ট অব ইকোনমি অ্যান্ড ট্যুরিজমের সাম্প্রতিক তথ্যে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের প্রথম ১১ মাসে দুবাইয়ে রাত কাটানো আন্তর্জাতিক পর্যটকের সংখ্যা ১ কোটি ২৮ লাখ ২০ হাজার ছাড়িয়ে যায়। যেটা ২০১৯ সালের কভিড-১৯ মহামারীর আগের একই সময়ের তুলনায় ৮৫ শতাংশেরও বেশি।