দাম বাড়ছে বিদ্যুচ্চালিত গাড়ির
ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের ঘটনায় বিশ্ববাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। সংকট দেখা দিয়েছে বিভিন্ন পণ্যের। দাম বেড়ে গেছে নিকেল ও লিথিয়ামের মতো ধাতুর। এ অবস্থায় গাড়ির দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে টেসলা ও বিওয়াইডির মতো বিদ্যুচ্চালিত গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো। খবর নিক্কেই।
সম্প্রতি মার্কিন বিদ্যুচ্চালিত গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী ইলোন মাস্ক বলেন, টেসলা ও স্পেসএক্স কাঁচামাল ও পরিবহনের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য মূল্যস্ফীতির মুখোমুখি হয়েছে।
চলতি মাসের মাঝামাঝিতে সংস্থাটি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে সব মডেলের দাম ৪ থেকে ১০ শতাংশ বাড়িয়েছে। পরবর্তী সময়ে জাপানসহ অন্যান্য বাজারেও দাম বাড়িয়েছে সংস্থাটি।
বিশ্বের শীর্ষ বিদ্যুচ্চালিত গাড়ির ব্যাটারি নির্মাতা কনটেমপোরারি অ্যাম্পেরেক্স টেকনোলজি (সিএটিএল) ২০২১ সালের মাঝামাঝি থেকে দুবার দাম বাড়িয়েছে। চীনা গণমাধ্যম জানিয়েছে, ব্যাটারির দাম বাড়ার কারণে প্রতি গাড়ির দামে প্রায় ২০ হাজার ইয়েন যুক্ত করতে পারে।
প্রধান চীনা গাড়ি নির্মাতারা থাইল্যান্ডে বিদ্যুচ্চালিত গাড়ির দাম কমিয়েছে। জাপানি নির্মাতাদের আধিপত্যের বাজারে জায়গা করে নিতেই এমন উদ্যোগ নিয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলো। তবে ক্রমবর্ধমান ব্যাটারি ব্যয় এ কৌশল অবলম্বনকে কঠিন করে তুলছে। চীনের শীর্ষ গাড়ি নির্মাতা বিওয়াইডি ও এক্সপিং উভয়ই গাড়ির দাম বাড়িয়েছে।
জেনারেল মোটরসের অংশীদারত্ব জোট এসএআইসি-জিএম-উইলিং অটোমোবাইল কম দামের বিদ্যুচ্চালিত গাড়ি উৎপাদনের জন্য পরিচিত। তবে কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি মোকাবেলায় সংস্থাটিও ৪ হাজার থেকে ৮ হাজার পর্যন্ত দাম বৃদ্ধির আশ্রয় নিয়েছে। অংশীদারত্ব জোটটির হংগুয়াং মিনির দাম ছিল ২৮ হাজার ইয়েন। বর্তমানে মডেলটির দাম ১০ শতাংশ বেড়ে ৩২ হাজার ৮০০ ইয়েনে পৌঁছেছে।
ব্যাটারি বিদ্যুচ্চালিত গাড়ি উৎপাদন ব্যয়ের প্রায় এক-তৃতীয়াংশের জন্য দায়ী। ফলে ব্যাটারির উচ্চ দাম সরাসরি গাড়ির দাম বাড়িয়ে দেয়।
এদিকে ব্যাটারির দাম বৃদ্ধির পেছনে ইউক্রেন যুদ্ধকে দায়ী করা হচ্ছে। রাশিয়া প্রায় ১০ শতাংশ নিকেল উৎপাদন করে। পাশাপাশি দেশটি গাড়ির ব্যাটারির জন্য ব্যবহূত উচ্চ-বিশুদ্ধ নিকেলের ২০ শতাংশ সরবরাহকারী। যুদ্ধের কারণে সরবরাহ নিয়ে উদ্বেগ ধাতুটির দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। চলতি মাসের শুরুতে লন্ডন মেটাল এক্সচেঞ্জে নিকেলের তিন মাসের সরবরাহ চুক্তিতে টনপ্রতি দাম ৫৫ হাজার ইয়েনের রেকর্ড স্পর্শ করে। সম্প্রতি ধাতুটির দাম প্রতি টন ৩০ হাজার ডলার ছাড়িয়ে গেছে। এ দাম গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি। ট্রেডিং কোম্পানি হানওয়ার একটি সূত্র জানিয়েছে, এ দামে কেবল বিলাসবহুল গাড়িতেই ব্যাটারি রাখা সম্ভব হতে পারে।
যদিও এমন প্রভাব কেবল নিকেলেই সীমাবদ্ধ নয়। ব্যাটারির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান লিথিয়ামের দামও রেকর্ড পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে। এটি মূলত অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আমেরিকায় উৎপাদিত হয়।