তেল আমদানি বন্ধ করতে ভারতকে আমেরিকার চাপ
ভেনিজুয়েলা থেকে রফতানি হওয়া অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের অন্যতম ক্রেতা ভারত। দেশটির সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অচলাবস্থার মধ্যেও জ্বালানি তেল আমদানি অব্যাহত রেখেছে ভারতীয় আমদানিকারকরা।
এ পরিস্থিতিতে ভেনিজুয়েলা থেকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি বন্ধ করতে ভারতের ওপর চাপ প্রয়োগের কৌশল নিয়েছে মার্কিন প্রশাসন। এর মধ্য দিয়ে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে অস্থিতিশীল ভেনিজুয়েলার ওপর বাড়তি অর্থনৈতিক চাপ তৈরি করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। খবর অয়েলপ্রাইসডটকম ও রয়টার্স।
ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম রয়টার্সকে দেয়া এক সাক্ষাত্কারে ভেনিজুয়েলা-বিষয়ক মার্কিন দূত ও আইনজীবী এলিয়ট আব্রামস বলেন, আমরা ভেনিজুয়েলার জনগণের পক্ষে রয়েছি। এ কারণে কখনই দেশটির একগুঁয়ে শাসনযন্ত্রকে মেনে নিতে পারি না। আমরা আশা করছি, ভারতসহ মিত্রদেশগুলো ভেনিজুয়েলায় নিকোলাস মাদুরোকে সমর্থন করা থেকে বিরত থাকবে। মাদুরো সরকারের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য সম্পর্ক ছিন্ন করবে।
ভেনিজুয়েলা দীর্ঘদিন ধরে চরম অর্থনৈতিক সংকটে ভুগছে। স্থানীয় মুদ্রার মান পড়ে যাওয়া, নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, জ্বালানি খাতে অনিশ্চয়তা দেশটির অর্থনীতিকে ভঙ্গুর করে ফেলেছে। দেখা দিয়েছে রাজনৈতিক সংকট। প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর বিরুদ্ধে পথে নেমেছে ভেনিজুয়েলার সাধারণ মানুষ।
এর জের ধরে দেশটির ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির নেতা হুয়ান গুয়াইদো নিজেকে ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষনা দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো অল্প সময়ের মধ্যে গুয়াইদোকে ভেনিজুয়েলার বৈধ প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। তবে চীন ও রাশিয়া এখনো মাদুরোকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে।
আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েও বিক্ষোভ দমন করতে পারছেন না মাদুরো। গুয়াইদোও বিদেশ থেকে জরুরি ভিত্তিতে ত্রাণ এনে নিজের সুনাম কয়েক গুণ বাড়িয়েছেন। ভেনিজুয়েলার বিরুদ্ধে জারি করা হয়েছে নতুন মার্কিন নিষেধাজ্ঞা। এ কারণে ভেনিজুয়েলা থেকে অনেক দেশই অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি বন্ধ রেখেছে। এর মধ্যেও ব্যতিক্রম ছিল ভারত।
প্রতি বছর ভেনিজুয়েলা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি অপরিশোধিত জ্বালানি তেল রফতানি হয়। তালিকায় এর পরই রয়েছে ভারতের নাম। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে ব্রাজিল, কানাডা, ব্রিটেনসহ কয়েকটি দেশ ভেনিজুয়েলা থেকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি সাময়িক বন্ধ করে দিয়েছে। বড় ক্রেতাগুলোর মধ্যে শুধু ভারত দেশটি থেকে জ্বালানি পণ্যটির আমদানি অব্যাহত রেখেছিল।
মূলত এ কারণেই মার্কিন দূত ভারতের নাম উল্লেখ করে মাদুরো সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা সব পক্ষকে অবস্থান বদলের আহ্বান জানিয়েছেন। এমন একসময় তিনি এ আহ্বান জানালেন, যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের বিরুদ্ধে বিদ্যমান বাণিজ্যনীতি আরো কঠোর করার হুমকি দিয়ে রেখেছেন।