তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী ১৬টি জাহাজের মালিক

রাজধানীর মহাখালী বক্ষব্যাধি হাসপাতালের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী (হিসাবরক্ষক) লিয়াকত হোসেন জুয়েল ও তার স্ত্রী লাকি আক্তার চৌধুরীর নামে রয়েছে শত কোটি টাকার সম্পদ। মাত্র ১৫ বছরে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন তিনি।

শহরের ভাটি লক্ষ্মীপুরে ২৪ কাঠা জমিতে রয়েছে তার বাগান বাড়ি। শহরতলীর আদমপুর এলাকার বেরহমপুর মৌজায় ১৭ বিঘা জমি রয়েছে স্ত্রীর নামে। তার ছোট কার্গো জাহাজ রয়েছে ১৬টি, তবে এসব জাহাজ শ্বশুরবাড়ির আত্মীয়-স্বজনদের নামে। এছাড়া পারিবারিকভাবে ব্যবহারের জন্য রয়েছে আধুনিক মডেলের তিনটি প্রাইভেটকার।

লিয়াকত হোসেনের বাড়ি ফরিদপুরে। জেলা সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে রয়েছে তার বিপুল পরিমাণ সম্পদ। শহরের টেপাখোলার লক্ষ্মীপুর এলাকায় স্ত্রী লাকির নামে রয়েছে একটি আলিশান বাড়ি। টেপাখোলার ফরিদাবাদে ‘মাহি মাহাদ ভিলা’ নামে রয়েছে আরেকটি দৃষ্টিনন্দন বাড়ি।

এই বাড়িতে বসবাস করছেন জুয়েলের শ্বশুরবাড়ির লোকজন। শহরতলীর বায়তুল আমান এলাকায় পাঁচ কাঠার আবাসিক প্লট রয়েছে স্ত্রীর নামে। নর্থ-চ্যানেল গোলডাঙ্গীর চরে এল অ্যান্ড এমএম নামে রয়েছে তার একটি ইটভাটা। বড় বোন নাসরিন আক্তারের নামে সিঅ্যান্ডবি ঘাটের ওপারে নাজিরপুরে এঅ্যান্ডআর ব্রিকস নামে আরেকটি ইটভাটা রয়েছে। এছাড়া সিঅ্যান্ডবি ঘাটের বাজারে রয়েছে ১৭ শতাংশ জমিতে দোতলা ভবন।

এসব বিষয়ে  লিয়াকত হোসেন জুয়েলের ভাই বেলায়েত হোসেন বলেন, ৩১ জানুয়ারি ঢাকার দুদক অফিসে আমাদের পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়। সেখানে আমাদের পরিবার ও সম্পত্তির বিভিন্ন তথ্য দিয়েছি আমরা।

এ বিষয়ে ফরিদপুর জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিশনের (দুপ্রক) সাধারণ সম্পাদক হাসানউজ্জামান বলেন, সমাজে যারা অসৎপথে অর্থ উপার্জন করছে তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা দরকার। কারণ এই দুষ্টু চক্রকে আটক করতে না পারলে রাষ্ট্র ও সমাজ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। একজন হিসাবরক্ষক হয়ে লিয়াকত হোসেন জুয়েল এত সম্পদের মালিক কিভাবে হলেন সেটি বের করে আনা দুদকের কাজ।

২০০৩ সালে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে বক্ষব্যাধি হাসপাতালের হিসাব সহকারী পদে চাকরিতে যোগদান করেন লিয়াকত হোসেন। সে হিসাবে গত ১৫ বছর ধরে চাকরি করছেন তিনি। এই ১৫ বছরেই অঢেল সম্পদের মালিক হয়ে যান তিনি। বিষয়টি জেনে গত ৩১ জানুয়ারি সম্পদের হিসাবের বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *