তুরস্ক ও গ্রিসের কাছে যুদ্ধবিমান বিক্রি করছে যুক্তরাষ্ট্র

স্টাফ রিপোর্টার

দীর্ঘ সময় পর তুরস্কের কাছে ফাইটার জেট এফ-১৬ বিক্রির অনুমতি দিয়েছে মার্কিন সরকার। সামরিক জোট ন্যাটোতে সুইডেনের যোগদানে আঙ্কারা ‘‌গ্রিন  সিগন্যাল’ দেয়ার পর এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। চুক্তি অনুসারে, ২ হাজার ৩০০ কোটি ডলারের ৪০টি নতুন যুদ্ধবিমান পাবে তুরস্ক। পাশাপাশি তুরস্ককে ৭৯টি এফ-১৬ জেটের জন্য আধুনিকায়ন সরঞ্জামও দেয়া হবে। খবর রয়টার্স।

এদিকে তুরস্কের প্রতিবেশী গ্রিসের কাছেও ৮৬০ কোটি ডলারের ৪০টি এফ-৩৫ ফাইটার জেট বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যদিও ন্যাটোভুক্ত এ দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই বৈরী সম্পর্ক বিরাজ করছে। শীতল সম্পর্কের দুই প্রতিবেশীর কাছে আধুনিক যুদ্ধবিমান বিক্রির খবর অঞ্চলটির নিরাপত্তায় ঝুঁকি বাড়াতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

তুরস্ক প্রথম ফাইটার জেট কেনার জন্য আবেদন করে ২০২১ সালে। তবে সুইডেনের ন্যাটোতে যোগদানের বিষয়ে দেশটির অসম্মতির কারণে আবেদনে সাড়া দেয়নি যুক্তরাষ্ট্র। মূলত কুর্দি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সুইডেন সমর্থন দেয়ায় ন্যাটোতে তাদের অন্তর্ভুক্তিতে বিরোধিতা করে তুরস্ক। অবশেষে এক বছরেরও বেশি সময় পর ২৩ জানুয়ারি সুইডেনের ন্যাটো অন্তর্ভুক্তির অনুমোদন দেয় এরদোগান প্রশাসন।

চলতি সপ্তাহে তুর্কি সংসদ সদস্যরা সুইডেনের প্রস্তাব অনুমোদন করেন। এছাড়া তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানও চূড়ান্ত অনুমোদন দেন। এর পর পরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন অনতিবিলম্বে এফ-১৬ বিক্রির অনুমোদন দেয়ার আহ্বান জানান।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর কৃষ্ণ সাগর অঞ্চলে ন্যাটোর ‘‌রক্ষাকবচ’ হিসেবে তুরস্কের গুরুত্ব বেড়ে যায়। এদিকে সদস্যদেশগুলোর মধ্যে তুরস্ক সর্বশেষ অনুমোদন দিয়ে ফেললেও হাঙ্গেরি এখনো সুইডেনের অন্তর্ভুক্তির অনুমোদন দেয়নি। দেশটিও শিগগিরই অনুমোদন দেবে বলে আশা করছে সংশ্লিষ্টরা।

গত বছর ইউক্রেনের পাইলটরা পুরোপুরি প্রশিক্ষিত হওয়ার পর ডেনমার্ক ও নেদারল্যান্ডস থেকে দেশটিতে মার্কিন এফ-১৬ ফাইটার জেট সরবরাহের অনুমতি দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এবার সেই যুদ্ধবিমান যোগ হচ্ছে তুরস্কের অস্ত্রাগারে।

প্রসঙ্গত, তুরস্ক ও গ্রিস উভয়ই প্রতিরক্ষা জোট ন্যাটোর সদস্য। একত্র থাকা ও শত্রুপক্ষের হাত থেকে যেকোনো সদস্যদেশকে রক্ষা করার লক্ষ্যে জোটটি প্রতিষ্ঠিত হলেও দুই প্রতিবেশীর মধ্যে সম্পর্ক বৈরী। প্রায়ই বিবাদে জড়ায় তারা। পূর্ব ভূমধ্যসাগরের দ্বীপপুঞ্জকে কেন্দ্র করে প্রায়ই দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। তেল কিংবা গ্যাস নয়, দুই দেশের দ্বন্দ্বের মূলে রয়েছে সমুদ্রসীমা।

১৯৯৬ সালে ইমিয়ার একটি ছোট জনবসতিহীন দ্বীপ নিয়ে দুই পক্ষ বিবাদে জড়ায়। যদিও শেষ অবধি তা যুদ্ধ পর্যন্ত এগোয়নি। ২০২০ সালে আবারো একটি ভূখণ্ড নিয়ে মারাত্মক বিবাদ শুরু হয় দুই দেশের মধ্যে। এর পর থেকে নিজেদের সামরিক শক্তি বাড়াতে থাকে দুই দেশই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *