তুরস্ক-ইরাকের বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ রুট হতে যাচ্ছে ডেভেলপমেন্ট রোড
সড়ক প্রকল্পের মাধ্যমে পারস্য উপসাগরের সঙ্গে সংযোগের উদ্যোগ নিয়েছে তুরস্ক। ডেভেলপমেন্ট রোড নামের এ প্রকল্পের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো ইরাকের সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধি। এরই মধ্যে দেশটিতে রফতানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তুরস্কের বাণিজ্যমন্ত্রী ওমের বোলাত। তিনি জানান, কয়েক বছরের মধ্যে ইরাকে রপ্তানি ১ হাজার ৫০০ কোটি ও ২০৩০ সাল নাগাদ ২ হাজার কোটি ডলারে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে। খবর আনাদোলু এজেন্সি।
সাম্প্রতিক স্থানীয় নির্বাচনে জেতার পর আগামীকাল প্রথমবার ইরাক সফর যাচ্ছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। এ সময় বসরার আল-ফাও গ্র্যান্ড পোর্টে শুরু হওয়া প্রকল্পটি অন্যতম আলোচ্য বিষয় হিসেবে স্থান পাবে।
এ সফরে দুই দেশের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সম্পর্কের পাশাপাশি রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ও নিরাপত্তাসম্পর্কিত বিষয়গুলো প্রাধান্য পাবে।
ইরাক ও তুরস্কের মধ্যে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সম্পর্কের ওপর জোর দিয়ে মন্ত্রী জানান, গত এক দশকে ইরাকের রফতানি পণ্যে তুরস্কের হিস্যা ৫ শতাংশ বা তারও বেশি। গত বছরের হিসেবে ইরাক ছিল তুরস্কের তৃতীয় বৃহত্তম রফতানি গন্তব্য।
দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ২০২২ সালে ২ হাজার ৪২০ কোটি ডলার। পরের বছর কিছু কমে দাঁড়ায় প্রায় ২ হাজার কোটি ডলারে।
মন্ত্রী জানান, ২০২৩ সালে ইরাকে রফতানি ৭ দশমিক ২ শতাংশ কমে ১ হাজার ২৮০ কোটি ডলার হয়েছে। একই সময়ে ইরাক থেকে আমদানি ৩১ দশমিক ১ শতাংশ কমে ৭২০ কোটি ডলার।
তিনি বলেন, ‘বৈদেশিক বাণিজ্য ভারসাম্য তুরস্কের পক্ষে ছিল। কারণ গত বছর আমাদের বৈদেশিক বাণিজ্য উদ্বৃত্ত ছিল ৫৬০ কোটি ডলার।’
এদিকে চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) ২০২৩ সালের একই বছরের তুলনায় তুরস্কের রফতানি ২৪ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়ে ৩৪০ কোটি ডলার হয়েছে। অন্যদিকে, আমদানী ৪৬ দশমিক ২ শতাংশ কমে ৮৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার হয়েছে।
ডেভেপমেন্ট রোড শুধু ইরাকই নয়, এশিয়া ও ইউরোপের সঙ্গে তুরস্ককে নতুনভাবে যুক্ত করবে বলে জানান ওমের বোলাত। তিনি বলেন, ‘ডেভেলপমেন্ট রোড প্রজেক্টের লক্ষ্য হলো উপসাগরীয় দেশ ও ইউরোপের মধ্যে বাণিজ্য, শুল্ক, ভিসা ও পরিবহন প্রক্রিয়া আরো সহজ করা।’
প্রকল্পটি ২০২৫-২০২৯ সালের মধ্যে বাস্তবায়ন হবে। রেল ও সড়কপথ ২০৩০ সালে চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে। তুর্কি এ মন্ত্রী বলেন, ‘উন্নয়ন সড়ক প্রকল্পের জন্য, উচ্চ গতির পরিবহনে পণ্য ও যাত্রীর চলাচলের জন্য প্রায় ১ হাজার ১৭৬ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করা হবে, পাশাপাশি ১ হাজার ১৯০ কিলোমিটার হাইওয়ে নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পটি তুরস্কের রফতানি ও সরবরাহের ক্ষমতাকে ইরাকে ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত করবে বলে আশা করা হচ্ছে। কারণ সড়কের মাধ্যমে ইরাকের বিভিন্ন প্রদেশ, আল-আনবার শহর ও পারস্য উপসাগরে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।’
প্রকল্পটি মধ্যপ্রাচ্য ও উপসাগরীয় অঞ্চলের পাশাপাশি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশে রফতানি সম্প্রসারণ করবে বলেও আশা করা হচ্ছে।
বর্তমানে ইব্রাহিম খলিল সীমান্ত ক্রসিংয়ের মাধ্যমে তুরস্ক ও ইরাকের বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে ওভাকয় সীমান্তে নতুন ক্রসিং তৈরির পরিকল্পনা চলছে।
মন্ত্রী ওমের বোলাত বলেন, ‘যোগাযোগ সম্প্রসারণের মাধ্যমে বাণিজ্যে নতুন দিগন্ত উন্মোচনের পাশাপাশি যৌথ কার্যক্রমের মাধ্যমে এ অঞ্চলের নিরাপত্তা উদ্বেগ দূর হবে।’