তিন কোটি ১৭ লাখ দরিদ্র দেশে, অতিদরিদ্র ৯৫ লাখ

স্টাফ রিপোর্টার

বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯৮ লাখ ২৮ হাজার ৯১১ জন। এরমধ্যে দেশে এখন দারিদ্র্যের হার ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ। সেই হিসাবে দেশে তিন কোটি ১৭ লাখ ৫৮ হাজার ছয়জন দরিদ্র। আর অতিদারিদ্র্যের হার ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। সেই হিসেবে হতদরিদ্রের সংখ্যা ৯৫ লাখ ১০ হাজার ৪১৯ জন।

এসব তথ্য জানিয়েছে দারিদ্র্যের হার নির্ধারণে কাজ করা সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। এর আগে ২০১৬ সালের বিবিএসের পরিসংখ্যানে দেশে ২৪ দশমিক ৩ শতাংশ দরিদ্র জনগোষ্ঠী ছিল বলে জানানো হয়েছিল। আর ওই বছর দেশে হতদরিদ্র জনগোষ্ঠী ছিল ১২ দশমিক ৯ শতাংশ।

বুধবার (১২ এপ্রিল ২০২৩) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিসংখ্যান ভবনে ‘খানার আয়-ব্যয় জরিপ ২০২২’-এর ফলাফল প্রকাশ করে বিবিএস। এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম. এ. মান্নান।

বিবিএসের জরিপের প্রতিবেদনে বলা হয়, পল্লী অঞ্চলে ২০ দশমিক ৫ শতাংশ এবং শহরে ১৪ দশমিক ৭ শতাংশ দরিদ্র রয়েছে।

সারাদেশের ৭২০টি নমুনা এলাকায় পরিচালিত হয় এই জরিপ। প্রতিটি নমুনা এলাকা থেকে দৈবচয়নের ভিত্তিতে ২০টি করে মোট ১৪ হাজার ৪০০ খানা থেকে সংগ্রহ করা হয় তথ্য। জরিপের প্রশ্নপত্রে মোট ১০টি সেকশন ছিল। এই ১০টি সেকশনের তথ্য সংগ্রহের জন্য একজন তথ্য সংগ্রহকারী প্রতিটি খানায় ১০ বার ভিজিট করেন।

জরিপের ফলাফলে ২০১৬ সালের পর এ সম্পর্কিত কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি বিবিএস। সংস্থাটি তখন ‘হাউজহোল্ড ইনকাম অ্যান্ড এক্সপেন্ডিচার সার্ভে (এইচআইইএস) ২০১৬’ প্রকাশ করেছিল।

বিবিএসের জরিপটি ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়। যা শেষ হয় একই বছরের ৩১ ডিসেম্বর। অর্থাৎ এক বছর ধরে সংগ্রহ করা হয়েছে তথ্য।

বিবিএসের ২০২২-এর জরিপ থেকে জানা যায়, ২০১০ সালে প্রতি পরিবারের খরচ ছিল মাত্র ১১ হাজার ২০০ টাকা। একই সময়ে আয় ছিল ১১ হাজার ২০০ টাকা। ফলে আয় যেমন বেড়েছে পাশাপাশি খরচও বেড়েছে দ্বিগুণ হারে।

২০২২ সালের জরিপে দেখা যায়, এসময় আয়ের জন্য গিনি সহগের মান শূন্য দশমিক ৪৯৯ শতাংশ, যা ২০১৬ সালে ছিল শূন্য দশমিক ৪৮২ এবং ২০১০ সালে ছিল শূন্য দশমিক ৪৫৮ শতাংশ। এতে দেখা যায় বৈষম্য বেড়েছে।

অন্যদিকে ২০২২ সালে ভোগব্যয়ের জন্য গিনি সহগের মান ছিল শূন্য দশমিক ৩৩৪ শতাংশ, যা ২০১৬ সালে শূন্য দশমিক ৩২৪ এবং ২০১০ সালে ছিল শূন্য দশমিক ৩২১ শতাংশ।

এছাড়া দেশে ক্যালরি গ্রহণে লক্ষণীয় অগ্রগতি হয়েছে বলে জানানো হয় বিবিএসের প্রতিবেদনে। এতে দেখা যায়, বর্তমানে জনপ্রতি ক্যালরি নেওয়ার পরিমাণ দৈনিক দুই হাজার ৩৯৩ কিলো ক্যালরি, যা ২০১৬ সালে ছিল দুই হাজার ২১০ দশমিক ৪ কিলো ক্যালরি এবং ২০১০ সালে ছিল ২ হাজার ৩১৮ দশমিক ৩ কিলো ক্যালরি।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন। আর সভাপতিত্ব করেন বিবিএসের মহাপরিচালক মো. মতিয়ার রহমান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রকল্প পরিচালক মহিউদ্দিন আহমেদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *