তিন কার্যদিবস পর শেয়ারবাজারে বাড়লো সূচক

স্টাফ রিপোর্টার

টানা তিন কার্যদিবস ঢালাও দরপতন হওয়ার পর বুধবার (৩১ আগস্ট) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মূল্য সূচক কিছুটা বেড়েছে। সেই সঙ্গে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান। পাশাপাশি বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ।

তবে অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) দরপতনের ধারা অব্যাহত রয়েছে। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমায় এ বাজারটিতে কমেছে মূল্য সূচক। তবে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ।

শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে দেশে সহিংস পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে টানা তিন কার্যদিবস শেয়ারবাজারে লেনদেন বন্ধ থাকে। পরিস্থিতির উন্নতি হলে গত সপ্তাহের বুধবার থেকে আবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয়। তবে আতঙ্কে মাত্রাতিরিক্ত বিক্রির চাপে বুধবার শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হয়। সেই সঙ্গে লেনদেন কমে দুইশ কোটি টাকার নিচে নেমে যায়।

অবশ্য পরের কার্যদিবস বৃহস্পতিবার ঘুরে দাঁড়ায় শেয়ারবাজার। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার পাশাপাশি মূল্য সূচকের বড় উত্থান হয়। সেই সঙ্গে বাড়ে লেনদেনের গতি। তবে চলতি সপ্তাহের প্রথম তিন কার্যদিবস শেয়ারবাজারে ঢালাও দরপতন হয়। ফলে মূল্য সূচকের বড় পতন দেখতে হয় বিনিয়োগকারীদের।

এ পরিস্থিতিতে বুধবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। এতে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান সূচক ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠে। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ায় লেনদেনের এক পর্যায়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ৫০ পয়েন্ট বেড়ে যায়।

কিন্তু লেনদেনের প্রথম ২০ মিনিট পার হতেই বিক্রির চাপ বাড়ায় এক শ্রেণির বিনিয়োগকারীরা। ফলে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় চলে আসে। এতে মূল্য সূচকও ঋণাত্মক হয়ে পড়ে। তবে লেনদেনের শেষদিকে বিক্রির চাপ কিছুটা কমলে কিছু প্রতিষ্ঠানের দাম বাড়ে। এতে দাম বাড়ার তালিকা বড় হয় এবং সূচক বেড়ে দিনের লেনদেন শেষ হয়।

দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১৭১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ১৬৩টি প্রতিষ্ঠানের। আর ৬৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

এতে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স ১০ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ২৮০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১৫৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৪ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৮৮৬ পয়েন্টে উঠে এসেছে।

সূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪৭০ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৪৩২ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ৩৭ কোটি ৮৯ লাখ টাকা।

এই লেনদেনে সব থেকে বেশি অবদান রেখেছে টেকনো ড্রাগসের শেয়ার। কোম্পানিটির ২৩ কোটি ৫১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের ২১ কোটি ৮৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১৮ কোটি ২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে লাভেলো আইসক্রিম।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, অগ্নি সিস্টেম, এনআরবি ব্যাংক, ওরিয়ন ইনফিউশন, প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স এবং স্যালভো কেমিক্যাল।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্য সূচক সিএএসপিআই কমেছে ৪৮ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন অংশ নেওয়া ১৯৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬০টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১২৩টির এবং ১৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৩ কোটি ৬২ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৯ কোটি ৫৭ লাখ টাকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *