তিনটি প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের ৫১৫ মিলিয়ন ডলার অর্থ অনুমোদন

বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা ও সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ আহরণের উন্নয়ন, বন ব্যবস্থাপনা এবং গ্রামীণ সড়ক উন্নয়ন এই তিনটি প্রকল্পে বিশ্বব্যাংক ৫১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থ অনুমোদন করেছে। যা টাকায় মূল্যে ৪ হাজার কোটি টাকারও ওপরে। শনিবার বিশ্বব্যাংকের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিবৃতিতে বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ কার্যালয়ের কান্ট্রি ডিরেক্টর চিমিয়াও ফান বলেন, এই তিন প্রকল্প পল্লী এলাকার লোকজন বিশেষ করে দারিদ্রের ঝুঁকিতে থাকা লোকজনের দারিদ্র বিমোচন করবে। পাশাপাশি এ অর্থায়ন দেশের জলবায়ু পরিবর্তনে সহনশীলতা বাড়াবে।

আরও বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাংকের এ অর্থায়ন বাংলাদেশের পল্লী অঞ্চলে দারিদ্র বিমোচনে ভূমিকা রাখবে। এর ফলে জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের সুযোগ বাড়বে। তাছাড়া মিয়ানমার থেকে সংঘাতে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি তাদের আশ্রয় নেয়া এলাকার স্থানীয় লোকজনের উন্নয়নেও বিশ্বব্যাংকের এ অর্থায়ন কাজে লাগবে বলে দাবি করা হয়েছে।

এসময় জানানো হয়, সাড়ে ৫১ কোটি ডলারের মধ্যে বিশ্বব্যাংক ১৭ কোটি ৫০ লাখ ডলার টেকসই বনায়ন ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন প্রকল্পে। এ প্রকল্পের আওতায় বনায়ন বৃদ্ধির পাশাপাশি বন ব্যবস্থাপনার উন্নতি করা হবে। প্রকল্পের আওতায় ৭৯ হাজার হেক্টর জমিতে গাছের চারা রোপন করা হবে। বনায়নে উপকূলীয় অঞ্চলকে প্রাধান্য দেয়া হবে।

এ বিষয়ে প্রকল্পটির টিম লিডার বিশ্বব্যাংকের প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিশেষজ্ঞ মাধাবি পিল্লাই বলেন, প্রকল্পের আওতায় উপকূল ও পাহাড়ি এলাকায় বনের ওপর নির্ভরশীল ৪০ হাজার পরিবারে বিকল্প আয়ের ব্যবস্থা করা হবে। ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় নেয়া কক্সবাজার এলাকায় প্রকল্পটি বিশেষ গুরুত্ব পাবে। স্থানীয় জনসাধারণের সহায়তায় ১০ সংরক্ষিত বনের সুরক্ষায় প্রকল্পে বিশেষ উদ্যোগ থাকবে।

টেকসই উপকূলীয় ও সামুদ্রিক মৎস্য উন্নয়ন প্রকল্পে ২৪ কোটি ডলার দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। প্রকল্পের আওতায় মৎস্য ব্যবস্থাপনার দক্ষতা বাড়ানো হবে। উপকূলীয় ১০ জেলায় প্রকল্পের আওতায় মৎস্যজীবীদের বিকল্প আয়ের ব্যবস্থা করা হবে। তাছাড়া নারী শ্রমিকদের দক্ষতা বাড়নো, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিষয়ে সচেতনতা বাড়নো হবে।

প্রকল্প নিয়ে বিশ্বব্যাংক সিনিয়র পরিবেশ বিশেষজ্ঞ এবং টাস্ক টিম নেতা মিলন ডাউলজিরভ বলেন, বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তায় মৎস্য খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এ খাতে প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান আছে। তৈরি পোশাকের পর মৎস্য খাত দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রফতানি আয়ের উৎস। বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় নেয়া প্রকল্পের আওতায় মাছ শিকারীদের পরিচয়পত্র দেয়া হবে। তা ছাড়া প্রকল্পের আওতায় মাছ শিকারী জাহাজ লাইসেন্সের আওতায় আনা হবে।

চলমান গ্রামীণ পরিবহণ উন্নয়ন কর্মসূচির দ্বিতীয় পর্যায় বাস্তবায়নে অবশিষ্ট ১০ কোটি ডলার বাড়তি অর্থায়ন করছে বিশ্বব্যাংক। গত বছরের প্রবল বন্যায় নষ্ট হয়ে যাওয়া ২৬ জেলার সড়ক সংস্কারে এ অর্থ ব্যয় করা হবে। চলমান প্রকল্পের আওতায় ইতোমধ্যেই ৫ হাজার কিলোমিটার সড়ক সংস্কার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। এর ফলে বাজার, হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছে কয়েক লাখ মানুষ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *