তরমুজের কেজি ৮০ টাকা

স্টাফ রিপোর্টার

ইফতারে জনপ্রিয় রসালো ফল তরমুজ। খুচরা বাজারে এই ফলের দাম এখন প্রতিকেজি ৮০ টাকা। যা অন্যান্য বছরে এ সময়ে ৫০-৫৫ টাকার মধ্যে পাওয়া যেত। আর ভরা মৌসুমে দাম ৪০ টাকার মধ্যে থাকে। অর্থাৎ, এখন রোজার কারণে তরমুজের দাম অস্বাভাবিক।

তারপরও বাজারে যে তরমুজ মিলছে, তার বেশিরভাগ পরিপক্ব নয়। কাটার পর ভেতরে লাল রং ধারণ করলেও এখনো মিষ্টতা আসেনি পুরোপুরি। ফলে এসব অপরিপক্ব তরমুজ চড়া দামে কিনে প্রতারিত হচ্ছেন ক্রেতারা।

খুচরা বিক্রেতাদের দাবি, এখন মোকামে তরমুজের সরবরাহ কম, দাম বেশি। বরিশাল অঞ্চল— পটুয়াখালী, বরগুনা, ভোলা ও ঝালকাঠিতে এবার প্রচুর তরমুজ হয়েছে। খুলনার কয়রাসহ দক্ষিণাঞ্চলেও তরমুজের ভালো ফলন হচ্ছে। তবে এখনো মৌসুম পুরোপুরি শুরু না হওয়ায়, সব এলাকার তরমুজ আসছে না।

রামপুরার খুচরা বিক্রেতা আমিনুল হোসেন বলেন, গত বছর এসময় ১০০ তরমুজ ১২-১৩ হাজার টাকা করে আড়ত থেকে কেনা গেছে। আর এবার দ্বিগুণ দাম। তারপরও রোজার আগের দিন পাওয়া যায়নি। সে কারণে অস্বাভাবিক দামে কেনাবেচা হচ্ছে।

তিনি জানান, রোজার আগে প্রতি ১০ তরমুজ কিনতে হয়েছে ২০-২৫ হাজার টাকায়। যা তিন চারদিনের ব্যবধানে ৫-৬ হাজার টাকা বেড়েছে। তাই খুচরায় ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন। এক দুই সপ্তাহ আগেও তিনি ৬০ টাকায় তরমুজ বিক্রি করেছেন।

এনামুল হক নামের একজন ফল ব্যবসায়ী বলেন, দামের কারণে দোকানে তরমুজ তুলতে পারছি না। আড়তে তরমুজের এক দাম। কোনো নড়চড় নেই।

এদিকে কারওয়ান বাজারে ‘যশোর ফল ঘরে’র স্বত্বাধিকারী ফরিদ উদ্দিন বলেন, এখনো তরমুজের মৌসুম আসেনি। রোজার কারণে চাষিরা আগেভাগে তরমুজ তুলে ফেলছে। যে কারণে সরবরাহ খুব একটা নেই। দাম বেশি।

তিনি বলেন, এখন বাজারে যে তরমুজগুলো দেখা যাচ্ছে, তা আকারে ছোট, তিন কেজির মধ্যে বেশি। বড় তরমুজ নেই বললেই চলে। এসব তরমুজের বেশির ভাগই অপরিপক্ব।

কৃষি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাধারণত ডিসেম্বর মাসে তরমুজের আবাদ শুরু হয়। ফল উঠে এপ্রিলে। এরপর মে মাসজুড়ে মাঠে তরমুজ থাকে। এটি ভরা মৌসুম। পরিপক্ব তরমুজ উঠতে উঠতে চৈত্র মাস বা এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ হয়।

পাইকারি ফল বিক্রেতা ফরিদ উদ্দিন আরও বলেন, পবিত্র রমজান মাস শুরু হয়েছে। তাই আগেই তরমুজ বাজারে এসেছে। কারণ রোজাদাররা টাকা বেশি দিয়ে হলেও একটু ফল মুখে দিতে চান। ইফতারে নতুন নতুন ফল রাখতে চান। সঙ্গে আবার গরমও পড়তে শুরু করেছে। সব মিলে তরমুজের বাম্পার চাহিদা।

তিনি বলেন, সে তুলনায় সরবরাহ নেই। এখন শুধু যারা আগে আবাদ করেছিলেন, তারা আগে তরমুজ তুলতে পারছেন। আবার বাড়তি লাভের আশায় অনেকে অপরিপক্ব বিক্রি করে দিচ্ছেন। আসলে কয়েক দিন পর যেসব তরমুজ আসবে, সেগুলো পরিপক্ব হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *