ডাকের ডিজি, নগদের সাবেক চেয়ারম্যান-এমডিসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা
৬৪৫ কোটি টাকার অবৈধ ইলেকট্রনিক অর্থ (ই-মানি) সৃষ্টি করে লেনদেন করার অভিযোগে ডাক অধিদপ্তরের বর্তমান ও সাবেক আট মহাপরিচালক (ডিজি), নগদের সাবেক চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ (এমডি) ২৪ জনকে আসামি করে মামলা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) মতিঝিল থানায় এ মামলা করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেমস বিভাগের যুগ্ম পরিচালক সরকার মোহাম্মদ আমির খসরু।
মামলার আসামিদের মধ্যে আছেন নগদের সাবেক চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল, সাবেক এমডি তানভীর এ মিশুক, বিদেশি পরিচালক গিলস অলস্টেয়ার জেমস ফার্লে, পরিচালক শাফায়েত আলম, মারুফুল ইসলাম ঝলক, আমিনুল হক, নিয়াজ মোর্শেদ এলিট, ফয়সাল আহসান চৌধুরী, এম তামজিদ রহমান, সৈয়দ আরশাদ রেজা, মিজানুর রহমান, রাহেল আহমেদ ও রেজাউল হোসেন। এ ছাড়া নগদের কর্মকর্তা রাকিবুল ইসলাম, আবু রায়হান ও আশীস চক্রবর্তীকেও আসামি করা হয়েছে।
ডাক অধিদপ্তরের বর্তমান ডিজি এস এম শাহাব উদ্দীন, সাবেক ডিজি সুশান্ত কুমার মন্ডল, সুধাংশু শেখর ভদ্র, বাহিজা আক্তার, সিরাজ উদ্দিন, ফয়জুল আজিম, হারুনুর রশীদ ও তরুন কান্তি সিকদারকে আসামি করা হয়েছে।
মামলায় উল্লেখ করে বলা হয়, ১৬ জন আসামি আটজন আসামির সহায়তায় ভার্চুয়াল মুদ্রা এবং ডকুমেন্টস জালিয়াতি করে নগদের গ্রাহকের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে।
মামলার বর্তমান প্রশাসককে উদ্বৃত করে বলা হয়, ৬৪৫ কোটি ৪৭ টাকা অতিরিক্ত ই-মানি করে অতিরিক্ত দায় সৃষ্টি করেছে। ই-মানি ইস্যু করার ক্ষমতা রাষ্ট্রের পক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংকের। কিন্তু আসামিরা এই ই-মানি ইস্যু করে রাষ্ট্রের সার্বভৌম ক্ষমতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। দেশের অর্থনীতিকে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। অনাকাঙ্ক্ষিত মূল্যস্ফীতি তৈরি করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি সূত্র জানায়, ‘নগদে’ বড় ধরনের জালিয়াতির অভিযোগ পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক গঠিত নগদ পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা কমিটি। ভুয়া পরিবেশক ও এজেন্ট দেখিয়ে প্রতিষ্ঠানটিতে আর্থিক জালিয়াতি ও অতিরিক্ত ই-মানি তৈরি করা হয়েছে। এসব কারণে দুই হাজার ৩৫৬ কোটি টাকার হিসাব মিলছে না। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংক নগদ পরিচালনায় প্রশাসক ও ব্যবস্থাপনা কমিটি বসিয়েছে।
নগদের প্রশাসক মুহম্মদ বদিউজ্জামান দিদার গত ৫ ডিসেম্বর ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত ও চুক্তিবদ্ধ পক্ষ হিসেবে ডাক বিভাগ এসব অনিয়ম/চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন/ক্ষতিপূরণের জন্য আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার অধিকার সংরক্ষণ করে বলে প্রশাসক দল মনে করে। প্রশাসকের আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই।
দুই মাস পার হলেও এ নিয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি ডাক অধিদপ্তর। এরই মধ্যে ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এস এম শাহাব উদ্দীন, নগদের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুকসহ ২৪ জনকে আসামি করে মামলা করল বাংলাদেশ ব্যাংক।
মতিঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবাহ উদ্দিন বলেন, মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল ব্যাংকিং নগদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংক বাদী হয়ে মামলা করেছে। মামলায় টাকা আত্মসাৎ ও জাল-জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।