ডলারের দাম কমল ৬ টাকা

স্টাফ রিপোর্টার

ডলারের দাম আরো বাড়বে, কিনে রাখলেই লাভ—এমন প্রচারণায় প্রলুব্ধ হয়ে খোলাবাজার থেকে অনেকেই ডলার কিনেছেন। কিন্তু এখন ডলারের দাম কমতে শুরু করেছে। ১০৪ টাকায় উঠে যাওয়া ডলারের দাম কার্ব মার্কেট বা খোলাবাজারে তিন দিনের ব্যবধানে কমেছে ছয় টাকা।

তবে আন্ত ব্যাংক মুদ্রাবাজার ও ব্যাংকগুলো বুধবারের দরেই ডলার বিক্রি করেছে।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, মঙ্গলবার হঠাৎ করেই বিশ্বের শক্তিধর এই মুদ্রার দাম ১০০ টাকা ছাড়িয়ে ১০৪ টাকায় উঠে যায়। বুধবার তা কমে ১০০ থেকে ১০২ টাকায় নেমে আসে। বৃহস্পতিবার তা আরো কমে ৯৬ টাকায় নেমে এসেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, আরো কমবে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশান-২, মতিঝিল, পল্টন ও বায়তুল মোকাররম এলাকার মানি এক্সচেঞ্জগুলোতে খুচরা ডলার ৯৭ থেকে ৯৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে, যা দুই দিন আগেও ১০২ টাকায় বিক্রি হয়।

গুলশানের মেট্রো মানি এক্সচেঞ্জের স্বত্বাধিকারী শাহজাহান মিয়া বলেন, ডলার বিক্রি করছি ৯৭ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ৯৮ টাকায়। তবে আজ ডলার কিনিনি। গত দুই দিনের চেয়ে আজকের বাজার নিম্নমুখী। অনেকে লাভের আশায় গত কয়েক দিনে অনেক ডলার কিনে এখন লোকসানে পড়েছেন।

ডলারের দাম বৃদ্ধি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম বলেছেন, আমদানি চাপের কারণে চাহিদা বাড়ায় ডলারের দাম বেড়েছে।

আন্ত ব্যাংক মুদ্রাবাজারে সোমবার এক ডলারের জন্য ৮৭ টাকা ৫০ পয়সা খরচ করতে হয়। বৃহস্পতিবারও এই একই দামে ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে খোলাবাজারে এখনো বাংলাদেশ ব্যাংকের বেঁধে দেওয়া দামের তুলনায় বেশি দামে ডলার কেনাবেচা চলছে।

নির্ধারিত বিনিময়হারের চেয়ে বেশি দরে ডলার কেনাবেচার অভিযোগের মধ্যে সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক পরিদর্শন শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের চারটি দল। গতকাল সকাল থেকে তারা কয়েকটি ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে। দুপুর থেকে শুরু করে ট্রেজারি ও ফরেন এক্সচেঞ্জ বিভাগের নথি ও ডলার সংগ্রহের অনলাইন ও নগদে বেচাকেনার তথ্য যাচাইয়ের কাজ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে ডলারের বিনিময়হার নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় বিষয়টি সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখবে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ জন্য চারটি টিম নেমেছে।

মহামারির পর ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে অর্থনৈতিক জটিলতার মধ্যে পড়েছে বিশ্বের অনেক দেশ। নিত্যপণ্য ও জ্বালানির দাম বাড়ার পাশাপাশি ডলারের বিনিময় হারে দেখা দিয়েছে অস্থিরতা। ডলার বাঁচাতে বিলাসপণ্য আমদানিতে লাগাম টানার পাশাপাশি কৃছ্রের পথে হাঁটছে সরকার। এর অংশ হিসেবে সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশভ্রমণ সীমিত করাসহ আরো কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *