টেসলাকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিচ্ছে চায়নিজ ইভি কোম্পানি
চলতি বছরে নতুন কোনো মডেলের বৈদ্যুতিক গাড়ি (ইভি) উন্মোচন করছে না টেসলা। চলমান সরবরাহ সংকট মোকাবেলা করে পুরনো মডেলের গাড়ি বিক্রি চালিয়ে যাবে ইলোন মাস্ক প্রতিষ্ঠিত কোম্পানিটি। খবর সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।
সরবরাহ চেইন সংকটে গ্রাহকের কাছে ইভি পৌঁছে দিতে হিমশিম খাচ্ছে টেসলা। তার সঙ্গে ওমিক্রনের ধাক্কায় চাহিদা কমে গেছে জনপ্রিয় ইভি নির্মাতা ব্র্যান্ডটির। গত ২৭ জানুয়ারি টেসলার শীর্ষ নির্বাহী ইলোন মাস্ক গ্রাহক ও বিনিয়োগকারীদের অবাক করে দিয়ে জানান, একদিনের ব্যবধানেই ১০ হাজার কোটি ডলার বাজারমূল্য হারিয়েছে কোম্পানিটি।
টেসলা যখন নতুন ব্র্যান্ডের ইভি উন্মোচন না করার ঘোষণা দিয়েছে তখন চীনভিত্তিক ইভি স্টার্টআপগুলো এগিয়ে এসেছে। নিয়ু জানায়, ২০২২ সালে তারা তিনটি মডেলের ইভি উন্মোচন করতে যাচ্ছে। এদিকে এক্সপেং ও লি অটো বলছে, তারা নতুন মডেলের স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিকল (এসইউভি) বিক্রির পরিকল্পনা করছে। নতুন মডেলের গাড়ি উন্মোচনের পাশাপাশি তা বিক্রিতে বড় অংকের অর্থ বিনিয়োগ করতে হবে চীনা কোম্পানিগুলোকে। কারণ ইভি সেগমেন্টে এত দিন একক আধিপত্য ছিল টেসলার। বিশ্বের বৃহত্তম গাড়ি বাজারটি লক্ষ্য করে সেখানে কারখানা স্থাপন করেছে ইলোন মাস্ক নেতৃত্বাধীন কোম্পানিটি।
চীনের স্থানীয় কোম্পানিগুলো যে চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত সাম্প্রতিক প্রান্তিকগুলোতে তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। ২০২১ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে ৮৩ কোটি ৫০ লাখ ইউয়ান বা ১৩ কোটি ১০ লাখ ডলার লোকসান গুনেছে নিয়ু। এক্সপেং ও লির লোকসান হয়েছে যথাক্রমে ১৬০ কোটি ইউয়ান ও ২ কোটি ১৫ লাখ ইউয়ান। অথচ একই প্রান্তিকে টেসলার নিট মুনাফা চার গুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬২ কোটি ডলার।
গবেষণা সংস্থা ইউবিএসের গাড়ি খাত বিশ্লেষক পল গং বলেন, স্থানীয় বাজারে লাভজনক হওয়ার চেয়ে বাজার হিস্যা বাড়ানোর চেষ্টা করছে চীনা কোম্পানিগুলো। মূলধন বাজার থেকে তহবিল সংগ্রহের কারণে তাদের হাতে বড় অংকের নগদ অর্থ রয়েছে।
চীনের ইভি বাজারে উত্তপ্ত প্রতিযোগিতা চলছে। এ খাতে দুই শতাধিক অ্যাসেম্বলি কারখানায় ইভি নির্মাণযজ্ঞ চলছে। ইউবিএসের পূর্বাভাস, ২০৩০ সালের মধ্যে চীনের গাড়ি বাজারে প্রতি পাঁচটি নতুন গাড়ির তিনটি হবে ইভি। বিএমডব্লিউ, ফক্সওয়াগন, ফোর্ড ও টয়োটাসহ বিশ্বের প্রায় সব গাড়ি নির্মাতা কোম্পানিই ইভিতে মনোযোগ বাড়িয়েছে। চীনের বাজারে উন্মোচনের জন্য প্রতিটি কোম্পানিরই বেশ কয়েকটি ইভি মডেল রয়েছে।
বৈশ্বিক চিপস্বল্পতার মধ্যে কীভাবে গাড়ি নির্মাণ চালিয়ে নেয়া যায় এ প্রশ্ন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দেখা দিয়েছে। বর্তমানে চীনের বাজারে যেখানে ৫০ লাখ ইভির চাহিদা রয়েছে সেখানে ৪০ লাখ সরবরাহ করতে সক্ষম হয়েছে ইভি নির্মাতা কোম্পানিগুলো। এতে ১০ লাখ ইভিস্বল্পতা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
এক্সপেংয়ের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও শীর্ষ নির্বাহী হি শিয়াওপেং সম্প্রতি জানান, চলমান চিপস্বল্পতা ও সরবরাহ চেইন সংকট প্রথমার্ধে শেষ না হলেও দ্বিতীয়ার্ধে কেটে যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে। নিয়ুর শীর্ষ নির্বাহী উইলিয়াম লিও বলছেন, দ্বিতীয়ার্ধে স্বল্পতা কেটে যাবে।