টিকিট সর্বোচ্চ দামের- দর্শকের ঢল, কাতার বিশ্বকাপ থেকে কত আয় ফিফার

স্টাফ রিপোর্টার

শ্বাসরুদ্ধকর ফাইনালে ফ্রান্সকে হারিয়ে ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপ জিতলো আর্জেন্টিনা। লিওনেল মেসির হাতে উঠলো পরম আরাধ্য সেই শিরোপা। আর তার সঙ্গে সঙ্গে শেষ হলো কাতার বিশ্বকাপ ২০২২। ফিফা তো বলেই দিয়েছে, এবারের বিশ্বকাপ ইতিহাসের সেরা। তো সর্বকালের সেরা এই বিশ্বকাপ থেকে কেমন আয় করলো বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি?

কাতার বিশ্বকাপ ঘিরে কেবল বাণিজ্যিক চুক্তি থেকেই ৭৫০ কোটি মার্কিন ডলার আয় হয়েছে ফিফার। ২০১৮ সালে রাশিয়া বিশ্বকাপের আয়ের তুলনায় এটি অন্তত ১০০ কোটি ডলার বেশি।

ফিফার আয় আসে মূলত পাঁচটি ক্যাটাগরি থেকে- টিভি সম্প্রচার স্বত্ত্ব, বিপণন অধিকার, সেবা অধিকার ও টিকিট বিক্রি, নিবন্ধন অধিকার ও অন্যান্য লাভ।

আয়ের সবচেয়ে বড় অংশটিই আসে সম্প্রচার স্বত্ত্ব থেকে। ফিফার মোট আয়ে এর অবদান প্রায় ৫৬ শতাংশ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৯ শতাংশ দেয় বিপণন খাত। আর বাকি ১৫ শতাংশ আসে অন্য খাতগুলো থেকে।

ফিফার ওয়েবসাইটের তথ্য অনুসারে, ২০২২ ফুটবল বিশ্বকাপের সময় টেলিভিশন সম্প্রচার স্বত্ত্ব থেকে তাদের আয়ের লক্ষ্য ছিল ২৬৪ কোটি ডলার। বিপণন অধিকার বিক্রি থেকে আয় ধরা হয়েছিল ১৩৫ কোটি ডলার। সেবা ও টিকিট বিক্রি থেকে ৫০ কোটি এবং নিবন্ধন অধিকার বিক্রি থেকে সম্ভাব্য আয় ধরা হয়েছিল ১৪ কোটি ডলার।

কেলার স্পোর্টসের সমীক্ষা বলছে, এ বছর বিশ্বকাপের ম্যাচগুলোতে টিকিটের দামও ছিল সর্বকালের সর্বোচ্চ। অর্থাৎ এত দামি টিকিট কেটে আগে কখনো বিশ্বকাপের খেলা দেখতে হয়নি ফুটবলপ্রেমীদের।

জার্মান সংস্থাটির হিসাবে, ২০১৮ বিশ্বকাপের তুলনায় ২০২২ বিশ্বকাপে টিকিটের দাম প্রায় ৪০ শতাংশ বেশি। কাতার বিশ্বকাপে ফাইনাল ম্যাচে প্রতিটি টিকিটের গড় দাম ছিল ৬৮৪ পাউন্ড, বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ৮৭ হাজার টাকারও বেশি।

ফলে, গোটা টুনার্মেন্টে প্রতিটি আসনের জন্য গড়ে ২৮৬ পাউন্ড দামে ৩০ লাখের বেশি টিকিট বিক্রি হয়েছে ধরলে এই খাত থেকে ফিফার আয় হয়েছে প্রায় ১০০ কোটি ডলার। অর্থাৎ, এ খাতে পূর্বধারণার চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ আয় হয়েছে সংস্থাটির।

ফিফার আয় বেড়ে যাওয়ার পেছনে কাতারি স্টেডিয়ামগুলোর দূরত্বও কিছুটা ভূমিকা রেখেছে। টুর্নামেন্টের আটটি স্টেডিয়ামই দোহার ৫০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে অবস্থিত। এর ফলে যাতায়াত এবং অতিরিক্ত অবকাঠামো খরচ বেঁচে গেছে।

বিশ্বকাপ ঘিরে চার বছর পরপর চুক্তি পুনর্বিন্যাস করে ফিফা। ২০১৫ সাল থেকে শুরু হয়েছিল রাশিয়া বিশ্বকাপের হিসাব চক্র। ওই চার বছরে স্পন্সরদের কাছ থেকে ৬৪০ কোটি ডলার আয় হয় ফিফার।

কাতার বিশ্বকাপ শেষে পরের চার বছরে বৈশ্বিক ফুটবল সংস্থাটির আয় প্রথমবারের মতো ১ হাজার ১০০ কোটি ডলার ছাড়াবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর পেছনে মূল অবদান হবে নারী ফুটবল নিয়ে ফিফার নতুন অর্থনৈতিক পরিকল্পনা এবং ২০২৬ সালে যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা-মেক্সিকো বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী দলের সংখ্যা বাড়িয়ে ৪৮টি করার সিদ্ধান্তের। কাতার বিশ্বকাপে অংশ নিয়েছে মোট ৩২টি দল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *