টানা দরপতনে শেয়ারবাজার

স্টাফ রিপোর্টার

টানা দরপতনের বৃত্তে আটকে গেছে শেয়ারবাজার। সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি মূল্যসূচকের পতন হয়েছে। এর মাধ্যমে টানা চার কার্যদিবস দরপতন হলো শেয়ারবাজারে।

এর আগে নানা ইস্যুতে শেয়ারবাজারে টানা দরপতন ও লেনদেন খরা দেখা দেয়। তবে, গত সপ্তাহের প্রথম তিন কার্যদিবস টানা ঊর্ধ্বমুখীতার দেখা মিলে। এতে দরপতন কাটিয়ে শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখীতার স্বপ্ন দেখতে থাকেন বিনিয়োগকারীরা। কিন্তু বিনিয়োগকারীদের সেই স্বপ্ন আর বাস্তবে রূপ নেয়নি। গত সপ্তাহের শেষ দুই কার্যদিবসে ফের দরপতন হয়। আর চলতি সপ্তাহের প্রথম দুই কার্যদিবসেও দরপতন হলো।

অন্যদিন, মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি দুই বাজারেই যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বেড়েছে, কমেছে তার থেকে বেশি। অবশ্য দাম বাড়া বা কমার তুলনায় দাম অপরিবর্তিত থাকা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা আগের মতোই বেশি রয়েছে। দাম অপরিবর্তিত থাকা এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট ফ্লোর প্রাইসে (সর্বনিম্ন দাম) আটকে রয়েছে। ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকা এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের ক্রেতার দেখা তেমন একটা পাওয়া যাচ্ছে না।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়— সোমবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতেই ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক দুই পয়েন্ট বেড়ে যায়। অবশ্য এ ঊর্ধ্বমুখী ধারা বেশি সময় স্থায়ী হয়নি। লেনদেনের সময় আধাঘণ্টা গড়ানোর আগেই সূচক ঋণাত্মক হয়ে পড়ে।

মধ্যে একবার সূচক পজেটিভ হলেও শেষপর্যন্ত তা অব্যাহত থাকেনি। ফলে টানা চার কার্যদিবস পতন দেখতে হয় শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ৩০ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫৪টির। আর ২৪১টির দাম অপরবর্তিত রয়েছে।

ফলে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৬ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ২৩৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ২০১ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৬৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৪৫৬ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৩৪০ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ১১৬ কোটি ৪৮ লাখ টাকা।

টাকার অঙ্কে বাজারটিতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে মুন্নু সিরামিকের শেয়ার। কোম্পানিটির ৩৬ কোটি ৭০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশনের ২৫ কোটি ৯৯ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ১৯ কোটি ৭৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ওরিয়ন ইনফিউশন।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে— জেনেক্স ইনফোসিস, মুন্নু এগারো, বসুন্ধরা পেপার, বেক্সিমকো ফার্মা, জেমিনি সি ফুড, বিডি অটোকার এবং বাংলাদেশ মনোস্পুল পেপার।

অপর শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৪১ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৭ কোটি ২০ লাখ টাকা। লেনদেন অংশ নেওয়া ১৪৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৪টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৪৯টির এবং ৮১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *