জীবাশ্ম জ্বালানির পেছনে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ঢালছে বিশ্বব্যাংক

স্টাফ রিপোর্টার

নিম্ন-কার্বন অর্থনীতিতে স্থানান্তরিত করার জন্য বারবার প্রতিশ্রুতি দেয়া সত্ত্বেও গত বছর বিশ্বজুড়ে জীবাশ্ম জ্বালানিতেই খোদ বিশ্বব্যাংক কয়েক বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।

দ্য গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদনে জানায়, ট্রেড ফাইন্যান্স নামে পরিচিত বিশেষ ধরনের তহবিলের মাধ্যমে এ অর্থ স্থানান্তর হয়েছে। যা বিশ্বব্যাপী লেনদেনের জন্য ব্যবহৃত হয়।

বিশ্বব্যাপী জীবাশ্ম জ্বালানি অর্থায়নের ওপর নজর রাখে আরগেওয়াল্ড নামের একটি ক্যাম্পেইন গ্রুপ। তারা জাানায়, বিশ্বব্যাংক ২০২২ সালে এ বাণিজ্য অর্থায়নে প্রায় ৩৭০ কোটি ডলার সরবরাহ করছে।

বিশ্বব্যাংক ও এর প্রাইভেট আর্থিক সংস্থা এবং ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশনের (আইএফসি) সংস্কারের আহ্বান জানিয়েছেন এ গবেষণার লেখক হেইক মাইনহার্ড। যাতে এ ধরনের লেনদেন আরো স্বচ্ছ করা যায় এবং জীবাশ্ম জ্বালানির জন্য তহবিল বিশ্বব্যাংকের ঋণ থেকে বাদ দেয়া যায়।

মাইনহার্ড বিশ্বব্যাংকের প্রতিশ্রুতির কথা স্মরণ করিয়ে বলেন, তারা বলতে পারে না যে প্যারিস চুক্তির সঙ্গে সংযুক্ত, কারণ বলার মতো যথেষ্ট স্বচ্ছতা তাদের নেই।

স্বচ্ছতা না থাকার সুবিধা জীবাশ্ম জ্বালানি সংস্থাগুলো নিচ্ছে বলে মনে করেন তিনি। মাইনহার্ডের ভাষ্যে, জ্বালানি সংস্থা দেখছে কারো দৃষ্টি আকর্ষণ না করেই তারা এভাবে জনসাধারণের অর্থে প্রবেশ করতে পারে। খুব চালাকির সঙ্গে তারা এটি করে।

ট্রেড ফাইন্যান্স হলো স্ট্যান্ডার্ড প্রজেক্ট ফাইন্যান্সের চেয়ে বেশি অস্বচ্ছ তহবিল। যেখানে প্রজেক্ট ফাইন্যান্স সাধারণত সরকার, সংস্থা বা কনসোর্টিয়ামের কাছে একটি সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে প্রবাহিত হয় ও চিহ্নিত করা তুলনামূলকভাবে সহজ হয়।

ক্রেডিট বা গ্যারান্টির রূপ নিতে পারে ট্রেড ফাইন্যান্স। এটি বিশ্বব্যাংকের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। এর মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে ঝুঁকিমুক্ত অর্থায়নে সহায়তা করে।

উদাহরণস্বরূপ, নাইজেরিয়ার একজন জ্বালানির তেল ক্ষেত্রের মালিক যদি ড্রিলিং বা পরিশোধন সরঞ্জাম আমদানি করতে চায়, তাহলে ট্রেড ফাইন্যান্স সরঞ্জাম প্রস্তুতকারককে একটি গ্যারান্টি প্রদান করতে পারে যে পণ্যগুলোর জন্য অর্থ দেয়া হবে। এই ধরনের একটি লেনদেন হয়েছে কিনা তা জানার কোনো উপায় নেই, কারণ আইএফআইসি এই ধরনের লেনদেনের বিস্তারিত প্রকাশ করে না।

অনেক, উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশ বিশ্বব্যাংকের সংস্কারের জন্য চাপ দিচ্ছে। তাদের দাবি, নিম্ন-কার্বন বৈশ্বিক অর্থনীতিতে স্থানান্তরিত করার জন্য সংস্কার প্রচেষ্টাকে পুনরায় প্রাধান্য দিতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *