জিসিসি অঞ্চলে সৌদির জ্বালানি তেল-বহির্ভূত রফতানি বেড়েছে
কয়েক বছর ধরে জ্বালানি তেল-বহির্ভূত খাতে জোর দিচ্ছে সৌদি আরব। এর ইতিবাচক ফলও দেখা যাচ্ছে সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানে। দেশটির সরকারি তথ্যানুসারে, বার্ষিক হিসাবে গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিলের (জিসিসি) দেশগুলোয় ২০২৩ সালের শেষ প্রান্তিকে দেশটির জ্বালানি তেল-বহির্ভূত রফতানি বেড়েছে ৪২ শতাংশ। খবর আরব নিউজ।
সৌদি পরিসংখ্যান কর্তৃপক্ষের দেয়া তথ্যানুসারে, অক্টোবর-ডিসেম্বরে এ খাতে লেনদেন ৫৫০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে পুনঃরফতানি চাহিদা, যা মোট আয়ের অর্ধেক। পরিসংখ্যান অনুসারে, বাহরাইন, কুয়েত, ওমান, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের পুনঃরফতানি পণ্য সৌদি জ্বালানি-বহির্ভূত রফতানি বৃদ্ধিতে ৫৫ শতাংশ অবদান রেখেছে।
পুনঃরফতানির ক্ষেত্রে একটি দেশ আমদানিকৃত পণ্য পরবর্তী সময়ে উল্লেখযোগ্য প্রক্রিয়াকরণ বা পরিবর্তন ছাড়াই অন্য দেশে রফতানি করে।
জ্বালানি তেল-বহির্ভূত সৌদি পণ্য আমদানিতে সামনের সারিতে রয়েছে ইউএই। গত বছর সৌদি আরবের ৬৭ শতাংশ এ ধরনের পণ্যের চালান হয়েছে দেশটিতে। এর মধ্যে পুনঃরফতানি পণ্য ছিল প্রায় ৬১ শতাংশ, এর বৃদ্ধির হার ছিল ৯৭ শতাংশ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পুনঃরফতানির বৃদ্ধি জিসিসি দেশগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক বন্ধন দৃঢ় করতে পূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। ঐক্যবদ্ধ বাজার ব্যবস্থায় উৎসাহিত করার পাশাপাশি এ অঞ্চলে পণ্য ও পরিষেবার অবাধ প্রবাহে ভূমিকা রাখবে।
আধুনিক অবকাঠামো এবং পণ্য ও পরিষেবার দক্ষ পুনঃবণ্টন জিসিসি অঞ্চলে সৌদি আরবের কৌশলগত অবস্থান শক্তিশালী করেছে। একই সঙ্গে পরিবহন ব্যয় ও পরিবহন সময়কাল হ্রাসের কারণে পণ্য সহজে গন্তব্যে পৌঁছে যাচ্ছে।
এছাড়া অভ্যন্তরীণ লজিস্টিক হাব সম্প্রসারণ ও রেল সংযোগ উন্নতির মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে বার্ষিক কনটেইনার হ্যান্ডেলিংয়ের পরিমাণ বাড়ানোর লক্ষ্যে এগোচ্ছে সৌদি আরব।
সৌদি আরব তার উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বড় বড় প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে নিওমের মতো শহরে ব্যয় হয়েছে ৫ হাজার কোটি ডলার। এখানকার বন্দর বার্ষিক ৯০ লাখ কনটেইনার খালাস করতে সক্ষম। এ প্রকল্পে অক্সাগন বন্দরও অন্তর্ভুক্ত থাকবে, যা তিনটি মহাদেশের সংযোগস্থলে অবস্থিত বিশ্বব্যাপী বৃহত্তম ভাসমান কাঠামোয় পরিণত হবে।
পরিসংখ্যান অফিসের প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২২ সালের শেষ নাগাদ সৌদি আরবে ১০ হাজার ৪০০ বিলিয়ন সৌদি রিয়াল বিনিয়োগে সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে ইউএইর। জ্বালানি তেল-বহির্ভূত বাণিজ্য কার্যক্রম সম্প্রসারণে দুই পক্ষের আগ্রহই চোখে পড়ার মতো।
উপসাগরীয় দেশগুলোর মধ্যে সৌদি আরবের অন্যতম বাণিজ্য অংশীদার কাতার। অক্টোবর-ডিসেম্বরে পরিবহন সরঞ্জাম ও রাসায়নিক পণ্য খাতে দেশটিতে সৌদি জ্বালানি তেল-বহির্ভূত রফতানি বেড়েছে ৪৩৯ শতাংশ। সৌদি-কাতারি কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিলের সাম্প্রতিক বৈঠকের পর দুই দেশের অর্থনৈতিক, সামরিক, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক বেড়েছে। নেতারা টেকসই প্রবৃদ্ধির জন্য সহযোগিতা সম্প্রসারণের গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছেন।
আমদানির ক্ষেত্রে জিসিসিভুক্ত দেশগুলোর ৬৮ শতাংশই সৌদিতে এসেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে, যা ২২ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ৪৩৭ সৌদি রিয়াল হয়েছে। অন্যদিকে ওই প্রান্তিকে কুয়েত থেকে আমদানি কমেছে ৩৫ কোটি সৌদি রিয়ালের বেশি।