জিরা আমদানি নিম্নমুখী
ব্যাংকে এলসি (ঋণপত্র) জটিলতা ও ডলার সংকটে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরে মসলাজাত পণ্য জিরা আমদানি কমে গেছে। গত অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরে (জুলাই-ডিসেম্বর, ২০২২) কমপক্ষে ৫০০ টন জিরা আমদানি কমেছে।
অন্যদিকে আমদানি কমে যাওয়ায় দেশীয় বাজারে জিরার দাম বেড়েছে ব্যাপক হারে। গত অর্থবছরের এই সময় যে জিরা প্রতি কেজি ৩৮০-৪০০ টাকা ছিল, তা এখন বিক্রি হচ্ছে ৫৫০-৬০০ টাকা পর্যন্ত। ব্যবসায়ীরা বলছেন, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় জিরার দাম বেড়েছে।
ভোমরা শুল্কস্টেশনের রাজস্ব বিভাগ থেকে জানা গেছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর পর্যন্ত ভোমরা বন্দর দিয়ে জিরা আমদানি হয়েছে ১ হাজার ৩২৪ টন। যার আমদানি মূল্য ২৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। এ থেকে সরকারের রাজস্ব আয় হয়েছে ১৩ কোটি ১২ লাখ টাকা। অন্যদিকে গত অর্থবছরে একই সময়ে অর্থাৎ ২০২১ সালের জুলাই-ডিসেম্বর পর্যন্ত এর আমদানি হয়েছিল ১ হাজার ৮৩১ টন। যার আমদানি মূল্য ছিল ২৯ কোটি ৫২ লাখ টাকা, যা থেকে সরকারের রাজস্ব আয় হয় ১৫ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। এ হিসাব অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরে জিরা আমদানি কমেছে ৫০৭ টন।
ভোমরা স্থলবন্দরের মসলাজাত পণ্য আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স রাফসান এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. আবু হাসান বলেন, ‘ব্যাংকে এলসি জটিলতার পাশাপাশি ডলার সংকটে জিরাসহ সব ধরনের মসলা আমদানি কমে গেছে। তাছাড়া অন্য সময়ের তুলনায় ভারতে জিরার দাম বাড়ার কারণেও আমদানি কিছুটা কমেছে। গত অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ৩৫-৪০ শতাংশ জিরার আমদানি কমেছে।’
এদিকে সাতক্ষীরার পাইকারি মসলাজাত পণ্য বিক্রয় মোকাম সুলতানপুর বড় বাজারের মসলা ভাণ্ডারে প্রতি কেজি ভারতীয় আমদানীকৃত জিরা পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৪৭০-৪৮০ টাকা দরে। আর ইরানি বা পাকিস্তানি জিরা প্রতি কেজি ৫৫০-৬০০ টাকা। প্রতিষ্ঠানটির মালিক আবুল কাসেম বলেন, ‘চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় জিরার দাম বেড়েছে। গত অর্থবছরের এ সময়ের তুলনায় প্রকারভেদে জিরার দাম বেড়েছে কেজিতে ১৪০-১৫০ টাকা পর্যন্ত। মূলত আমদানি খরচ বেড়ে যাওয়ায় দাম বেড়েছে জিরাসহ সব ধরনের মসলাজাত পণ্যে।’
ভোমরা শুল্কস্টেশনের দায়িত্বরত কাস্টমসের ডেপুটি সহকারী কমিশনার নেয়ামুল হাসান বলেন, ‘মসলাজাত পণ্য হিসেবে জিরা আমদানিতে সরকারের রাজস্ব আয় ভালো আসে। কিন্তু আমদানি কমে যাওয়ায় গত অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরে পণ্যটিতে রাজস্ব আয় কম হয়েছে।’