জিওটেক্সটাইলের অভ্যন্তরীণ বাজার ৭০০ কোটি টাকার

স্টাফ রিপোর্টার

কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুস শহীদ বলেছেন, বর্তমানে জিওটেক্সটাইলের অভ্যন্তরীণ বাজার প্রায় ৭০০ কোটি টাকার। স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন, রেল, সড়কসহ সরকারের বিভিন্ন বিভাগের অবকাঠামো তৈরিতে প্রয়োজনীয় কাঁচামাল হিসেবে জিওটেক্সটাইলের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

তিনি বলেন, শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বজুড়ে নানা কাজে ‘মেটাল নেটিং’ বা পলিমার থেকে তৈরি সিনথেটিক জিওটেক্সটাইলের পরিবর্তে পরিবেশবান্ধব ও উৎকৃষ্ট জুট জিওটেক্সটাইলের কদর বাড়ছে।

সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ‘পাটের জিনোম সেন্টার, সাফল্য ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটে এ সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার, বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. আব্দুল আউয়াল।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ থেকে পাটকাঠির কালো ছাইয়ের (চারকোলের) প্রধান আমদানিকারক দেশ চীন। বর্তমানে চীন ছাড়াও তাইওয়ান, জাপান, হংকং ও ব্রাজিলেও চারকোল রপ্তানি হচ্ছে।

তিনি বলেন, আশির দশকে পাট ছিল বাংলাদেশের প্রধান অর্থকরী ফসল। এসময় পাট রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রার প্রায় ৭৫ শতাংশ আয় হতো। বর্তমানে তৈরিপোশাক শিল্প পাটের স্থান দখল করে নিয়েছে এবং পাট বর্তমানে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ (মোট রপ্তানি আয়ের ৩-৪ শতাংশ) রপ্তানিকারক পণ্য। সম্প্রতি বর্তমান সরকার পাটকে কৃষিপণ্য হিসেবে ঘোষণা করেছে।

আব্দুস শহীদ বলেন, কৃত্রিম তন্তুর (পলিথিন) ব্যবহার বৃদ্ধি পেলেও বর্তমান টেকসই উন্নয়নের যুগে বিশ্বব্যাপী পরিবেশবান্ধব পাট ও পাটপণ্যের ব্যাপক চাহিদা তৈরি হয়েছে। পাটের আঁশের বহুমুখী ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। প্রসাধনী, ওষুধ, রং, সুতা তৈরিসহ নানান কাজে ব্যবহার হচ্ছে। বাংলাদেশের পাট এখন পশ্চিমা বিশ্বের গাড়ি নির্মাণ, পেপার অ্যান্ড পাম্প, ইনসুলেশন শিল্পে, জিওটেক্সটাইল, হেলথ কেয়ার, ফুটওয়্যার, উড়োজাহাজ, কম্পিউটারের বডি তৈরি, ইলেকট্রনিক্স, মেরিন ও স্পোর্টস শিল্পে ব্যবহৃত হচ্ছে।

তিনি বলেন, তবে আমরা এখনো পাটবীজে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারিনি। চাহিদার সিংহভাগ ভারত থেকে আমদানি করতে হয়। সে জন্য পাটবীজের আমদানিনির্ভরতা কমিয়ে, পাটবীজ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন এবং কম জমিতে অধিক পরিমাণ পাট উৎপাদনের লক্ষ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করছে সরকার।

সরকারের পাটবান্ধব নীতির কল্যাণে বিগত ১০ বছরে পাটের উৎপাদন বেড়েছে ৩৩ লাখ বেল। ২০১৫ সালে যেখানে ৫১ লাখ বেল পাট উৎপাদন হতো, সেখানে ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশে পাট উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৮৪ লাখ বেল। এর মধ্যে প্রায় ৪৩ লাখ বেল পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে। পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে প্রায় আট হাজার কোটি টাকা আয় হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *