জাপানে মাথাপিছু ঋণ ৬৮ হাজার ডলার ছাড়িয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার

সেপ্টেম্বরে জাপান সরকারের ঋণের পরিমাণ রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। অর্থনৈতিক সম্প্রসারণে ব্যয় বৃদ্ধির কারণে সরকারি ঋণের পরিমাণ ৯৯৪ ট্রিলিয়ন ইয়েন বা ৬ দশমিক ৮ ট্রিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। মাথাপিছু এ ঋণের পরিমাণ ৬৮ হাজার ৫০০ ডলারে উন্নীত হয়েছে। সম্প্রতি দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয় প্রকাশিত এক উপাত্তে এ তথ্য উঠে এসেছে। খবর কিয়োদো নিউজ।

সেপ্টেম্বরে জাপানের সাধারণ সরকারি বন্ড তিন মাস আগের তুলনায় ৯ দশমিক ৪৬ ট্রিলিয়ন ইয়েন বেড়েছে। এছাড়া অন্যান্য সব ধরনের ঋণ ও বন্ডসহ জাপানের মোট ঋণের পরিমাণ ১ হাজার ২৫১ দশমিক ৩৮ ট্রিলিয়ন ইয়েনে পৌঁছেছে। এ ঋণের পরিমাণ বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির জোট জি৭-এর যেকোনো দেশের চেয়ে বেশি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ১ অক্টোবরের হিসাব অনুযায়ী জাপানে আনুমানিক জনসংখ্যা ১২ কোটি ৪৮ লাখ ৩০ হাজার। ফলে জনপ্রতি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ইয়েন বা ৬৮ হাজার ৫০০ ডলার। এদিকে চলতি অর্থবছরে এখন পর্যন্ত সাধারণ বন্ড ইস্যুকরণে সর্বোচ্চে পৌঁছতে পারেনি দেশটির সরকার। তবে দেশটির মন্ত্রিসভা এরই মধ্যে এ অর্থবছরের জন্য ২৯ ট্রিলিয়ন ইয়েনের দ্বিতীয় সম্পূরক বাজেটের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে।

সাধারণ বন্ড ঋণ আগামী মার্চে অর্থবছর শেষে (এপ্রিল-মার্চ) ১ হাজার ৪২ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন ইয়েনে পৌঁছবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। এদিকে দেশটির বন্ড মার্কেটের সবচেয়ে বড় শক্তি হলো ব্যাংক অব জাপান (বিওজে)। দীর্ঘমেয়াদি সুদের হার প্রায় দশমিক ২৫ শতাংশের বেশি না রাখার লক্ষ্যে সরকারি বন্ড কেনা বাড়াচ্ছে বিওজে।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) তথ্য অনুসারে, সেপ্টেম্বরে জাপান সরকারের ঋণের পরিমাণ  ছিল ২০২১ সালে জিডিপির ২৬২ দশমিক ৫ শতাংশের সমান। জি৭ দেশগুলোর মধ্যে জিডিপির অনুপাতে সর্বোচ্চ ঋণগ্রহীতা দেশও জাপান। যেখানে জি৭ দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের জিডিপির বিপরীতে ঋণের পরিমাণ ১২৮ দশমিক ১ শতাংশ, যুক্তরাজ্যের ৯৫ দশমিক ৩ ও জার্মানির ৬৯ দশমিক ৬ শতাংশ। এছাড়া জি৭-এর বাকি দেশগুলো কানাডা, ফ্রান্স ও ইতালির জিডিপির বিপরীতে ঋণের পরিমাণ কম।

২০২০ সালের শুরুতে নভেল করোনাভাইরাস বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়লে জি৭ দেশগুলোর জিডিপি সংকুচিত হতে শুরু করে। ফলে ওই সময়ে দেশগুলোর সরকার ব্যবসা খাত অটুট রাখতে এবং ভোক্তাদের সমর্থন ধরে রাখতে প্রচুর অর্থ ব্যয় করেছিল।

তবে কভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ এবং টিকাদান কার্যক্রমের মাধ্যমে অনেক দেশের অর্থনীতি আগের স্থানে ফিরতে শুরু করে। কিন্তু ২০২১ সালে জি৭-এর জার্মানি ও জাপান ব্যতীত অন্যান্য দেশের জিডিপির বিপরীতে ঋণের অনুপাতের পরিস্থিতিও উন্নতি হতে শুরু করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *