জাপানের অফশোর বায়ুবিদ্যুতে বিদেশী বিনিয়োগ বাড়ছে

স্টাফ রিপোর্টার

জাপানের যৌথ মালিকানাধীন অফশোর বা সমুদ্র উপকূলবর্তী বায়ুবিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে বিদেশী কোম্পানিগুলো। একই সঙ্গে স্থানীয় কর্মীদের নিয়োগ ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ সংগ্রহ বাড়িয়ে দিয়েছে তারা। জাপানের সরবরাহ শৃঙ্খলে এর প্রভাব শক্তিশালী হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে যৌথ উদ্যোগগুলো কতটা লাভজনক হবে, তা নিয়ে উদ্বেগের কারণও রয়েছে বলে জানান বিশ্লেষকরা। খবর নিক্কেই এশিয়া।

জাপানের অর্থনীতি, বাণিজ্য ও শিল্পবিষয়ক মন্ত্রণালয় ২০৪০ সালের মধ্যে ৪৫ গিগাওয়াট বায়ুবিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা অর্জনকে সামনে রেখে কাজ করছে। দেশটির সরকার এরই মধ্যে বড় আকারের অফশোর বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য দুটি উন্মুক্ত টেন্ডার সম্পন্ন করেছে। এর মাধ্যমে সাতটি এলাকায় ৩ দশমিক ৫ গিগাওয়াট বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য কোম্পানি নির্বাচন করেছে।

২০২০ সালে টোকিও একটি পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছিল। এর আওতায় ২০৪০ সালের মধ্যে জাপানকে ইউরোপ ও চীনের পর বিশ্বে তৃতীয় বৃহত্তম অফশোর বায়ুবিদ্যুৎ উৎপাদক হিসেবে পরিণত করার লক্ষ্য নেয়া হয়েছে।

জাপানের একটি সংশোধিত আইন সমুদ্রভিত্তিক নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার নিয়ে সহায়ক পরিবেশ তৈরি করেছে। এর মাধ্যমে বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্রের স্থাপনা রাষ্ট্রীয় জলসীমার বাইরে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলেও (ইইজেড) সম্প্রসারণ হতে পারে।

জাপানের সম্মিলিত জলসীমা ও ইইজেডের মোট আয়তন ৪৫ লাখ বর্গকিলোমিটার, যা বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহত্তম। ভাসমান উইন্ড টারবাইনের প্রযুক্তি বাজারে এলে জাপানের বায়ুবিদ্যুৎ শিল্প আরো বড় হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

জার্মান কোম্পানি আরডব্লিউই এ বছর তাদের জাপানি শাখায় কর্মচারীর সংখ্যা দ্বিগুণ বাড়িয়ে ১০০ জনে উন্নীতের পরিকল্পনা করেছে। আরডব্লিউইর বৈশ্বিক অপারেটিং অফশোর উইন্ড ক্ষমতা মোট ৩ দশমিক ৩ গিগাওয়াট। জাপানের উন্মুক্ত টেন্ডারের দ্বিতীয় দফায় আরডব্লিউই নিগাতা প্রিফেকচারের উপকূলে বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের কাজ পেয়েছে। এতে ট্রেডিং হাউজ মিৎসুই অ্যান্ড কোম্পানি এবং ওসাকা গ্যাস সহযোগিতা করবে। টেন্ডারটি ২০২৩ অর্থবছরে ঘোষণা করা হয়।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বিদেশী কোম্পানিগুলোর উপস্থিতি জাপানের অফশোর বায়ুবিদ্যুৎ শিল্পের জন্য লাভজনক হতে পারে। স্থাপনা নির্মাণ থেকে উৎপাদনকাল ও নিষ্ক্রিয় করা পর্যন্ত বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলোর মেয়াদকাল ২০ বছরেরও বেশি। এ প্রকল্পগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ, নির্মাণ ও যন্ত্রাংশ ক্রয় প্রভৃতির জন্য কর্মী নিয়োগের প্রয়োজন হবে। এর ফলে জাপানের স্থানীয় বাজার লাভবান হবে।

তবে মুনাফার আকারের দিক থেকে জাপানের অফশোর বায়ুবিদ্যুতের সামনে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। কারণ দেশটির উপকূলীয় অঞ্চলের আকার ইউরোপ ও অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় ছোট। এ কারণে বড় আকারে পরিকল্পনা ও এর মাধ্যমে খরচ কমানো কঠিন হয়ে পড়ে। এছাড়া মিৎসুবিশি হেভি ইন্ডাস্ট্রিজ ও হিটাচির মতো দেশীয় নির্মাতারা উইন্ড টারবাইন উৎপাদন থেকে সরে যাওয়ায় যন্ত্রাংশ সংগ্রহ করা কঠিন ও রক্ষণাবেক্ষণের খরচ অনেক বেশি হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *