চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে বিদায় নেইমারের পিএসজি
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা জয়ের জন্য পিএসজির চেয়ে আর বেশি ব্যায় কোন ক্লাব করতে পেরেছে? হিসেব করলে মোটেও পিএসজির চেয়ে এগিয়ে থাকবে না কেউ। কিন্তু প্যারিসের এই ক্লাবটির এমনই দুর্ভাগ্য, মোক্ষম সময়ে এসে ইনজুরিতে পড়ে তাদের সেরা খেলোয়াড়রা। যার খেসারাত গুণতে হয়, চ্যাম্পিয়ন্স লিগের দ্বিতীয় রাউন্ড থেকেই বিদায় নিয়ে।
এবারও নেইমার ইনজুরিতে। সময়মত তার সার্ভিস পেলো না দল। আগের ম্যাচে ইনজুরিতে ছিলেন এডিনসন কাভানি। এই ম্যাচেও শঙ্কা ছিল। যে কারণে কাভানিকে কোচ মাঠে নামিয়েছেন ম্যাচের ৯৫তম মিনিটে। মাঠে নেমে বলে ঠিকমত একবার পা লাগানোরও সুযোগ পেলেন না। তার আগেই ম্যাচ শেষের বাঁশি বাজিয়েছেন রেফারি।
নেইমার-কাভানির অনুপস্থিতিতেও ওল্ড ট্র্যাফোর্ড থেকে প্রথম লেগে ২-০ গোলে জিতে এসেছিল প্যারিসের দলটি। ডি মারিয়া আর এমবাপের অসাধারণ নৈপুণ্য দেখেছিল ফুটবলপ্রেমীরা। যে কারণে, সবাই ধরে নিয়েছিল এবার দ্বিতীয় রাউন্ডের বাধা পার হতে পারছে দলটি, এতে কোনো সন্দেহ নেই।
কিন্তু দুর্ভাগ্য ভর করলে যা হয়, এবার ঠিক তেমনটাই ঘটলো পিএসজির ক্ষেত্রে। নিজেদের মাঠ পার্ক ডি প্রিন্সেসে ম্যাচের ইনজুরি সময়ে, তথা ৯৪ মিনিট পর্যন্তও ২-১ গোলে পিছিয়ে ছিল পিএসজি। তাতেও সমস্যা ছিল না, গোল গড়ে তারাই কোয়ার্টার ফাইনালে।
কিন্তু সর্বনাশটা ঘটে গেলো ইনজুরি সময়ে। হঠাৎই পেনাল্টি পেয়ে গেলো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। সেই পেনাল্টি থেকে গোল করে পুরো পার্ক ডি প্রিন্সেসকে স্তব্ধ করে দিলেন মার্কাস রাশফোর্ড। ওই এক গোলেই যে পিএসজিকে বিদায় করে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করে ফেলেছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড! জোড়া গোল করেন রোমেলু লুকাকু।
ঘরের মাঠে পিএসজি হারলো ৩-১ গোলের ব্যবধানে। দুই লেগ মিলিয়ে দু’দলের গোল ব্যবধান ৩-৩। কিন্তু অ্যাওয়ে গোলের সুবিধা নিয়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডই উঠে গেলো শেষ আটে। আবারও হতাশায় পুড়লো প্যারিসের ক্লাবটি। এই ক্লাবের কর্মকর্তাদের হয়তো নতুন করে ভাবতে হবে, নতুন ইনভেস্টমেন্ট নিয়ে।
ম্যাচের কিক অফের বাঁশি বাজকে না বাজতেই গোল হজম করে বসে প্যারিসের দলটি। দর্শকরা তখনও নড়ে-চড়ে, ঠিক করে নিজেদের আসনে বসছিল হয়তো। কিন্তু দ্বিতীয় মিনিটেই রোমেলু লুকাকুর গোলে এগিয়ে যায় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। প্রায় ৬ গজ দুর থেকে বাম পায়ে নেয়া লুকাকুর শট জাল ভেদ করে পিএসজির।
গোল হজম করে অবশ্য সেটি শোধ করে দিতে সময় নেয়নি স্বাগতিকরাও। ম্যাচের ১২তম মিনিটে হুয়ান বার্নাতের গোলে সমতায় ফেরে পিএসজি। কাইলিয়াম এমবাপের পাস থেকে বল পেয়ে বক্সের বাম পাশে ৬ গুজ দুর থেকে বাম পায়ের শটে ম্যানইউর জালে বল জড়ান বার্নাত।
রোমেলু লুকাকুর দ্বিতীয় গোল আসতেও সময় লাগেনি। ম্যাচের বয়স ৩০ মিনিট হতে না হতেই ২-১ গোলে এগিয়ে যায় ম্যানইউ। এবারও গোল করেন বেলজিয়ান তারকা রোমেলু লুকাকু। পোস্টের একেবারে সামনে থেকে বাম পায়ের শট নিয়েছিলেন তিনি।
এই ২-১ গোলেই ম্যাচ শেষ হওয়ার দিকে চলে গিয়েছিল প্রায়। ম্যাচের নির্ধারিত সময়ও শেষ হয়ে গিয়েছিল। তবে ম্যাচের একেবারে শেষ মিনিটে বক্সের মধ্যে হাতে বল লাগিয়ে ফেলেন পিএসজির প্রেসনেল কিমবাপ্পে। এ নিয়ে ভিএআর পর্যন্ত হলো। সময়ক্ষেপণ হলো। শেষ পর্যন্ত ভিএআরের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া গেলো, ওটা ছিল পেনাল্টি।
ম্যাচের ৯৪তম মিনিটে পেনাল্টি কিক থেকে গোল করেন মার্কাস রাশফোর্ড। এরপর আরও ৬ মিনিট খেলা হয়েছে। অর্থ্যাৎ, অতিরিক্ত মোট ১০ মিনিট খেলা হয় এই ম্যাচে।