চীনে অ্যালুমিনিয়াম ও তামার চাহিদা বাড়াচ্ছে বিদ্যুৎ সংকট

স্টাফ রিপোর্টার

জ্বালানি সংকটের প্রভাবে চীনে তামা ও অ্যালুমিনিয়ামের চাহিদা বাড়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। সংকট মোকাবেলায় দেশটি নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে মনোযোগ বাড়াচ্ছে। এক্ষেত্রে দেশটিকে পর্যাপ্ত তামা ও অ্যালুমিনিয়াম সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। আর্থিক পরিষেবা প্রতিষ্ঠান এএসজেড বিশ্লেষকরা এ তথ্য জানিয়েছেন।

প্রতিষ্ঠানটি এক প্রতিবেদনে জানায়, বেইজিং বিদ্যুৎ গ্রিডে বিনিয়োগ বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু চলতি মাসে সিচুয়ান প্রদেশের মতো কয়েকটি অঞ্চলে ভয়াবহ বিদ্যুৎ সংকটে দেশটি নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোর কথা ভাবছে। এছাড়া কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নেও নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে অগ্রাধিকার দিচ্ছে দেশটির সরকার।

এএনজেড বলছে, নবায়নযোগ্য জ্বালানির ক্ষেত্রে সৌর ও বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্পে তামা ব্যবহার হয়। শুধু বিদ্যুতের তার স্থাপন ও স্থানান্তরের ক্ষেত্রেই নয়, বরং সোলার প্যানেল তৈরির ক্ষেত্রেও ধাতুটির চাহিদা বাড়বে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৫ সালের মধ্যে ১ হাজার ২০০ গিগাওয়াটের নবায়নযোগ্য জ্বালানি সরবরাহ সক্ষমতা অর্জনে পর্যাপ্ত অবকাঠামো তৈরিতে জোর দিচ্ছে চীন। এজন্য অতিরিক্ত ৩০ লাখ টন তামা প্রয়োজন। ফলে সৌর ও বায়ু বিদ্যুৎ খাতে এক বছরে তামার চাহিদা বাড়বে প্রায় ১০ লাখ টন। এ বছরের মে মাস থেকেই এএনজেডের তামার চাহিদা নির্দেশক ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে। জুলাইয়ে তা ঊর্ধ্বমুখী ধারায় রূপ নেয়।

এএনজেডের আগে চীনে তামার চাহিদা বৃদ্ধির হার ২ দশমিক ২ শতাংশে উন্নীত হওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি তা বাড়িয়ে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ ধরা হয়েছে। আগামী বছর তা আরো বেড়ে ৬ দশমিক ৫ শতাংশে পৌঁছতে পারে। বিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগ অব্যাহত বাড়ছে। ফলে বাজারে তামার ঘাটতি কমার সম্ভাবনা দেখছেন না বিশ্লেষকরা।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, চীনের বড় জনসংখ্যার কাছে নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে আল্ট্রা হাই ভোল্টেজ লাইনে বিনিয়োগ বাড়ছে, যা অ্যালুমিনিয়াম ইন্ডাস্ট্রির জন্য অনেক বড় ইতিবাচক দিক। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, চীনে ব্যবহূত মোট অ্যালুমিনিয়ামের মধ্যে ১২ শতাংশই যায় বৈদ্যুতিক তারে।

ইউরোপে জ্বালানি ঘাটতির কারণে এরই মধ্যে বাজারে অ্যালুমিনিয়ামের সংকট চলছে। এ পরিস্থিতিতে চলতি বছর চীনে ধাতুটির চাহিদা প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ১ শতাংশে পৌঁছতে পারে। এর আগে ২ দশমিক ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ছিল। আগামী বছর প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়াবে ৪ শতাংশে। ফলে এটির বাজার ঘাটতিও বাড়বে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *