চীনের গাড়ি উৎপাদন হুমকিতে
চীনে আবারো বেড়েছে নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। কভিডের সংক্রমণপ্রবাহ ঠেকাতে সাংহাই শহরে লকডাউন আরোপ করা হয়েছে। কভিডের বিস্তার রোধে সরকার জিরো টলারেন্স নীতি নিয়েছে। এতে দেশটির গাড়ি উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। খবর ফ্রি মালয়েশিয়া টুডে।
বিশ্বের শীর্ষ গাড়ি নির্মাতা দেশ চীন। সম্প্রতি দেশটির অন্যতম প্রধান বাণিজ্যিক নগরী সাংহাইয়ে কভিডজনিত বিধিনিষেধ আরোপ করার ফলে গোটা দেশের গাড়ি উৎপাদন হুমকির মুখে পড়েছে। গত মাসে দেশটির গাড়ি বিক্রি কমেছে ১০ দশমিক ৫ শতাংশ।
এ বিষয়ে চীনের বিদ্যুচ্চালিত গাড়ি (ইভি) প্রস্তুতকারক সংস্থা এক্সপেংয়ের প্রধান কর্মকর্তা হি জিয়াওপেং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানান, যদি সাংহাই ও তার আশপাশের অঞ্চলে অবস্থিত যন্ত্রাংশ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো পুনরায় কার্যক্রম চালুর কোনো বিকল্প পদ্ধতি বের করতে না পারে, তাহলে সব মৌলিক সরঞ্জামের সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাবে। সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন ইভি জায়ান্ট টেসলাকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে এক্সপেং। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কর্মকর্তা জানান, কভিডজনিত বিধিনিষেধ মোকাবেলায় ব্যবসার জন্য কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করছে এক্সপেং।
সরকারি বিধিনিষেধের কারণে সাংহাইয়ের ২ কোটি ৫০ লাখ বাসিন্দা কয়েক সপ্তাহ ধরেই গৃহবন্দি। ফলে ব্যবসায়িক কার্যক্রম বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন উৎপাদকরাও। এতে করে চীনের ৫ দশমিক ৫ শতাংশ মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন কঠিন হয়ে পড়বে।
এদিকে হুয়াওয়ের ভোক্তা ও অটো বিভাগের প্রধান কর্মকর্তা রিচার্ড ইয়ু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম উইচ্যাটে বলেন, শিগগিরই যদি সাংহাই কাজ আর উৎপাদন শুরু করতে না পারে, তবে মে মাস থেকে সাংহাই সরবরাহ ব্যবস্থার সঙ্গে জড়িত সব প্রযুক্তি ও শিল্প সংস্থাগুলো সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যাবে। গত মাসে নিজেদের হারমনিওএস অপারেটিং সিস্টেম পরিচালিত তিন হাজার ইভি বিক্রি করেছে হুয়াওয়ে।
এদিকে চীনের লকডাউন দেশীয় গাড়ি প্রতিষ্ঠান ছাড়াও প্রভাব ফেলেছে আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলোতেও। সাংহাইয়ের কভিডজনিত বিধিনিষেধের শিকার জার্মান অটোমোবাইল প্রস্তুতকারক সংস্থা ফক্সওয়াগন। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, সাংহাই ও চাংচুনে কভিড-১৯-এর প্রাদুর্ভাবের কারণে ব্যবসা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফক্সওয়াগন গ্রুপের চীনা সিইও স্টিফান ওলেনস্টেইন বলেন, প্রতিষ্ঠানটি সাময়িকভাবে ভোক্তা চাহিদার চাপ সামলাতে ব্যর্থ হচ্ছে। তবে আগামী মাসগুলোয় বিলম্বিত উৎপাদন সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারবেন বলে আশা করছেন তিনি।
ফক্সওয়াগন জানায়, লকডাউনের কারণে প্রায় ২০ শতাংশ ডিলার মার্চে সাময়িকভাবে ব্যবসা স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছে।
এদিকে সাংহাইয়ে অবস্থিত টেসলার কয়েকশ কোটি ডলারের একটি গিগাফ্যাক্টরি কভিডজনিত বিধিনিষেধের কারণে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া চীনের আরো এক বিদ্যুচ্চালিত গাড়ি প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান নিও গত সপ্তাহে জানিয়েছে, জিলিন ও সাংহাইয়ে অবস্থিত প্রতিষ্ঠানটির ব্যবসায়িক অংশীদাররা মহামারীর প্রাদুর্ভাবের কারণে কার্যক্রম স্থগিত করেছে। ফলে গাড়ি উৎপাদন সাময়িকভাবে বন্ধ করেছে নিও।