চীনের কারণে ১ হাজার ৬০০ কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ যুক্তরাষ্ট্রের

চীনের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের একরপ্রতি ১৫ থেকে ১৫০ ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এ সহায়তা প্যাকেজটির জন্য ১ হাজার ৬০০ কোটি ডলার বরাদ্দ করা হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার নিশ্চিত করেছেন দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা। খবর রয়টার্স।

আগস্টের মাঝামাঝি থেকে শুরু হয়ে শেষ সপ্তাহ নাগাদ এ সহায়তা প্যাকেজ সরবরাহ করা হবে। গত বছর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ১ হাজার ২০০ কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ দেয়ার ঘোষণার সূত্র ধরে এ সহায়তা দেয়া হচ্ছে।

বিশ্বের শীর্ষ দুই অর্থনীতির মধ্যে বছরব্যাপী চলা বাণিজ্যযুদ্ধে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কৃষকরা, যারা ট্রাম্পের একটি বড় ভোটব্যাংক। চীনে যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম কৃষি রফতানি পণ্য সয়াবিন রফতানি চালান গত বছর ১৬ বছরের সর্বনিম্নে ছিল।

কৃষকদের এ সহায়তা কর্মসূচির কড়া সমালোচনা করেছেন বিরোধী ডেমোক্র্যাটরা। তারা বলেন, কৃষকদের বেইলআউট দেয়ার চেয়ে ন্যায্য বাণিজ্য করার সুযোগ সৃষ্টি করা অধিক প্রয়োজনীয়। যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিমন্ত্রী সনি পারডিউ সহায়তার পক্ষে যুক্তি দেখান, বাণিজ্য বিরোধে অসামঞ্জস্যপূর্ণভাবে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাই নতুন এ সহায়তা কর্মসূচি যুক্তিযুক্ত।

তিনি আরো বলেন, আমেরিকার কৃষকদের প্রতি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের গভীর মায়া-মমতা রয়েছে। এ কর্মসূচির মাধ্যমে এটা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

নতুন সহায়তা কর্মসূচিতে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি মন্ত্রণালয় বলছে, কৃষকদের ভৌগোলিক অবস্থান অনুযায়ী সহায়তা দেয়া হবে, যদিও গত বছর শস্য অনুযায়ী সহায়তা দেয়ার কথা ছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি মন্ত্রণালয়ের (ইউএসডিএ) মুখ্য অর্থনীতিবিদ রব জনসন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, কয়েকটি ফ্যাক্টরের কারণে আমরা গত বছরের কর্মসূচির সংশোধন করছি।

যুক্তরাষ্ট্রের মিডওয়েস্টের কৃষকদের চেয়ে তুলনামূলক বেশি ক্ষতিপূরণ পাবেন দক্ষিণের কৃষকরা।

মিসিসিপি বিধৌত অঞ্চলের তুলাচাষীরা এবারের কর্মসূচিতে সবচেয়ে বেশি সুবিধা পাচ্ছেন। অনলাইনে শেয়ার করা সহায়তার হার বিশ্লেষণ করে এমনটাই মনে করছে রয়টার্স।

প্রদেশওয়ারি একরপ্রতি ক্ষতিপূরণ হিসেবে আলাবামায় ৯৫ ডলার, মিসিসিপিতে ৮৭ ডলার, লুইজিয়ানায় ৭০ ডলার দেয়া হচ্ছে। মিডওয়েস্টে এ হার কমে একরপ্রতি ৬৯ ডলার, যা দেশটির শীর্ষ সয়াবিন উৎপাদক ইলিনয়ের সমান। শীর্ষ ভুট্টা (কর্ন) ও শূকরচাষী আইওয়ার কৃষকরা পাচ্ছেন একরপ্রতি ৬৬ ডলার।

কর্মসূচির আওতায় ২৯টি শস্যসহায়তা পাবে। যার মধ্যে রয়েছে সয়াবিন, ভুট্টা, গম, জোয়ার ও তুলা। গরু ও শূকরচাষীরাও এর আওতায় থাকবেন। এছাড়া থাকবেন বাদাম, পেস্তা বাদাম, আখরোট, ক্র্যানবেরিজ ও সুইট চেরিজের মতো ১০টি বিশেষায়িত শস্য উৎপাদনকারী চাষীরা।

বিশেষ এ সহায়তা কর্মসূচিকে যদিও স্বাগত জানিয়েছে কৃষি ও শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো, তবে দ্রুত বাণিজ্য বিরোধ নিষ্পত্তিতেই বাস্তবসম্মত সমাধান নিহিত বলে মনে করছে তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *