চীনের ইস্পাত উৎপাদন বেড়েছে

স্টাফ রিপোর্টার

চীনে অপরিশোধিত ইস্পাত উৎপাদন বেড়েছে। দেশজুড়ে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ঘোষণা লকডাউন ক্রমে শিথিল হওয়ায় উৎপাদন ইতিবাচক দিকে মোড় নিয়েছে। মিলগুলোয় ইস্পাতের চাহিদাও ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। সম্প্রতি চীনের ন্যাশনাল ব্যুরো অব স্ট্যাটিসটিকস এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত মে মাসে চীনে অপরিশোধিত ইস্পাত উৎপাদন আগের মাসের তুলনায় ৪ দশমিক ১ শতাংশ বেড়েছে। এ সময় বিশ্বের শীর্ষ উৎপাদক দেশটিতে তৈরি হয়েছে ৯ কোটি ৬৬ লাখ ১০ হাজার টন ইস্পাত। এপ্রিলে উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ৯ কোটি ২৭ লাখ ৮০ হাজার টন।

এদিকে মে মাসে গড় দৈনিক উৎপাদন দাঁড়িয়েছে ৩১ লাখ ২০ হাজার টনে। এপ্রিলে গড় দৈনিক উৎপাদন ছিল ৩০ লাখ ৯০ হাজার টন। ২০২১ সালের জুনের পর এটিই সর্বোচ্চ দৈনিক উৎপাদন বলে জানিয়েছে ন্যাশনাল ব্যুরো অব স্ট্যাটিসটিকস।

তথ্য বলছে, লকডাউনে কঠোর বিধিনিষেধের মুখে পড়ে চীনের পরিবহন খাত। ফলে কাঁচামাল সরবরাহে ভয়াবহ সংকট দেখা দেয়। কিন্তু কভিড-১৯ সংক্রমণ কমায় দেশটির বিভিন্ন স্থানে লকডাউন উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। ফলে ইন্ডাস্ট্রিতে কাঁচামালের প্রবাহ বেড়েছে। এটি উৎপাদন বাড়াতে সহায়তা করছে। চাহিদা ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যাশায় যোগানের হার বাড়াচ্ছেন মিল মালিকরা।

খাতসংশ্লিষ্টরা জানান, চীনের কঠোর জিরো কভিড নীতির কারণে ইস্পাত কারখানার কার্যক্রম তলানিতে নামে। দুর্বল চাহিদা ও কাঁচামালের ঊর্ধ্বমুখী দামের কারণে কারখানাগুলোর মুনাফা কমতে শুরু করে।

স্ট্যাটিসটিকস ব্যুরো জানায়, চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে চীনে ৪৩ কোটি ৫০ লাখ ২০ হাজার টন ইস্পাত উৎপাদন হয়েছে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় উৎপাদন ৮ দশমিক ৭ শতাংশ কমেছে।

তবে মহামারীতে জর্জরিত অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করার লক্ষ্যে বেশকিছু উদ্যোগ নিয়েছে বেইজিং। এতে উৎপাদনে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা তৈরি হয়েছে। যদিও দেশটি বার্ষিক উৎপাদন কমিয়ে আনার লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে। উদ্দেশ্য জলবায়ু পরিবর্তন রোধে কার্বন নিঃসরণের হার কমানো।

চলতি বছরের প্রথম চার মাসে চীন ১ কোটি ৮১ লাখ ৫৬ হাজার টন পরিশোধিত ইস্পাত রফতানি করে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় রফতানি ২৯ দশমিক ২ শতাংশ কমেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চীনের প্রধান বন্দরগুলোয় কভিড-১৯ সংক্রান্ত বিধিনিষেধে লজিস্টিকস সংকট দেখা দিয়েছে। এজন্য রফতানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়নি। বিদেশের বাজারে চীনের ইস্পাতের চাহিদা এরই মধ্যে কমতে শুরু করেছে। লজিস্টিকস সংকট আরো বাড়লে ক্রেতারা চীন থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *